মানুষের মৌলিক চাহিদার মধ্যে চিকিৎসা অন্যতম মানবিক চাহিদা। সুস্থ সুন্দর জীবনের জন্য সুস্বাস্থ্যের বিকল্প নেই। সৃষ্টির সূচনা হতেই মানুষ ভালো থাকার জন্য রোগব্যাধির সঙ্গে আপসহীন সংগ্রাম করে আসছে। কখনও সফল হয়েছে কখনও হয়েছে ব্যর্থ। কিন্তু আজ অবদি থেমে যায়নি মানুষের প্রচেষ্টা। প্রকৃতির বুকেই মানুষ খুঁজে আবিষ্কার করছে রোগমুক্তির ওষুধ। গাছ-গাছড়া, লতা-পাতা, শিকড়-বাকড়ের মাধ্যমে মানুষ ওষুধ তৈরি করছে। যীশু খ্রি জন্মের প্রায় ৮৬০-৩৩৭ বছর আগে হিপোক্রেটস গ্রিস দেশে চিকিৎসা বিজ্ঞানের বুনিয়াদ স্থাপন করেন। পরে প্লেটো, এরিস্টটল, সক্রেটিস প্রমুখ মহামনীষীরা একে এগিয়ে নেন। মুসলিম চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা পরে গ্রিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের সঙ্গে পরিচিত এবং একটি আধুনিক চিকিৎসাসেবা আবিষ্কারে সক্ষম হন। এদের মধ্যে ইবনে সিনা এবং আল-রাজির নাম অন্যতম। বিজ্ঞানের আবিষ্কার ও প্রসারের ফলে চিকিৎসা পদ্ধতিও পরিবর্তন হয়েছে। ইউনানি, আয়ুর্বেদ, এলোপ্যাথিক, হোমিও, কবিরাজ থেরাপি পদ্ধতিতে মানুষ চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করেন। ইউনানি বা হারবাল চিকিৎসার প্রতি মানুষের সহজাত দুর্বলতা পরিলক্ষিত হয়। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় মানুষের এ দুর্বলতাকে পুঁজি করে একশ্রেণীর লোভী প্রতারক হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। বোতলের লেবেল তুলে ওষুধ বিক্রয় করছেন। চিকিৎসাসেবা দিনে দিনে বাণিজ্য সেবায় পরিণত হচ্ছে। মানুষের বিশ্বাসে ধরছে ফাটল। সর্বত্রই একই চিত্র। সুস্থ থাকার প্রত্যাশা যেন মানুষের দুরাশা। বিশেষ করে হারবাল চিকিৎসাকে যুগোপযোগী ও আধুনিকরণের জন্য কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার মতো ঘৃণ্য মানসিকতার পরিবর্তন চাই। অপচিকিৎসা কিংবা ব্যবসায়িক চিকিৎসা নয়, সুচিকিৎসাই আমাদের কাম্য।
আকাশ হাসনাত, মোঃ কালাম হোসেন
দৌলতপুর, রাজশাহী