১১৩টি দেশে যাচ্ছে বাংলাদেশের ওষুধ,-‘বাংলাদেশের ওষুধ মিলছে হাজার গুণ কম দামে’

0
408
বাংলাদেশের ওষুধ

বাংলাদেশে তৈরি ওষুধের মান এবং দাম নাড়িয়ে দিয়েছে বিশ্ব ওষুধ শিল্পকে।  বিশ্ববাজারের চেয়ে কয়েকগুণ কম দামে দেশে তৈরি ওষুধের সেবা নিচ্ছেন লাখ লাখ মানুষ। ক্ষেত্র বিশেষে বিশ্ববাজারের চেয়ে শত থেকে হাজার গুণ কম দামে একই মানের ওষুধ পাওয়া যায় বাংলাদেশের  বাজারে।

সম্প্রতি ভারতীয় দৈনিক আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে এই নিয়ে বিস্তারিত সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের ওষুধের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। কারণ মানসম্পন্ন ওষুধ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যে দামে পাওয়া যায় এর চেয়ে অনেক কম দামে পাওয়া যায় বাংলাদেশে। এতে ওষুধের বিশ্ববাজার এখন একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের।

ভারতীয় পত্রিকাটি উদাহরণ দিয়ে লিখেছে, ক্যান্সারসহ হেপাটাইটিস সি’র মত জটিল রোগের ওষুধও বাংলাদেশে পাওয়া যায় অনেক কম দামে। আন্তর্জাতিক বাজারের হেপাটাইটিস সি ভাইরাসের মাধ্যমে সৃষ্ট রোগের সম্পূর্ণ চিকিৎসায় ৮৪ ডোজের একটি ওষুধের এক ডোজেরই দাম পরে এক হাজার ডলার বা প্রায় ৭৪ হাজার টাকা। আর পুরো কোর্সের দাম ৮৪ হাজার ডলার বা প্রায় ৬৫ লক্ষ টাকা। অন্যদিকে ৮৪ ডোজের একই ওষুধ বাংলাদেশে তৈরি হলে এক ডোজের দাম পড়ছে মাত্র ১০ ডলার বা প্রায় ৮০০ টাকা। আর পুরো কোর্সে খরচ ৬৭ হাজার টাকা।

পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই যখন চড়া দামে ওষুধ কিনতে হয় সেখানে ব্যতিক্রম বাংলাদেশ। আর সুফল পাচ্ছে বিশ্বের ১১৩টি দেশ। এই দেশগুলোতে বাংলাদেশে তৈরি ওষুধ রপ্তানি হচ্ছে অনক দিন ধরে।

আনন্দবাজার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, বাংলাদেশের ওষুধের কারণে পানির দামে ওষুধ পাচ্ছে বিশ্বের ১১৩ দেশের মানুষ। পত্রিকাটি আবারও তুলনা করে লিখেছে, বিশ্ববাজারের ৪২৫ ডলারের একটি ওষুধ বাংলাদেশ বিক্রি করছে মাত্র ৩২ ডলারে। যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের আবিষ্কার করা ওষুধ বাংলাদেশে তৈরি করছে নামমাত্র মূল্যে। এ কারণে বিদেশের রোগী বাঁচাচ্ছে বাংলাদেশের ওষুধ।

এই পরিস্থিতিতে বিশ্বের অনেক দেশ চাইছে বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানি যেন তাদের দেশে গিয়ে ওষুধ তৈরি করে। আগ্রহী দেশগুলো নিশ্চয়তা দিচ্ছে, বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানি তাদের দেশে কারখানা খুলতে চাইলে কারখানার জমি, কাঁচামাল, বিনিয়োগের অভাব হবে না। যত রকম সুবিধা প্রয়োজন তার সব রকম সুবিধার নিশ্চয়তা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এক্ষেত্রে আপত্তি আছে বাংলাদেশ সরকারের। সরকার মনে করে ওষুধ শিল্পের উন্নতিতে দেশেরই লাভ। কারণ দেশের ওষুধ কোম্পানিকে বিদেশে কারখানা করতে দিয়ে দেশে কর্মসংস্থান, বিদেশি মুদ্রার আয় বাড়া ও সস্তায় ওষুধ পাওয়ার সুযোগ সরকার হাতছাড়া করতে চায় না।

আরও পড়ুনঃ   বিষণ্ণতা তাড়াতে কান্না থেরাপি!

জানাগেছে, বংলাদেশের তৈরি ২৭৮টি কোম্পানির ওষুধ বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। বছরে তৈরি হচ্ছে ১৫ হাজার ৬১৯ কোটি টাকার ওষুধ।

এতো গেল অ্যালোপ্যাথিক ওষুধের কথা। এছাড়া রয়েছে ২৬৬ ইউনানি, ২০৫টি আয়ুর্বেদিক, ৭৯টি হোমিওপ্যাথিক এবং ৩২টি হারবাল ওষুধ তৈরির প্রতিষ্ঠান। তাদের বছরে উৎপাদিত ওষুধের বাজার মূল্য ৮৫০ কোটি টাকা।

আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ওষুধ উৎপাদন খরচ আরও কমবে যদি সব কাঁচামাল দেশেই তৈরি হয়। এরই মধ্যে ওষুধের সব কাঁচামাল উৎপাদনের জন্য মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় তৈরি হচ্ছে পার্ক। যার কাজ আগামী দুই বছরের মধ্যেই শুরু হওয়ার কথা।

বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পের আরও প্রসারের প্রতিবন্ধকতার কথাও তুলে ধরেছে আনন্দবাজার। পত্রিকাটি জানায়, দামের সঙ্গে গুণগত মান বজায় রাখার পরও বাংলাদেশের ওষুধের আনুষ্ঠানিক আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মেলেনি এখনও।

এ বিষয়ে আনন্দবাজারকে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট জানিয়েছেন, আমেরিকায় ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা এফডিএ-র ছাড়পত্র পাওয়া দুরূহ এবং সময়সাপেক্ষ। যদিও বার্নিকাট স্বীকার করেছেন, বাংলাদেশের ওষুধ তাদের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। গুণগত মান ভালো না হলে সেটা হত না।

-এসআই/এমডি

বিঃ দ্রঃ গুরুত্বপূর্ণ হেলথ নিউজ ,টিপস ,তথ্য এবং মজার মজার রেসিপি নিয়মিত আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে লাইক দিন আমাদের ফ্যান পেজ বিডি হেলথ নিউজ এ ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

1 × 2 =