তরমুজের গুণাগুণ- চেনা তরমুজের অচেনা স্বাস্থ্য উপকারিতা জেনে নিন

0
778
তরমুজের উপকারিতা

গরমের অশ্বস্তি থেকে মুহূর্তেই প্রশান্তি আনে মৌসুমি ফল তরমুজ। শরীর ঠান্ডা রাখতে তরমুজের জুড়ি মেলা ভার। তরমুজের নানান রকম উপকারিতা রয়েছে।  তরমুজের মনকাড়া রঙ আর রসালো মিষ্টি স্বাদের জন্য ছোট-বড় সবাই তরমুজ খেতে ভালোবাসে। বিশেষ করে গরম যত বাড়ে তরমুজের চাহিদাও তত বাড়তে থাকে। তরমুজে শতকরা প্রায় ৯২ ভাগ পানি আছে। তাই নিদারুণ গরমের মধ্যে তরমুজ খেলে সহজেই মিটে পানির তৃষ্ণা।

তরমুজের পুষ্টিগুণ
তরমুজে আছে অনেক পুষ্টিগুণ। প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা তরমুজে রয়েছে ৯২ থেকে ৯৫ গ্রাম পানি, আঁশ ০.২ গ্রাম, আমিষ ০.৫ গ্রাম, চর্বি ০.২ গ্রাম, ক্যালোরি ১৫ থেকে ১৬ মিলিগ্রাম। এ ছাড়াও তরমুজে ক্যালসিয়াম রয়েছে ১০ মিলিগ্রাম,আয়রন ৭.৯ মিলিগ্রাম, কার্বহাইড্রেট ৩.৫ গ্রাম, খনিজ পদার্থ ০.২ গ্রাম, ফসফরাস ১২ মিলিগ্রাম, নিয়াসিন ০.২ মিলিগ্রাম, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি ও ভিটামিন বি২।

তরমুজের বিশেষ কয়েক ধরনের অ্যামাইনো এসিড নাইট্রিক অক্সাইড তৈরি করে রক্তের স্বাভাবিক কার্যপ্রণালী বজায় রাখে। উচ্চরক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে। তরমুজে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ আছে। এতে বিটা ক্যারোটিনের পরিমাণও অনেক। বিটা ক্যারোটিন চোখ ভালো রাখে। প্রতিদিন ২ কাপের মতো তরমুজ খেলে শরীরে ভিটামিন এ-র চাহিদা পূরণ হয়। তরমুজ খেলে ত্বক উজ্জ্বল ও সুস্থ থাকে। কারণ ভিটামিন এ ত্বককে ইনফেকশন থেকে রক্ষা করে। তরমুজের ভিটামিন বি৬, ভিটামিন বি১ শরীরে এনার্জি তৈরিতে সাহায্য করে। এর ভিটামিন সি কোলাজেন গঠনে সাহায্য করে। প্রতিদিন দুই কাপ পরিমাণ তরমুজ খেলে শরীরে ৩০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি-র চাহিদা মেটে। তরমুজে আরও আছে পটাশিয়াম, যা উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকিও কমায়। পটাশিয়াম শরীরে ফ্লুইড ও মিনারেলসের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। ২ কাপ তরমুজে ৩৫০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম পাওয়া যায়। এছাড়া পরিমাণে কম হলেও তরমুজে সোডিয়াম রয়েছে যা সহজেই শরীরের চাহিদা পূরণে কাজ করে থাকে।
তরমুজে আছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ তরমুজ খেলে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস জনিত অসুস্থতা কমে যায়। এছাড়াও নিয়মিত তরমুজ খেলে প্রোস্টেট ক্যান্সার, কলন ক্যান্সার, ফুসফুসের ক্যান্সার ও ব্রেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায়। তরমুজে প্রচুর পরিমাণে পানি আছে। গরমের সময় যখন ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি বের হয়ে যায় তখন তরমুজ খেলে শরীরের পানিশূন্যতা দূর হয়। ফলে শরীর থাকে সুস্থ ও সতেজ। তরমুজে আছে ক্যারোটিনয়েড। আর তাই নিয়মিত তরমুজ খেলে চোখ ভালো থাকে এবং চোখের নানান সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। ক্যারটিনয়েড রাতকানা প্রতিরোধেও কার্যকরী ভূমিকা রাখে। আর তাই তরমুজ খেলে পেট ভরে যায় কিন্তু সেই অনুযায়ী তেমন কোনো ক্যালরী শরীরে প্রবেশ করে না। ফলে তরমুজ খেয়ে পেট পুরে ফেললে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
টেক্সাস এ অ্যান্ড এম ইউনিভার্সিটির গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, যারা যৌনশক্তির দিক থেকে দুর্বল তাদের জন্য তরমুজ প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে কাজ করে। একটি তরমুজে প্রচুর পরিমাণে সিট্রোলিন নামের অ্যামাইনো এসিড থাকে যা ভায়াগ্রার বিকল্প হিসেবে কাজ করে। তরমুজ হার্টের জন্য ভালো। রক্তবাহী ধমনীকে নমনীয় ও শীতল রাখে এটি। স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধে বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখে এ ফলটি। কিডনির জন্য বেশ উপকারী ফল তরমুজ। কিডনি ও মূত্রথলিকে বর্জ্যমুক্ত করে ফলটি। কিডনিতে পাথর হলে, চিকিৎসকরা ডাবের পানি, তরমুজ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এছাড়া রোগাক্রান্ত কোন ব্যক্তিকে দ্রুত সতেজ করে তুলতে ভূমিকা রাখে তরমুজ। চলুন আমরা উপকারিতাগুলো বিস্তারিতভাবে জেনে নিই।

আরও পড়ুনঃ   প্রচুর পুষ্টি উপাদান ফলের খোসায়!

তরমুজ ত্বকের উপকার করে

যদি আপনার ত্বকে freckle বা মেচেতা থাকে, তবে তা থেকে রেহাই পেতে প্রতিদিন তরমুজ খান।  বিশেষজ্ঞদের কথা এমন, তরমুজের সমৃদ্ধ ভিটামিন ‘এ’ দেহের ত্বকের জন্য উপকারী। নিয়মিত তরমুজ খেলে আপনার ত্বকের হারিয়ে যাওয়া লাবণ্য ফিরে আসবে—এমন সম্ভাবনা প্রবল।

 ব্যথা নিরাময় ও শরীরের টিস্যু সুরক্ষায়

তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিনি সি যা শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথা নিরাময়ে এবং ত্বক, দাঁত এবং মাংসপেশীর সুরক্ষায় প্রতিষেধক হিসাবে কাজ করে।

পানিশূন্যতা দূর করে
তরমুজে প্রচুর পরিমাণে পানি আছে। গরমের সময় যখন ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি বের হয়ে যায় তখন তরমুজ খেলে শরীরের পানিশূন্যতা দূর হয়। ফলে শরীর থাকে সুস্থ ও সতেজ।

যৌনশক্তি বাড়ায়
টেক্সাস এ অ্যান্ড এম ইউনিভার্সিটির গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, যারা যৌনশক্তির দিক থেকে দুর্বল তাদের জন্য তরমুজ প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে কাজ করে। একটি তরমুজে প্রচুর পরিমাণে সিট্রোলিন নামের অ্যামাইনো এসিড থাকে যা ভায়াগ্রার বিকল্প হিসেবে কাজ করে।

প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে
তরমুজে আছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ তরমুজ খেলে অক্সিডেটিভ স্ট্রেসজনিত অসুস্থতা কমে যায়। এ ছাড়াও নিয়মিত তরমুজ খেলে প্রোস্টেট ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার, ফুসফুসের ক্যান্সার ও স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায়।

তরমুজ ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক

তরমুজে ক্যান্সার-প্রতিরোধক উপাদান আছে। তরমুজ  প্রস্টেট ক্যানসার, কোলন ক্যানসার, ফুসফুসের ক্যানসার ও স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। বিশেষ করে, এটি প্রোস্টেটের ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।তবে যে-কোনো ক্যান্সার প্রতিরোধে তরমুজ ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে—এমনটা ঠিক নয়।

অন্যত্র বলা হয়েছে -তরমুজ অ্যান্টি অক্সিডেন্টের ভালো উৎস। এটি ক্যান্সার সৃষ্টির জন্য দায়ী কোষগুলোকে নির্মূল করতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে এতে লাইকোপিন নামে এমন এক উপাদান আছে যা প্রোটেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।

চোখ ভালো রাখে
তরমুজে আছে ক্যারোটিনয়েড। আর তাই নিয়মিত তরমুজ খেলে চোখ ভালো থাকে এবং চোখের নানা সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। ক্যারটিনয়েড রাতকানা প্রতিরোধেও কার্যকরী ভূমিকা রাখে। অর্থাৎ তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন এবং ভিটামিন এ। বিটা ক্যারোটিন যা চোখের রেটিনা সুরক্ষায় অত্যন্ত কার্যকর এবং চোখের ছানি পড়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। ভিটামিন এ চোখের জ্যোতি বৃদ্ধি করে।

ওজন কমাতে সহায়তা করে
তরমুজে আছে প্রচুর পরিমাণে পানি এবং খুব কম পরিমাণে ক্যালরি। আর তাই তরমুজ খেলে পেট ভরে যায় কিন্তু সে অনুযায়ী তেমন কোনো ক্যালরি শরীরে প্রবেশ করে না। ফলে তরমুজ খেয়ে পেট পুরে ফেললে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা কম থাকে।

আরও পড়ুনঃ   মধু ও দারুচিনি একসঙ্গে খেলে কী হয় ?

কিডনি ও লিভার সুরক্ষা

তরমুজে রয়েছে প্রচুর জলীয় উপাদান যা প্রস্রাবের জ্বালা কমায়, এটি কিডনি ও লিভার সুরক্ষায় অত্যন্ত কার্যকর। তরমুজে রয়েছে এমন এন্টিবডি যা কিডনি ও লিভার সুরক্ষায় অত্যন্ত কার্যকর।

তরমুজ অ্যাজমা প্রতিরোধে সহায়ক

সাধারণ মানুষ নিয়মিত তরমুজ খেয়ে অ্যাজমা বা হাঁপানি প্রতিরোধ করতে পারেন। তরমুজে প্রচুর ভিটামিন-সি থাকে। যারা ইতোমধ্যে অ্যাজমায় আক্রান্ত হয়েছেন, তারাও তরমুজ খেয়ে উপকার পেতে পারেন। আরেকটি বিষয়, তরমুজ ফুসফুস সুস্থ রাখতেও ইতিবাচক ভূমিকা রাখে।

দুর্বলতা দূর করে
টেক্সাস এ অ্যান্ড এম ইউনিভার্সিটির গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, যারা দুর্বল তাদের জন্য তরমুজ প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে কাজ করে। একটি তরমুজে প্রচুর পরিমাণে সিট্রোলিন নামের অ্যামাইনো এসিড থাকে যা শরীরকে প্রতিমুহূর্তে সতেজ রাখতে সহায়তা করে।

হাড়ের জন্য ভালো
তরমুজে আছে লাইকোপিনো নামক লাল উপাদান যাতে রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম। তাই তরমুজ হাড় গঠন ও মজবুত করতে অত্যন্ত সহায়ক। লিকোপেন সমৃদ্ধ খাবারের আরেকটি গুণ হল হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো করে। এটি হাড়ের অক্সিডেটিভ উপাদান দূর করে, যা হাড়ের ব্যথার জন্য দায়ী। এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন রোগের জন্য দায়ী। তাই, প্রাকৃতিকভাবেই আপনার হাড়ের সমস্যা দূর করবে তরমুজ।

প্রদাহজনিত সমস্যার সমাধান করে
এতে ফ্ল্যাভোনয়েড, ক্যারটিনয়েড, ট্রিটেপেনইডিস এবং ফেনোলিক এর মতো যৌগ রয়েছে। এগুলো শরীরের যে কোনো প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে। আবার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ তরমুজ খেলে স্ট্রেসজনিত অসুস্থতাও কমে যায়।

তরমুজ রক্তচাপ স্থিতিশীল রাখে

আপনার রক্তচাপ ঠিক আছে কি? অনেকেই খাদ্যগ্রহণে সতর্কতা অবলম্বন ও শরীরচর্চার মাধ্যমে রক্তচাপ স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করেন। চিকিত্সকরা বলছেন, খাদ্যতালিকায় নিয়মিত তরমুজ রাখুন। কারণ, তরমুজে প্রচুর পটাসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম থাকে, যা রক্তচাপ স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে।

 স্নায়ু ও মাংসপেশী সুরক্ষায়

তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম এটি প্রাকৃতিকভাবে শরীরে ইলেকট্রো পাওয়ার তৈরি করে যা শরীরের মাংসপেশী ও স্নায়ু সুরক্ষায় অত্যন্ত কার্যকর।

বলিষ্ঠ পারফর্মেন্স উন্নত করে
তরমুজ ছিটরুলীনের একটি প্রাকৃতিক উৎস। ছিটরুলীনে যে অ্যামাইনো এসিড রয়েছে তা ব্যায়াম করার সময় শরীরকে বলিষ্ঠ রাখে ও শরীরের রক্তের গতি ঠিক রাখতে সাহায্য করে। শরীরের হরমোনের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে কোন তরমুজের জুরি নেই।

হৃদযন্ত্রে রক্ত সঞ্চালন

সঠিকভাবে হৃদযন্ত্রে রক্তপ্রবাহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তরমুজ হৃদযন্ত্রে সঠিকভাবে রক্তপ্রবাহ হতে সাহায্য করে। এতে হৃদযন্ত্রে ব্লক হওয়ার প্রবণতা অনেকটা হ্রাস পায়।

 শরীরের চর্বি কমায়

তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এমাইনো এসিড যা শরীরের কোলেস্টরেল ও চর্বি কমাতে অত্যন্ত সহায়ক। এছাড়া তরমুজে রয়েছে এন্টি অক্সিডেন্ট যা শরীরের জমে থাকা কোলেস্টরেল কমাতে সহায়তা করে।

পেশীর ব্যথা থেকে বাঁচতে তরমুজ খান

আরও পড়ুনঃ   কালোজিরার গুণ-কালোজিরার অশেষ ঔষধি গুণ জেনে নিন

অনেকেই দেখা যায় শরীরচর্চার পর পেশীর ব্যথায় ভোগেন। এ থেকে বাঁচতে আপনাকে তরমুজ সাহায্য করতে পারে। শরীরচর্চার অন্তত এক ঘন্টা আগে এক কাপ তরমুজের জুস পান করুন। দেখবেন, শরীররচর্চার পর পেশীতে ব্যথার অনুভূতি তুলনামূলকভাবে কম হচ্ছে। তবে মনে রাখবেন, তরমুজের জুসে সুগারের পরিমাণ একটু বেশি। তাই জুস না-খেয়ে সরাসরি তরমুজ খাওয়া ভালো।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও স্মৃতিশক্তি

তরমুজ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। বাড়িয়ে তোলে স্মৃতিশক্তি।

তরমুজের ১০টি পুষ্টিগুণ সংক্ষেপে এখানে উল্লেখ করা হলো যদি আপনি বিস্তারিত পড়তে না চান:

১) তরমুজ হার্টের জন্য ভালো। রক্তবাহী ধমনীকে নমনীয় ও শীতল রাখে এটি। স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধে বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখে এ ফলটি।
২) কিডনির জন্য বেশ উপকারি ফল তরমুজ। ডাবের পানির যে গুণাগুণ, তরমুজেও রয়েছে সেই গুণাগুণ। কিডনি ও মুত্রথলিকে বর্জ্যমুক্ত করে ফলটি। কিডনিতে পাথর হলে, চিকিৎসকরা ডাবের পানি, তরমুজ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
৩) নয়াদিল্লিতে পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, তরমুজ পুরুষত্বকে আরও বৃদ্ধি করে।
৪) রোগাক্রান্ত কোন ব্যক্তিকে দ্রুত সারিয়ে তুলতে ভূমিকা রাখে তরমুজ।
৫) ভাইরাসজনিত সংক্রমণ বা চোখের দৃষ্টিশক্তির সমস্যা প্রতিরোধ করে এ ফলটি।
৬) তরমুজে আছে ভিটামিন সি, যা আপনার ত্বককে সজীব রাখার পাশাপাশি ত্বকের যে কোন সমস্যা প্রতিরোধ করে।
৭) পানিশূন্যতা জাতীয় সমস্যা প্রতিরোধ করে তরমুজ।
৮) ভিটামিন এ এবং সি’র চাহিদা পূরণ করে এ ফলটি। ১০০ গ্রাম তরমুজ আপনার আপনার শরীরের ভিটামিন এ’র মোট চাহিদার ১১ শতাংশ পূরণ করে। আর মাত্র এক টুকরো তরমুজ প্রতিদিনের ভিটামিন সি এর চাহিদার প্রায় অর্ধেক পূরণ করে।
৯) তরমুজ রক্তচাপ কমায় ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। তরমুজে পটাসিশয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম থাকায়, তা রক্তচাপ কমায়।
১০) লাইকোপিনসহ বিভিন্ন উপাদানে সমৃদ্ধ তরমুজ খাওয়ার অভ্যাসে বার্ধক্য দেরিতে আসে। ত্বকে সহজে ভাঁজ বা বলিরেখা পড়ে না।

এখন আমরা তরমুজ খাওয়ার সঠিক তরিকা সম্পর্কে বলবো।

১. গ্রীষ্মকালে প্রচণ্ড গরমে অনেকেই ঠাণ্ডা তরমুজ খেতে পছন্দ করেন। কিন্তু মনে রাখবেন, ঠাণ্ডা তরমুজ খেতে ভালো হলেও, আপনাকে সমস্যায় ফেলতে পারে। অতিরিক্ত ঠাণ্ডা তরমুজ আপনার পাকস্থলির ক্ষতি করতে পারে।

২. জ্বর, দাঁতের এলার্জি, মুখের ঘা, কিডনি ও পেটের সমস্যায় ভুগছেন—এমন মানুষ; গর্ভবতী নারী; এবং ডায়াবিটিসের রোগীদের তরমুজ খাওয়ার সময় সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। আর নারীদের উচিত মাসিকের সময় তরমুজ এড়িয়ে চলা।

৩. একটা তরমুজ কেটে একবারে খেয়ে ফেলা উচিত। অনেকে ফ্রিজে রেখে কয়েক দিন ধরে একটা তরমুজ খান। এটা ঠিক না। এতে তরমুজের ফ্রেসনেস কমে যায়।

তরমুজে লাইকোপিনসহ আরও বিভিন্ন উপাদান থাকায় তা নিয়মিত খেলে বার্ধক্য দেরিতে আসে। ফলে ত্বকে সহজে ভাঁজ বা বলিরেখাও পড়ে না। তাই শুধু ত্বকের জন্য নয় বরং সুস্থ থাকতে চাইলেও প্রতিদিন তরমুজ খান।

 দারুণ উপকারী তরমুজের বিচির চা

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

three × five =