সুস্বাস্থ্যের জন্য যে ৫টি অভ্যাস বদলে ফেলা উচিৎ নারীদের

0
386
নারী,নারীদের অভ্যাস

নীরোগ দেহ ও সুস্বাস্থ্য প্রত্যেকেরই কাম্য। পুরুষের থেকে নারীরা সুন্দর ও সুস্বাস্থ্যের ব্যাপারে অনেক বেশি সচেতন থাকেন। সুস্থ থাকার জন্য অনেক কিছুই করে থাকেন সবাই। কিন্তু ঘুরে ফিরে শুধুমাত্র খাবার ও ব্যায়ামের উপরেই বেশি জোর দেয়া হয় স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য। পারিপার্শ্বিক আরও অনেক ব্যাপার রয়েছে যেগুলো স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

এসব দিকে অনেকেই নজর দিতে ভুলে যান। মহিলারা তাদের প্রতিদিনের রুটিনে এমন কিছু কাজ না জেনেই যোগ করে ফেলেন যা তার স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। অভ্যাস হিসেবে নেওয়া এই কাজগুলো দ্রুত বদলে ফেলা জরুরী। আসুন দেখে নেই কোন কাজগুলো আপনার অজান্তেই আপনার স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে যাচ্ছে প্রতিদিন।

নিয়মিত হাই হিল জুতো পরা:

যারা হাই হিল জুতোকে প্রতিদিনের রুটিনে যোগ করে ফেলেছেন তাদের অতি দ্রুত এই অভ্যাস ঝেড়ে ফেলে দেয়া উচিত। প্রতিদিন হাই হিল পরলে আপনার পায়ের হাড় ও মেরুদণ্ডের অপূরণীয় ক্ষতি হয়। এক্সপার্টরা বলেন হাই হিল পরলে পায়ের জয়েন্ট গুলোতে অতিরিক্ত চাপ পড়েফলে মেরুদণ্ডে ব্যাথা, পায়ের আঙ্গুল বেঁকে যাওয়া ও বাতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যায়।

তাই হাই হিলকে শুধুমাত্র কোন অনুষ্ঠানে পরার জন্য তুলে রাখুন। নিয়মিত পরার অভ্যাস বদলে ফেলুন। যদি নিতান্তই হিল জুতো পরতে হয় তাহলে ১.৫ ইঞ্চির চেয়ে বেশি পরবেন না এবং সাথে একজোড়া ফ্ল্যাট জুতো রাখুন যাতে আপনি পা কে মাঝে মাঝে বিশ্রাম দিতে পারেন। যেদিন হিল জুতো পরবেন সেদিন বাড়ি ফিরে কুসুম গরম পানিতে পা ভিজিয়ে রাখবেন।

ভারী হ্যান্ডব্যাগ বহন করা:

অনেক নারীই বিশাল বড় একটি হ্যান্ডব্যাগ বহন করে থাকেন যার ওজন হয় দুই থেকে পাঁচ কেজি। অবাক হলেও সত্য যে আসলেই মহিলাদের হ্যান্ডব্যাগের ওজন সম্পর্কে মহিলারা নিজেই জানেন না। এই বিশাল হ্যান্ডব্যাগের মধ্যে আসলে কি কি দরকারি এবং কি কি অদরকারি জিনিস আছে তারও হিসাব অনেকে মহিলাই রাখেন না।

আরও পড়ুনঃ   নারী ও পুরুষ প্রতিযোগী না সহযোগী?

কিন্তু এই ভারী ব্যাগটি বহন করে আপনি ঘাড়, কাঁধ ও মেরুদণ্ডে ব্যাথার মতো রোগ ডেকে নিয়ে আসছেন। এইসব রোগের আশঙ্কা দূর করতে বিশাল বড় ও ভারী ব্যাগ বহনের অভ্যাস বদলে ফেলুন। শুধুমাত্র জরুরী জিনিস ব্যাগে নিন। ছোট ব্যাগ কিনে ফেলুন, এতে অনেক অদরকারি জিনিস ব্যাগে নেয়ার অভ্যাস কিছুটা হলেও কমবে।

রাতে মেকআপ না তুলে ঘুমিয়ে পড়া:

দিন শেষে বাসায় ফিরে অনেকেই আলসেমি করে কিংবা ক্লান্তির জন্য মেকআপ না তুলেই বিছানায় চলে যান। কিন্তু এটি অনেক মারাত্মক একটি ভুল। মেকআপ সারা রাত মুখে থাকলে মুখের রোমকূপ বন্ধ থাকে এতে ব্রন ও স্কিনের সমস্যা বাড়ে।

চোখের মেকআপ না তুলে ঘুমালে চোখের ইনফেকশন পর্যন্ত হতে পারে। সুতরাং এই অভ্যাস পরিত্যাগ করুন। তুলো ও মেকআপ রিমুভার বিছানার পাশে রাখুন। যত ক্লান্তিই থাকুক না কেন মেকআপ তুলে ঘুমুতে যান।

অতীত স্মৃতি রোমন্থন:

আমাদের দেশের অনেক মেয়েরাই এই কাজটি করে থাকে। গবেষণা অনুযায়ী দেখা যায় মহিলারা পুরুষদের থেকে মানসিক চাপজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। মানুষের অতীত থাকতেই পারে।

কিন্তু তার জন্য বর্তমানকে নষ্ট করার কোন কারণ নেই। আপনি অতীত স্মৃতি বারবার বর্তমানে টেনে আনলে মানসিক চাপ ও কষ্ট বাড়ে। এর প্রভাব পড়ে শরীরে ও মস্তিস্কে। অতীত নিয়ে পড়ে থাকবেন না। নিজেকে কাজে ব্যস্ত রাখুন। যখনই অতীত মনে আসবে মনোযোগ অন্য দিকে সরিয়ে ফেলুন।

পর্যাপ্ত ঘুম না ঘুমানো:

অনেক বেশি রেগে যাচ্ছেন? কিংবা অতি দ্রুত মেজাজ খিটখিটে হচ্ছে? দোষ ফেলছেন কাজ কিংবা মানসিক চাপের ওপর। কিন্তু আসল কারণ হচ্ছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম না হওয়া। নিয়মিত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম মানুষের শরীরের জৈবিক চাহিদা। এর কম ঘুম অনেক বেশি প্রভাব ফেলে শরীরে।

আমাদের দেশের অনেক নারীরাই পর্যাপ্ত পরিমাণে না ঘুমানোর শিকার। চাকুরীজীবী থেকে শুরু করে গৃহিণী সবারই কম ঘুমানোর অভ্যাস তৈরি হয়ে গিয়েছে কাজের চাপে। কিন্তু এই অভ্যাস দ্রুত না বদলাতে পারলে হৃদরোগে আক্রান্তের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। দৈনিক ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। রুটিন করে ঘুমাতে যান ও ঘুম থেকে উঠুন। স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমে যাবে অনেকটাই।

আরও পড়ুনঃ   পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে যেসব ভুল করেন নারীরা

আরও পড়ুনঃ নারীর জন্য ক্ষতিকর চার অভ্যাস

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

four × five =