সৌন্দর্য ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কলার ১০টি উপকারিতা

0
447
কলা

আমরা প্রায় সবাই জানি কলা খাওয়া আমাদের স্বাস্থের জন্য ভালো। কিন্তু কেন ভালো বা এটি কত ভাবে আমাদের উপকার করে থাকে তা না জানার কারনে অনেকেই কলা খাওয়াটাকে তেমন একটা গুরুত্ব দেই না। কলার উপকারীতাগুলোর মধ্যে বহুল প্রচলিত হলো এটি রক্তচাপ কমায় এবং শক্তিক্ষয় রোধ করে। এই দুটি উপকারীতা ছাড়াও কলার আরও অনেক উপকারীতা রয়েছে। তেমনই কিছু উপকারীতা এখানে তুলে ধরা হলো।

১. মাংসের তরকারী আরও ‍সুস্বাদু করে তোলে
কোনো কোনো এলাকায় মাংসকে নরম ও সুস্বাদু করতে রান্নার সময় কলাপাতা দিয়ে পেঁচিয়ে রান্না করা হয়। এই একই ফলাফল আপনি তরকারীতে কলা ব্যাবহার করেও পেতে পারেন। বাজার থেকে কলা কিনে এনেছেন কিন্তু এখনও তা কাঁচাই আছে? চিন্তা কি? মাংসের তরকারিতে কলা দিয়ে রেধে ফেলুন। এতে করে বাড়িতে পড়ে থাকা কাঁচা কলাগুলো যেমন কাজে লাগছে তেমনি তরকারিতে ভিটামিন ও ফাইবার এর পরিমানও অনেক বেড়ে যাবে।

২. চুলকে আরও আকর্ষনীয় করে তোলে
চুল পরিচর্যায় কসমেটিকস এর পরিবর্তে কলা অন্যতম বিকল্প হতে পারে। হেয়ার মাস্ক হিসেবে কলা চুলে ব্যাবহার করতে পারেন। কলায় রয়েছে ভিটামিন বি ও ফলিক অ্যাসিড সহ আরও অনেক পুষ্টিগুন তাই এটি চুলে সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে ব্যাপকভাবে সহায়তা করে। কলার সাথে চুলের সৌন্দর্যবর্ধক অন্যান্য প্রাকৃতিক উপাদান যুক্ত করে আপনি আরও ভালো ফলাফল পেতে পারেন। এর জন্য আপনার প্রয়োজন কলা, দুধ এবং মধু। উপাদানগুলো একত্রে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এরপর তা চুলে দিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর তা ধুয়ে ফেলুন।

৩. ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে
কলা ব্যাবহার করে খুব সহজেই ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করা যায়। শুধু কলা থেঁতলে নিয়ে মুখে লাগান। এরপর ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। কলায় রয়েছে ভিটামিন-এ যা মুখের দাগ দুর করে এছাড়াও রয়েছে ভিটামিন-ই যা ত্বকে আনে তারুন্যের ঝলক। বিশেষ কোনো উপলক্ষ্যে বা অনুষ্ঠানের আগের রাতে মুখের দাগ দুর করতে চাইলে পুরো মুখে কলা ব্যাবহার করুন এতে ভালো ফলাফল পাবেন।

আরও পড়ুনঃ   পাথরকুচি পাতার উপকারিতা: পাথরকুচি পাতার অবিশ্বাস্য ঔষধি গুণাগুণ জেনে নিন

৪. দেহে প্রোবায়টিক এর যোগান দেয়
আমাদের দেহের অন্ত্রে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার নিয়ন্ত্রনের জন্য প্রোবায়টিক গ্রহন করা প্রয়োজন। আর অন্ত্রে ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়া বৃদ্ধি হওয়া মানেই পুরো দেহেই এর প্রভাব ছড়িয়ে পড়া। প্রোবায়টিক এর একটি অন্যতম প্রাকিৃতিক উৎস হলো কলা কেননা কলাতে রয়েছে ফ্রুক্টোওলিগোস্যাকারাইড (FOS) যা দেহে উপকারী ব্যাক্টেরিয়া বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

৫. দুশ্চিন্তা দুর করে
কলায় রয়েছে প্রচুর পরিমানে পটাশিয়াম যা উচ্চ রক্তচাপ কমায়। এছাড়াও এটি মানসিক চাপ কমায় এবং একই সাথে মানসিক কর্মদক্ষতাও বৃদ্ধি করে। এর কারন হলো এটি কর্টিজল নামক স্ট্রেস হরমোন নিয়ন্ত্রন করে। তাই যেকোনো গুরুত্বপুর্ন বা স্ট্রেসফুল কাজ শুরু করার পুর্বে একটি কলা খেয়ে নেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

৬. ওজন কমাতে সাহায্য করে
অধিক ক্যাররির খাবারের বিকল্প হিসেবে কলা খাওয়া হলে তা দ্রুত ওজন কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া কলা মিষ্টি জাতীয় খাবার হওয়ায় চিনির আকাঙ্খা থেকে আপনাকে মুক্তি দেবে। মাঝারি আকৃতির একটি কলায় মাত্র ১০৫ ক্যালরি থাকে। এছাড়াও কলাতে রয়েছে ক্রোমিয়াম নামক খনিজ পদার্থ, যা বিপাক ক্রিয়ায় সহায়তা করে।

৭. শারিরিক পরিশ্রম ও ব্যায়ামে শক্তি যোগায়
বড় ধরনের শারিরিক পরিশ্রম এর জন্য প্রয়োজন ভিটামিন-সি। কেননা এটি শরীরের পেশি, লিগামেন্ট ও রগ শক্তিশালী করে তোলে। কলায় প্রচুর পিরমানে ভিটামিন সি রয়েছে। যেহেতু এটি শারিরিক পরিশ্রমে প্রচুর সহায়তা করে, তাই ব্যায়াম করার পূর্বে কলা খাওয়ার অভ্যাস অত্যন্ত উপকারী।

৮. পায়ের গোড়ালি পরিচর্যায় সহায়তা করে
পায়ের গোড়ালি ফেটে গেলে এক্ষেত্রে কলা অনেক উপকার করে। শুধু কলা থেঁতলে নিয়ে আপনার পায়ের গোড়ালিতে লাগিয়ে নিন। এরপর কিছুক্ষন অপেক্ষা করুন, যেন তা ধীরে ধীরে চামরার ভেতর প্রবেশ করতে পারে। এখন থেকে আপনাকে আর ফাঁটা গোড়ালী নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হবে না।

৯. ঘুমের জন্য সহায়ক
রাতে বিছানায় এপাশ ওপাশ করেন কিন্তু ঘুম আসে না? কলা হলো এই সমস্যার প্রাকৃতিক সমাধান। কলা ট্রিপটোফেন নামক এক প্রকার অ্যামিনো অ্যাসিড এর খুবই ভালো উৎস। এই ট্রিপটোফেন সেরোটিন নামক হরমোন তৈরিতে গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা পালন করে। এই হরমোন মনে প্রশান্তি নিয়ে আসে, এমনকি মেজাজ খারাপ থাকলে তা-ও ভালো করে দিতে পারে। ঘুমানোর প্রায় এক ঘন্টা আগে একটি কলা খেয়ে নিন যাতে আপনার শরীর তা হজম করে ট্রিপটোফেন তৈরি করতে পারে আর আপনাকে উপহার দিতে পারে আকটি শান্তিময় ঘুম।

আরও পড়ুনঃ   আর নয় পাকা চুল ! জেনে নিন কিভাবে

১০. মাইগ্রেন দুর করে
মাথাব্যাথা ও মাইগ্রেন এর ভয়ানক ব্যাথা আপনার সারাটা দিন মাটি করে দিতে পারে। কিন্তু কলা-ই পারে এই অবস্থা প্রতিরোধ করতে। কলায় প্রচুর পরিমানে ম্যাগনেসিয়াম থাকায় এটি মাথাব্যাথার প্রকৃতিক নিরাময় হিসেবে কাজ করে। তাই এখন থেকে যে কোনো সময় আপনার মাথা ব্যাথা শুরু হতে চাইলেই চট করে একটি কলা খেয়ে ফেলুন।
এরপর থেকে বাজারে গেলে বা দোকান থেকে কোনো কিছু কিনতে গেলে সাথে কলা কিনতে কখনো ভুলে যাবে না যেন! নিয়মিত কলা খান আর সুস্থ ও সুন্দর থাকুন।

-রাইসুল মুশফেক

বিঃ দ্রঃ গুরুত্বপূর্ণ হেলথ নিউজ ,টিপস ,তথ্য এবং মজার মজার রেসিপি নিয়মিত আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে লাইক দিন আমাদের ফ্যান পেজ বিডি হেলথ নিউজ এ ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

ten − 9 =