স্তনবৃন্ত (Nipple) সম্পর্কে যে ১০টি কথা আপনি জানেন না

0
1862
স্তনবৃন্ত ,Nipple

সকলের শরীরেই উপস্থিতি রয়েছে, কিন্তু তার সম্পর্কে অনেকেই বিশদে জানেন না। স্তনবৃন্ত শুধুমাত্র যৌন আকর্ষণই তৈরি করে না, তা নবজাতকের শরীরে পুষ্টি জোগাতেও অদ্বিতীয়। তবে এর বাইরেও রয়েছে তার নানান কাজ, যা অবাক করার মতো।

১) একই শরীরে তিনটি স্তনবৃন্ত: শুনতে অদ্ভুত মনে হলেও অনেকেরই দু’টির বেশি স্তনবৃন্ত থাকে। শরীরে তিনটি স্তনবৃন্ত থাকা সেলেবদের মধ্যে রয়েছেন ব্রিটিশ পপ গায়িকা লিলি অ্যালেন। আবার অভিনেতা হ্যারি স্টালসের দাবি, তাঁর দেহে রয়েছে চারটি নিপ্‌ল।

২) পুরুষ দেহে স্তনবৃন্তের কাজ: অনেকের মনেই প্রশ্ন ওঠে, পুরুষের শরীরে স্তনবৃন্ত থাকার কী উদ্দেশ্য? আসলে সমস্ত ভ্রূণই শুরুতে নারী হিসেবে জন্ম নেয়। স্তনবৃন্ত গঠনের পরে ওয়াই ক্রোমোজোমযুক্ত ভ্রূণ পুরুষ এবং এক্স ক্রোমোজোমযুক্ত ভ্রূণ নারী হিসেবে ভিন্ন রূপ পায়।

৩) নিপ্‌ল পিয়ার্সিং-এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া: চিকিত্‍সার দৃষ্টিকোণ থেকে স্তনবৃন্তে ছিদ্র তৈরি করা ততক্ষণই বিপজ্জনক নয় যদি তা স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে করা হয়। ছিদ্র তৈরি করতে স্টেরিলাইজ করা যন্ত্র ব্যবহার করলে সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে না। তবে মনে রাখা উচিত, স্তনবৃন্তের ক্ষত শুকোতে অন্তত কয়েক মাস সময় লাগে। এছাড়া দেখতে হবে, ছিদ্র তৈরির কারণে কোনও নারীর যেন স্তন্যপান করাতে অসুবিধা তৈরি না হয়।

৪) স্তনবৃন্ত হঠাত্‍ দৃঢ় হওয়ার কারণ: স্তনবৃন্তে থাকে অতিরিক্ত সংবেদনশীল শিরা। স্পর্শ অথবা বেশি ঠান্ডা পড়লে বৃন্ত দৃঢ় হয়। এই প্রক্রিয়া স্বাভাবিক এবং স্বয়ংক্রিয়। বুকের মাংসপেশি সঙ্কুচিত হলেই স্তনবৃন্ত দৃঢ় হয়ে ওঠে। এছাড়া অতিরিক্ত আতঙ্কিত হলে বা যৌন উত্তেজনার কারণেও স্তনবৃন্ত দৃঢ় হয়ে ওঠে।

৫) বৃন্তের আদর্শ রং: শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মতো স্তনবৃন্তেরও আকার, আকৃতি ও রঙের বৈচিত্র থাকে। গর্ভাবস্থায় স্তনবৃন্তেররং পাল্টে গাঢ় হয়। তবে কোনও শারীরিক পরিবর্তন ছাড়া আচমকা রং বা আকৃতি বদলাতে শুরু করলে চিন্তার কারণ। অনেক সময় তা স্তন-ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। এই সময় বৃন্ত থেকে কোনও রকমের ক্ষরণ হলে, বৃন্তের পাশে খুসগকুড়ি বা র্যাশ দেখা দিলে বা বৃন্তের অবস্থান উল্টে গেলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিত্‍সকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

আরও পড়ুনঃ   সরঞ্জাম ছাড়াই শরীর গঠন

৬) ছোট না বড়: সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ছোট আকৃতির স্তনবৃন্ত বড় আকারের বৃন্তের তুলনায় অনেক বেশি সংবেদনশীল। এর কারণ, বৃন্ত ছোট হলে তার মধ্যে থাকা শিরাগুলির অবস্থান কাছাকাছি হয়। এই কারণে স্পর্শের জেরে তাতে অনেক দ্রুত ও তীব্র অনুভূতি হয়। কৃত্রিম উপায়ে স্তন বড় করার জন্য শল্যচিকিত্‍সার ফলে স্তনবৃন্তের আশেপাশে অনুভূতি কমে যায়। আসলে সার্জারির সময় শিরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণেই এমন ঘটে।

৭) অন্তর্মুখী না বহির্মুখী: নাভিমূলের মতোই জন্ম থেকে উল্টোনো স্তনবৃন্ত থাকা একেবারে স্বাভাবিক। আবার অনেকে অস্ত্রোপচারের সাহায্যে বৃন্তের আকৃতি বদলে ফেলেন। তবে এতে শুধু দৈহিক সৌন্দর্যই বাড়ে। কিন্তু স্বাভাবিক সঅবস্থান বদলে আচমকা বৃন্ত উল্টে গেলে স্তনের ক্যানসারের পূর্বাভাস হতে পারে বলে সাবধান হওয়া উচিত।

৮) বৃন্তের গোড়ায় চুল: শরীরের অন্যান্য অঞ্চলে যেমন চুল বা রোম গজায়, বৃন্তের গোড়ায় তার উপস্থিতিও স্বাভাবিক। এই নিয়ে বিরক্ত হলেও মেনে নিতে হয়। অনেক সময় হঠাত্‍ এই জায়গার রোম খসে পড়লে চিকিত্‍সকের পরামর্শ নেওয়া দরকার। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই শারীরিক লক্ষণের সঙ্গে ওভারিতে ফলিকিউলার সিস্টের প্রভাবের সংযোগ থাকে। সৌন্দর্যের খাতিরে স্তনবৃন্ত রোমমুক্ত করতে চাইলে টুইজারই ভরসা। তবে তাতে তীব্র জ্বালা সহ্য করতে হয়।

৯) সংক্রামিত স্তনবৃন্ত: স্তন্যপান করানোর সময় অনেকের ‘মিল্ক ডাক্ট’-এ ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ ঘটতে পারে। রোগের নাম িনফেক্টিভ ম্যাসটাইটিস। স্তনবৃন্ত থেকে ক্ষরণ হলে, স্তন্যপান করানোর সময় বৃন্তে জ্বালা-যন্ত্রণা হলে চিকিত্‍সককে দেখানো প্রয়োজন। আবার স্তনবৃন্তে কৃত্রিম ছিদ্র করানোর পরেও এমন লক্ষণ দেখা যেতে পারে।

১০) বৃন্তে টোল পড়া: ভয় পাওয়ার কারণ নেই, এই প্রক্রিয়া স্বাভাবিক। বৃন্তের মধ্যে উপস্থিত অ্যারিওলার গ্ল্যান্ডসের উপস্থিতির কারণেই এই অবস্থা হয়। এই গ্রন্থি সারা শরীরেই ত্বকের মধ্যে উপস্থিত থাকে। বিশেষ করে মাথা ও মুখের উপর এদের উপস্থিতি লক্ষণীয়। ত্বকে প্রয়োজনীয় তৈলাক্ত ভাব বজায় রাখার কাজ করে এই গ্রন্থি। স্তনবৃন্তকে নরম রাখার কাজও তারা করে। ত্বকের উপরিভাগে অনেক ক্ষেত্রে এই সমস্ত গ্রন্থির কারণেই ফুলে ওঠে। এতে শরীরের কোনও ক্ষতিসাধন হয় না।

আরও পড়ুনঃ   অনিয়মিত ঋতুস্রাবের কারণ ও করণীয়

এই সময়

বিঃ দ্রঃ গুরুত্বপূর্ণ হেলথ নিউজ ,টিপস ,তথ্য এবং মজার মজার রেসিপি নিয়মিত আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে লাইক দিন আমাদের ফ্যান পেজ বিডি হেলথ নিউজ এ ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

16 − 12 =