অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শিশুর ত্বকের সমস্যা, র্যাশ ইত্যাদি স্বাভাবিক নিয়মে হয় এবং সেরেও যায়। যেমন অ্যারিথিমা টক্সিকাম সদ্যোজাত শিশুর আপনা থেকে হয়, আপনাআপনি সেরে যায়। তবু শিশুর মুখে লাল লাল দাগ দেখলে এবং তা ক্রমে গায়ে-পিঠে ছড়িয়ে পড়তে দেখলে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে ভাবতে শুরু করেন এই বুঝি হাম হলো!
স্ট্যাপস বা স্ট্রেপটোকক্কাস : ময়লা, ধুলোবালি ইত্যাদির কারণে শিশুর এ স্কিন ইনফেকশন দেখা দিয়ে থাকে। এতে শিশুর ত্বকে সাদা সাদা দাগ দেখা দেয়, যাতে প্রথমেই অ্যান্টিবায়োটিক অয়েন্টমেন্ট দেওয়া হয়। এতে কাজ না হলে ওরাল অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হয়।
প্রিকলি হিট বা ঘামাচি : গরমে বহু শিশুর ঘর্মনালির মুখ বন্ধ হয়ে ত্বকে র্যাশ দেখা দেয়। সে ক্ষেত্রে জায়গাটা একটু ঠা-া, পরিষ্কার রাখলেই এ সমস্যা মিটে যায়।
ন্যাপি র্যাশ : মাথার খুশকি থেকেই সাধারণত ত্বকে র্যাশ দেখা দেয়। তাই ভালো করে শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত।
রুবেলা ইনফেকশন : গর্ভবতীর যদি রুবেলা হয়ে থাকে, তবে সদ্যোজাত শিশুরও ইনফেকশন দেখা দিতে পারে। এতে স্কিনে শুধু ছোট ছোট র্যাশ দেখা দেওয়াই নয়, একই সঙ্গে শিশুর বমি, শরীর খারাপ, শ্বাসকষ্ট, হার্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
স্ক্যাবিস : ত্বক চুলকানির এ রোগ খুবই ছোঁয়াচে। এ ক্ষেত্রে শিশুর মুখ বাদ দিয়ে তার শরীরের সর্বাঙ্গে টানা একদিন অয়েন্টমেন্ট লাগিয়ে রাখলেই হবে না, এর পাশাপাশি বাড়ির সব সদস্যকেও সেই অয়েন্টমেন্ট লাগাতে হবে, এমনকি শিশুর পরিচর্যাকারীকেও।
অ্যালার্জিক আর্টিকেরিয়া : চকোলেট, টমেটো সস, চিংড়ি, বেগুনসহ বেশ কিছু খাবার থেকে ত্বকে লাল, চাকা চাকা দাগ দেখা দেয়। এ ক্ষেত্রে প্রথমেই সেই খাবার বন্ধ করে ওষুধ দিয়ে সমস্যার সমাধান করতে হয়।
এটোপিক ডার্মাটাইটিস : এটি ছোট মাঝবয়সী ও বড়দের হয়। এটোপিক ডার্মাটাইটিসকে স্কিন অ্যালার্জিও বলে। এটোপিক রাইনাইটিস বা নাক দিয়ে সর্দি ঝরা ও হাঁপানি বা অ্যাজমা এ শিশুদের থাকতে পারে। এটি জন্মগত অসুখ যা বাবা মায়ের কাছ থেকে শিশুরা পেয়ে থাকে। এক্ষেত্রে পাইলোম্যাকরোলিমাস ক্রিম দেয়া হয়। সাবান কম ব্যবহার করে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে বলা হয়। বেশি ইনফেকটেড বা সংক্রমণ হলে এন্টিবায়োটিক এবং ত্বকে চুলকানি বেশি থাকলে অল্প পরিমাণ স্টেরয়েড দেয়ার প্রয়োজন হয়।লেখক :ডা. দিদারুল আহসান
চর্ম ও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞকনসালট্যান্ট ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকআল-রাজী হাসপাতাল, ফার্মগেট, ঢাকা০১৭১৫৬১৬২০০, ০১৮১৯২১৮৩৭৮