বৃদ্ধ বয়সে হঠাৎ হোঁচট খেয়ে পড়ে গিয়ে কিংবা সামান্য আঘাতে হাত বা পায়ের হাড় ভেঙে যাওয়ার প্রধান কারণ অস্টিওপোরোসিস বা হাড়ের ক্ষয়। অলস ও কর্মবিমুখ জীবনযাপন এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাসের অভাবে উঠতি বয়স থেকেই হাড়ের গঠন ও ঘনত্ব মজবুত হয় না। তাই বৃদ্ধ বয়সে হাড় ভাঙার ঝুঁকি বেশি থাকে। শহরের শিশুদের হাঁটা, খেলাধুলা ও ব্যায়াম না করার জন্যও হাড় মজবুত হয় না। এ ছাড়া মহিলাদের অস্টিওপোরোসিস বেশি হয়। ঋতু বন্ধের পর ইস্ট্রোজেন হরমোন কমে গিয়ে এ সমস্যার সৃষ্টি করে। এ হরমোন হাড় মজবুত করতে ও হাড়ের ভেতর ক্যালসিয়াম ধরে রাখতে সাহায্য করে। মহিলাদের দেরিতে মাসিক শুরু হলে, সন্তান না হলে বা না নিলে এবং অসুস্থতার কারণে দীর্ঘদিন মাসিক বন্ধ থাকলে অস্টিওপোরোসিস হয়। যারা দীর্ঘদিন স্টেরয়েড ওষুধ খান এবং যৌন হরমোন কম বা থাইরয়েড ও প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থি থেকে বেশি হরমোন নিঃসৃত হয় তাদের অস্টিওপোরোসিস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
উপসর্গ : ফ্র্যাকচার বা হাড় ভেঙে প্রচণ্ড ব্যথা না হলে সাধারণত অস্টিওপোরোসিসের উপসর্গ বোঝা যায় না। যে স্থানে ফ্র্যাকচার বেশি হয় যেমন মেরুদণ্ডের হাড়, সেখানে হাড় চুপসে গিয়ে উচ্চতা কমে যায় বা কুঁজো হয়ে যায়।
রোগ নির্ণয়
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এক্সরে দেখে রোগ চেনা যায়। তবে হাড়ের ঘনত্ব বেশি কমে না গেলে ক্ষয়রোগ কিছু ক্ষেত্রে এক্সরে দ্বারা চিহ্নিত করা যায় না।
প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ ধরতে হলে Bone Scan করতে হবে।
চিকিৎসা
মহিলাদের ক্ষেত্রে আলোচিত চিকিৎসা হচ্ছে হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি। এ ছাড়া ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি, বাইফসফোনেট, ফ্লুরাইড ওষুধ হাড়ের ঘনত্ব ধরে রাখতে সাহায্য করে। অতি সম্প্রতি ইপরিপ্ল্যাভোন এবং রেলাক্সিফেন হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধিতে ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ছাড়া ভারী ব্যায়াম হাড়ের ঘনত্ব ধরে রাখতে সাহায্য করে।
ডা: এম শহীদুর রহমান
লেখক : ফিজিক্যাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়