রক্তসঞ্চালন দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে ঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। দুর্বল রক্তসঞ্চালন হৃৎপিণ্ড, মস্তিষ্ক, যকৃৎ, কিডনি ইত্যাদি অঙ্গকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। দুর্বল রক্তসঞ্চালন সাধারণত সহজে ধরা পড়ে না। তবে কিছু লক্ষণ রয়েছে যেগুলো দেখলে কিছুটা বোঝা যায় শরীরে রক্ত চলাচল ঠিকভাবে হচ্ছে না।
বিভিন্ন বয়সেই এই সমস্যা হতে পারে। জীবনযাপনের কিছু ধরন যেমন ধূমপান, ব্যায়াম না করা, দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা, ভুল খাদ্যাভ্যাস এবং কিছু অসুখ দুর্বল রক্তসঞ্চালনের কারণ হতে পারে।
লাইফস্টাইল বিষয়ক ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাই জানিয়েছে দুর্বল রক্তসঞ্চালন বা ঠিকঠাক মতো দেহে রক্ত চলাচল না হওয়ার সাত লক্ষণের কথা।
১. হাত-পা ঠান্ডা থাকা
সঠিক রক্তসঞ্চালন শরীরের তাপমাত্রাকে স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। দুর্বল রক্তসঞ্চালন হলে বা রক্তসঞ্চালন ঠিকঠাকভাবে না হলে শরীরের তাপমাত্রা কমে যেতে পারে।
২. অবসাদ
শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি এবং পেশিতে পুষ্টির ঘাটতি হলে রক্ত সঞ্চালন দুর্বল হয়। এটি শরীরকে দুর্বল করে দেয়। এতে শ্বাস ছোট হয়ে যায় এবং অবসাদ তৈরি হয়।
৩. হজমের সমস্যা
রক্তসঞ্চালন দুর্বল হলে অঙ্গপ্রত্যঙ্গে সঠিকভাবে রক্ত পৌঁছায় না। এমনকি গ্যাস্ট্রো ইনটেস্টাইনাল নালিতেও কম রক্তসঞ্চালিত হয়। এটি হজমে সমস্যা করতে পারে এবং এতে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। তাই হজমের সমস্যা হলে একবার চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে দেখুন এটি রক্ত সঞ্চালন ঠিকমতো না হওয়ার কারণে হচ্ছে কি না।
৪. মস্তিষ্কের দুর্বল কার্যক্রম
মস্তিষ্কের কাজ ঠিকঠাকমতো চলার জন্য রক্তসঞ্চালন ঠিকঠাক মতো হওয়া খুব প্রয়োজন। মস্তিষ্কে রক্তসঞ্চালন কম হলে মাথা ঘুরানো বা মাথা ঝিম ধরে থাকার মতো সমস্যা হতে পারে। এ ছাড়া মনোযোগের অভাব, স্মৃতিশক্তিও লোপ পেতে পারে।
৫. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যাওয়া
শরীরে রক্ত চলাচল ঠিকঠাকমতো না হলে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যায়। এতে প্রায়ই অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ ছাড়া আঘাত সারতেও দেরি হয়। তাই এমন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে দেখুন শরীরে রক্ত চলাচল ঠিক আছে কি না।
৬. ত্বকের রঙে পরিবর্তন
রক্তে সঞ্চালন ঠিকঠাক মতো না হলে ত্বকের রং পরিবর্তন হতে পারে। ত্বক বেগুনি বা নীলাভ রঙের হয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া নখ এবং পায়ের আঙুল কিছু নীলাভ হতে পারে। তাই এ রকম হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৭. নখ ও চুল দুর্বল হয়ে যাওয়া
দুর্বল রক্তসঞ্চালন হলে অঙ্গে পুষ্টি হয়। এতে নখ, চুলে প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং মিনারেল পৌঁছায় না। ফলে চুল পড়ার সমস্যা হয়, চুল শুষ্ক হয়ে যেতে পারে এবং ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া নখও ভঙ্গুর হয়ে যেতে পারে। তাই এ রকম হলে সমস্যার আসল কারণ খুঁজে বের করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন।