শীতে ত্বক সজীব রাখতে যা করবেন…

0
305
সজীব ত্বক

বাতাসে আর্দ্রতা কমার কারণে ত্বক ফাটা, ত্বকে ছোপ ছোপ কালো দাগ, ফাঙ্গাস, ত্বকের উজ্জ্বলতা কমে যাওয়াসহ নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। এ ধরনের সমস্যায় কী করবেন, দেখুন প্রতিবেদনে।

ঋতু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে আমাদের ত্বকে। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতা কমে যায়। ফলে ত্বক হয়ে পড়ে শুস্ক ও রুক্ষ। ত্বক ফাটা, ত্বকে ছোপ ছোপ কালো দাগ, ফাঙ্গাস, ত্বকের উজ্জ্বলতা কমে যাওয়াসহ নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। একটু যত্ন আর সচেতনতাই পারে শীতে আপনার হাসিকে অমলিন রাখতে। শীতে সুস্থ-সুন্দর ত্বকের যত্নে পরামর্শ দিয়েছেন বিউটি কনসালট্যান্ট ফারহানা রুমি।

তিনি বলেন, শীতে সকালের রোদে আলট্রাভায়োলেট বেশি থাকে। তাই বাইরে বের হওয়ার আগে অবশ্যই সানস্ট্ক্রিন লোশন ভালো করে লাগাতে হবে। লোশনের এসপিএফ যেন অন্তত ১৫ থাকে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। নির্দিষ্ট সময় পরে তা পরিস্কার করে আবার লাগাতে হবে। শীতের সময় গলা ও ঘাড় বেশি কালো হয়ে যায়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ব্যবহার করতে পারেন অ্যালোভেরা জেল। সপ্তাহে অন্তত চার থেকে পাঁচ দিন অ্যালোভেরা গলা আর ঘাড়ের উন্মুক্ত স্থানে ঘষে লাগালে ত্বক উজ্জ্বল হবে। অ্যালোভেরা লাগিয়ে দশ থেকে পনেরো মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে। এরপর ত্বকে ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে। কমলা, টমেটোর রসও ত্বকের পরিচর্যায় খুব উপকারী। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর সময় মুখ, হাত ও পায়ে ময়েশ্চারাইজার যুক্ত ক্রিম লাগাতে হবে। আধা চামচ শসার রসের সঙ্গে আধা চামচ দুধ ও আধা চামচ মধু মিশিয়ে ফ্রিজে রাখুন। ঠাণ্ডা হলে ত্বকে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। তবে তৈলাক্ত ত্বকের জন্য শুধু শসার রস বা শসা কুচি ব্যবহার করুন। যাদের ত্বক খুব তৈলাক্ত বা ব্রণের সমস্যা আছে, তারা আনারসের সঙ্গে সমপরিমাণ গোলাপজল মিলিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। চাইলে এর সঙ্গে বেসন দিতে পারেন, তবে এটি ২০ মিনিটের বেশি ব্যবহার করবেন না। মুখ পরিস্কার করার জন্য কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে হবে। সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন ব্যবহারে ত্বকে রোদের পোড়া ভাব চলে যাবে। সপ্তাহে একদিন স্ট্ক্রাবিং করতে হবে। শসার বা মাল্টার রসের সঙ্গে চালের গুঁড়া মিশিয়ে নিন। ত্বক স্বাভাবিক বা শুস্ক হলে দুধ ও মধু মেশাতে পারেন। শুস্ক ত্বক হলে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস দিতে হবে। স্বাভাবিক ত্বকের জন্য কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল যোগ করে স্ট্ক্রাব তৈরি করে নিতে পারেন। তৈরি করা স্ট্ক্রাব শুধু মুখে নয়, আপনার হাত, গলা ও ঘাড়ে লাগিয়ে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে। যাদের ত্বক সেনসেটিভ, তারা টক দই দিয়ে স্ট্ক্রাবিংয়ের কাজটা সেরে নিতে পারেন।

আরও পড়ুনঃ   ত্বকে ঘি মাখলে কী হয়?

ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে দুধের সরও খুব উপকারী। প্রতিদিন কাজের ফাঁকে ১০ মিনিট সময় নিয়ে এক চামচ দুধের ময়দা বা বেসন মিলিয়ে মুখ, গলা আর হাতে লাগাতে পারেন। ১০ মিনিট পর উষষ্ণ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। শীতে ত্বকের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ফাঙ্গাসের সংক্রমণ। শীতের সময়ে প্রকৃতির শুস্কতার প্রভাব পড়ে ত্বকে। তা ছাড়া চারদিকের ধুলাবালি ত্বকে জমার ফলে নানা ধরনের সংক্রমণ হয়। তাই প্রতিদিন কয়েকবার করে ত্বক পরিস্কার করতে হবে। আলাদা মেকআপ কিটস, টাওয়েল, চিরুনি ব্যবহার করতে হবে। মনে রাখতে হবে, প্রতিবার ত্বক পরিস্কারের পর ত্বকে ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে। যাদের হাতে কালো দাগ পড়েছে, তারা একটি প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। ১ টেবিল চামচ দারুচিনি গুঁড়া, ১ টেবিল চামচ জায়ফলের গুঁড়া ও ২টি ডিমের কুসুম ভালো করে মিশিয়ে নিন। এতে সামান্য লেবুর রস মিশিয়ে ২০ মিনিট পুরো হাতে লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি হাতের কালো দাগ, পোড়া ভাব ও আঙুলের ভাঁজের কালো দাগ তুলতে সহায়তা করবে।

যারা বাড়িতে থাকেন, তারা প্রতিদিনের কাজ শেষে এক টুকরো লেবু ঘষে লাগিয়ে হাত পরিস্কার করে নেবেন। দিনের কোনো এক সময়ে হাত দুটো লেবু লাগিয়ে কুসুম গরম পানিতে ১০ মিনিট ডুবিয়ে রেখে ব্রাশ দিয়ে পরিস্কার করে নিতে হবে। এর পর পুরো হাতে লোশন লাগাতে হবে। ১৫ দিন পর পর বাড়িতে বা পার্লারে গিয়ে মেনিকিউর করে নিতে পারেন।

শীতে ত্বক সজীব রাখতে আপনার খাদ্যাভ্যাসে আনতে হবে পরিবর্তন। ভাজা খাবার পরিহার করে মৌসুমি ফল, সবজি, সালাদ ও স্যুপ রাখতে হবে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায়। এ ছাড়া পর্যাপ্ত ঘুম আর বিশ্রামের ফলে ত্বক সজীব থাকবে। নিয়মিত যত্নে শীতেও আপনার ত্বক থাকবে প্রাণবন্ত।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

one + ten =