আমরা জানি, ভ্যাসলিন ময়েশ্চারাইজারের ঘাটতি পূরণ করে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে। ত্বককে নরম ও মসৃণ করে। কিন্তু আপনি জানেন কী, এই প্রসাধনীটি ত্বকের যত্ন ছাড়াও আপনার দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন কাজে কতটা গুরুত্বপূর্ণ?ত্বকের যত্ন ছাড়াও ভ্যাসলিনের কিছু ভিন্ন ব্যবহার-
১) শরীরের প্রাকৃতিক স্ক্রাবের কাজ :
গোসলের সময় সি সল্টের সঙ্গে ভ্যাসলিন মিশিয়ে শরীরে মাখুন। এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি প্রাকৃতিক স্ক্রাবের কাজ করে। যা শরীরকে নরম এবং মসৃণ করতে সাহায্য করে।
২) চুলের আগা ফেটে যাওয়া প্রতিরোধ: দুই আঙ্গুলে কিছুটা ভেসলিন নিয়ে চুলের ডগায় লাগিয়ে রাখুন। তবে খেয়াল রাখতে হবে পরিমাণে যেন খুব বেশি না হয়।
৩) দাঁতে লিপস্টিক লাগা প্রতিরোধে: লিপস্টিক লাগানোর পর দাঁতে লেগে যায়? সামান্য ভ্যাসলিন আঙুলে নিয়ে দাঁতে ভালো করে ঘষে নিন। এতে আর লিপস্টিক দাঁতে লাগবে না। সুন্দরী প্রতিযোগিতাগুলোয় সবসময় এই পন্থা অবলম্বন করা হয়।
৪) নেইল পলিশের মুখ খুলতে: নেইলপলিশের বোতলের মুখ খুলতে পারছেন না? মনে করে সবসময় নেইলপলিশের বোতলের মুখে ভ্যাসলিন লাগিয়ে রাখবেন। এতে মুখ আর টাইট হবে না, সহজেই খুলতে পারবেন।
৫) চোখের পাপড়ির ঘনত্ব বাড়াতে: রাতে ঘুমানোর আগে চোখের পাতায় সামান্য কিছুটা ভ্যাসেলিন লাগিয়ে নিন। কিছুদিন পর দেখুন চমক। বা চোখের আইল্যাশে রাতে ঘুমানোর আগে ভ্যাসলিন লাগিয়ে ঘুমান। দেখবেন, ধীরে ধীরে আইল্যাশ ঘন এবং কালো হবে।
৬) নকল আইল্যাশ উঠাতে :চোখের নকল আইল্যাশ উঠানো একটা ঝামেলার কাজ। অথচ সামান্য ভ্যাসলিন আপনার এই সমস্যার সমাধান খুব সহজেই করবে। আইল্যাশের ওপর সামান্য ভ্যাসলিন লাগিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। দেখবেন, টান দিলে আইল্যাশ উঠে আসবে।
৭) আইব্রো থ্রেডিং করতে: আইব্রো থ্রেডিংয়ের আগে ভ্যাসলিন দিয়ে কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করে নিন। এতে থ্রেডিংয়ের সময় ব্যথা কম লাগবে এবং জ্বালাপোড়া হবে না।
৮)পারফিউমের গন্ধ দীর্ঘস্থায়ী করতে:সুগন্ধির ঘ্রাণ ধরে রাখে ভ্যাসলিন। সুগন্ধি ব্যবহারের আগে বগল এবং হাতে ভ্যাসলিন মেখে নিন। এতে সুগন্ধির ঘ্রাণ অনেকক্ষণ স্থায়ী হবে।অর্থাৎ গলায়, ঘাড়ে, হাতে বা যেখানে সাধারণত পারফিউম দেয়া হয় সেখানে খুব সামান্য ভ্যাসেলিন মেখে নিয়ে পারফিউম স্প্রে করলে গন্ধটা দীর্ঘক্ষণ স্থায়ী হয়।
৯) পায়ের গোড়ালী ফাটা রোধ করে: লোশন বা ক্রিমের বদলে অনেকেই ভ্যাসেলিন ব্যবহার করে থাকেন। তবে জানেন না যে গোড়ালি ফাটা দূর করতেও ভ্যাসেলিন দারুণ কাজে আসে। পা ভালো করে ঘষে পরিস্কার করে নিয়মিত ভেসলিন মেখে মোজা পড়ে রাখলে খুব সহজেই এই সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
১০)জুতার উজ্জলতা বৃদ্ধিতে: জরুরি কোন কাজে পরিপাটি হতে হবে কিন্তু হাতের কাছে পলিশ নেই। কোন চিন্তা নেই! সামান্য ভ্যাসেলিন নিয়ে জুতা ভাল করে কাপড় দিয়ে মুছে নিন। নতুনের মত ঝকঝকে হয়ে যাবে।
১১) চুলের রঙের দাগ তুলতে: অনেক সময় সাদা চুল কালো রঙ করতে গিয়ে কপালে, কানে এসব স্থানে লেগে যায়। সেই দাগ সহজে তোলাটাও কষ্টকর হয়ে যায়। তখন সামান্য কিছুটা ভেসলিন নিয়ে লেগে থাকা দাগের উপর লাগিয়ে কিছুক্ষন রেখে ধুয়ে ফেলুন। দাগ উঠে যাবে।
১২) ত্বকের মরা কোষ দূর করতে: ভ্যাসেলিনের সাথে সামান্য সামুদ্রিক লবন মিশিয়ে পুরো শরীর স্ক্রাব করে গোসল করলে দেহের ত্বক হয়ে উঠবে সতেজ ও মসৃন।
১৩)শেভ করার পর ত্বকের আর্দ্রতা আনতে: শেভ করার পর সামান্য ভ্যাসলিন দিয়ে মুখে ম্যাসাজ করে নিন। এতে ত্বক নরম এবং খসখসে ভাব দূর হবে এবং মসৃণ থাকবে।
ভ্যাসলিনের ব্যতিক্রমী ব্যবহার সম্পর্কে আরিফুর রহমান বলেন, ‘ভ্যাসলিন পুরোটাই শত ভাগ পেট্রোলিয়াম জেলি দিয়ে তৈরি। সম্পূর্ণ গন্ধহীন এবং শত ভাগ বিশুদ্ধ এই জেলি হজের সময় হজযাত্রীরা নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারেন। আবার হাতে আঘাত পেয়ে কেটে গেলে, আগুনের তাপে পুড়ে গেলে, রোদে থাকলে বা পানিতে থাকলেও অনায়াসে যে কেউ ভ্যাসলিন ব্যবহার করতে পারেন।’