হঠাৎ হার্ট-অ্যাটাক হলে কী করবেন?

2
1382
heart-attack
হঠাৎ হার্ট-অ্যাটাক

একা থাকাবস্থায় হার্ট অ্যাটাক হলে দ্রুত এই ৪টি কাজ করুন

রাস্তায়, অফিসে অথবা বাড়িতেই হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক! হাসপাতালে নেয়ার আগেই, একটু একটু করে নির্জীব হয়ে পড়ছেন আপনার সামনের মানুষটি। কী করবেন ভেবে পাচ্ছেন না? ভয় পাবেন না। সামান্য কয়েকটি বিষয় জানা থাকলে আপনিই বাঁচাতে পারেন জীবন।

হঠাৎই ঘাম দিয়ে তীব্র বুকে ব্যথা? শ্বাস কষ্ট … আর তার পরেই কেমন অচৈতন্য হয়ে পড়ছেন আপনার সামনের মানুষটি।  এ সবই কিন্তু হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ। কী করে বুঝবেন হার্ট অ্যাটাক? রোগীর গলায় শ্বাসনালীর পাশেই রয়েছে ক্যারোটিড পাল্স বা সেন্ট্রাল পালস। প্রথমেই কম পক্ষে পাঁচ সেকেন্ড ওই পালস দেখুন। হার্ট অ্যাটাক হলে পালস পাওয়া যাবে না।

চিকিত্সকরা বলছেন, লাইফ টেভিং টেকনিক জানা থাকলে রোগীকে এই অবস্থা থেকে বাঁচানো সম্ভব। কী করবেন? আক্রান্তকে ঝিমিয়ে পড়তে দেয়া চলবে না। তাঁর সঙ্গে কথা বলে যেতে হবে। ৩০-৪৫ ডিগ্রি মাথা উঁচু করে শুয়ে রাখতে হবে রোগীকে। যাতে তাঁর শ্বাস নিতে সুবিধা হয়। এর পর আপনিই শুরু করে দিতে পারেন রোগীর প্রাথমিক চিকিত্সা। কীভাবে? তাও বলে দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রথমে বুকে পাম্প, মাউথ টু মাউথ রেসপিরেশন, রোগীকে শুইয়ে দিন। দুটো হাতের তালু ইন্টারলক করে ঠিক বুকের মাঝখানে পাম্প করুন। পুরো শরীরের চাপ দিয়ে পাম্প করবেন।
১৬-১৮ সেকেন্ডের মধ্যে ৩০ বার পাম্প করুন। এর পরে মাউথ টু মাউথ রেসপিরেশন করুন। এই সময় রোগীর নাক বন্ধ রাখতে হবে। থুতনি উঁচু করে ধরে রাখতে হবে। এই ভাবে দুবার মাউথ টু মাউথ রেসপিরেশন করতে হবে। এর পর ফের বুকে পাম্প করতে হবে। পুরো সাইকেলটা কম পক্ষে ৫ বার করতে হবে।

সূত্র: জিনিউজ

বিষয়টি আরও সহজভাবে বুঝতে নিচের লেখাটি পড়ুন

 

হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক কী করবেন !

হার্ট অ্যাটাক। কথাটা শুনলেই মনে জন্ম নেয় আতঙ্ক। হার্ট অ্যাটাক সম্পর্কে ভয় কাটিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে অনেক আগেই। সোশ্যাল নেটওয়ার্কে মাঝে মাঝে শোনা যায় বিপদ কাটাতে সেলফ ঈচজ(জোর করে কেশে নিজেকে জাগিয়ে রাখা)-এর কথা। কিন্তু ব্যাপারটা সত্যি কতটা কার্যকর? বিশ্লেষণ করলেন খ্যাতনামা হার্ট সার্জেন ডা কুনাল সরকার এবং ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট ডা দিলীপ কুমার।

আরও পড়ুনঃ   হার্ট অ্যাটাক: জীবন রক্ষাকারী ইনজেকশন এখন বিনা মূল্যে দিচ্ছে জাতীয় হৃদ্‌রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল

হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গ

নিশ্বাসের কষ্ট
বুকে পাথর চাপিয়ে দেওয়ার মতো ভারী ভাব
দরদর করে ঘাম
বুকের কষ্ট ক্রমশ হাত, কাঁধ ও চোয়ালে ছড়িয়ে পড়া
অনেকে অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারেন
কী করবেন-
এই ধরনের লক্ষণ শুরু হলে রোগীকে অ্যাসপিরিন বা সরবিট্রেট জাতীয় ওষুধ দিন।
সময় নষ্ট না করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কাছের হাসপাতাল বা নার্সিং হোমে নিয়ে যান।
যদি মানুষটি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন, তবে প্রথমে তার পালস দেখে নিয়ে কার্ডিও পালমোনারি রিসাসিটেশন বা ঈচজ করতে হবে। ঈচজ এর প্রশিক্ষণ নেওয়া থাকলে ভাল, না হলে বিশেষ পদ্ধতিতে বুকের উপর থেকে পাম্প করে মুখে ফু দিয়ে কৃত্রিম ভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস চালু করতে হবে।

রোগী যখন বাড়িতে একা

শুয়ে থাকুন- অনেকে বলেন বুকে বাথ্যা ও নিঃশ্বাসের কষ্ট শুরু হলে জোর করে কেশে কফ বার করার চেষ্টা করলে অনেক বড় বিপদ থেকে বাঁচা যায়। কিন্তু মেডিক্যাল সায়েন্স এই ব্যাপারে এখনও বিশ বাঁও জলে। দেখা গেছে কয়েকটি ক্ষেত্রে কিছুটা উপকার পেলেও ডায়াফ্রেম এ চাপ পড়ে হিতে বিপরীত ফল হবার সম্ভাবনা থাকে। বুকে ব্যথা হলে শুয়ে পড়লে কিছুটা কষ্ট কম হয়। সঙ্গে অ্যাসপিরিন বা সরবিট্রেট জাতীয় ওষুধ ব্যবহার জটিলতার ঝুঁকি কিছুটা কম করতে পারে।
সতর্ক হন- অধিকাংশ মানুষই ভাবতে পারেন না যে তাঁর হার্টের কোনও অসুখ হয়েছে। অ্যাসিডিটির সমস্যা মনে করে অ্যান্টাসিড খেয়ে অপেক্ষা করেন। এতে কিন্তু জটিলতা বাড়ে। জেনে রাখুন আমাদের হৃৎপিণ্ড প্রত্যেক দিন এক লক্ষ বার পাম্প করে। এক জন ৬০ বছর বয়সী মানুষের হৃৎপিণ্ড তিনশ কোটি বার পাম্প করেছে। চোখ, কান, ফুসফুস বা কিডনির মতো আমাদের দু’টো হার্ট নেই।
সেলফ মেডিকেশন- হার্টের সমস্যায় সেলফ মেডিকেশন মারাত্মক হতে পারে। হার্টের অসুবিধে হলে অবশ্যই বাড়ির কাছের চিকিৎসক বা হাসপাতালে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করা দরকার। এই সময় নামী ডাক্তারবাবুর জন্যে অপেক্ষা করতে গিয়ে সময় নষ্ট না করাই বাঞ্ছনীয়।

আরও পড়ুনঃ   বছরে অন্তত ১১০টি ডিম খান

কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য

আরামপ্রিয়তা আর পরিশ্রম বিমুখতার ফলে হার্টের অসুখ আমাদের দেশে প্রায় মহামারীর আকার নিতে চলেছে।
তিরিশ ঊত্তীর্ন তরুণদের মধ্যেও আচমকা হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা দেখা যাচ্ছে।
অনেক ক্ষেত্রে হাসপাতালে পৌঁছনোর আগেই রোগীর হৃৎপিণ্ড চিরতরে থেমে যায়। অথচ একটু সতর্ক হলেই আচমকা মৃত্যু রুখে দেওয়া যায়।
প্রত্যেক জেলা ও গ্রামের হাসপাতালে বা ছোট নার্সিং হোমে থ্রম্বোলিটিক থেরাপি করে তাৎক্ষণিক ভাবে পরিস্থিতি সামলে বড় হাসপাতালে রোগীকে নিয়ে গেলে প্রাণ বাঁচানো সহজ হয়।
যাদের ইস্কিমিয়া আছে বা একবার হার্ট অ্যাটাক এর পর বাইপাস সার্জারি হয়েছে অনেক সময় তাদের বারে বারে হার্ট ফেলিওর হয়। এ ক্ষত্রে সি আর টি ডিভাইসের সাহায্যে রোগীদের প্রাণ বাঁচানো সম্ভব।
হার্টের অসুখই হোক বা ডায়বিটিস, এ সবই বদঅভ্যাসের কারণে হয়।

ধূমপান ত্যাগ করুন

ওজন ঠিক রাখতে নিয়মিত কিছু ব্যায়াম অথবা মর্নিং বা ইভিনিং ওয়াক করুন
ফাস্ট ফুডের বদলে টাটকা, বাড়িতে রান্না খাবার খান, ফল খান
অকারণে টেনশন করবেন না
চল্লিশ বছর পেরনোর পর বছরে অন্তত একবার রুটিন কিছু টেস্ট করিয়ে রাখুন।
মন ভাল রাখুন, ভাল থাকুন।

বিঃ দ্রঃ গুরুত্বপূর্ণ হেলথ নিউজ ,টিপস ,তথ্য এবং মজার মজার রেসিপি নিয়মিত আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে লাইক দিন আমাদের ফ্যান পেজ বিডি হেলথ নিউজ এ ।

2 COMMENTS

  1. সুন্দর একটি সংবাদ, ধন্যবাদ এডমিন, সংবাদটি পড়ে উপকৃত হলাম।

Leave a Reply to BD Health Cancel reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

two × 5 =