সুস্থ-সুন্দর সন্তান জন্ম দেয়ার ক্ষেত্রে গর্ভবতী নারীর যা করণীয়

0
823
গর্ভবতী নারী

যেকোনো নারীর জন্য পরম আরাধ্য হল তার সন্তান। একজন নারী যখন গর্ভধারণ করেন তখন তার ভেতরে গভীর পরিবর্তনের সুচনা হয়। তার শারীরিক পরিবর্তনের সাথে সাথে আসে নানা ধরনের মানসিক পরিবর্তন। মা পরম ভালবাসায় নতুন শিশুকে কোলে নেবার জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষা করে। সন্তানকে সুস্থ ভাবে জন্ম দেয়ার জন্য তাই প্রত্যেকটি গর্ভবতী নারীকে সতর্ক হতে হয়। কারণ তার সামান্য অসতর্কতার ফলে সন্তানের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। অনেক সময় সন্তান হারানোর মত ঘটনাও ঘটতে পারে।
গর্ভাবস্থায় বেশি সতর্ক থাকতে হয় ওষুধ সেবনের ক্ষেত্রে। কারণ অনেক ওষুধ এমন আছে যার ফলে গর্ভের সন্তানের সরাসরি ক্ষতি সাধিত হয়। শিশু বিকলাঙ্গ, বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হতে পারে। অনেক সময় ওষুধ সেবনের ফলে মৃত সন্তানের জন্মও হতে পারে। তাই ওষুধ সেবনের আগে সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে প্রথম ৩ মাস কোন ওষুধ খাওয়া উচিৎ নয়। এমনকি আয়রন বা ভিটামিন ও খাওয়া ঠিক হবে না। কন কন ওষুধ বাচ্চার কি কি ক্ষতি করে তার একটি তালিকা দেয়া হল-
অ্যাসপিরিন
এটি খেলে শিশুর (ডিএফএন, ইকোস্পিরিন) শারীরিক গঠনে অসুবিধা হতে পারে। এই ওষুধ ব্যথানাশক। ব্যাথা কমানোর জন্য ব্যাবহার করা হয়।
মেট্রনিডাজল
এটি আমাশয়ের ওষুধ। বাজারে ফ্লাজিল, ফিলমেট, অ্যামোডিস ইত্যাদি নামে আছে। গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসের মাঝে ব্যাবহার করলে শিশুর গঠনে বিকৃতি দেখা দিতে পারে।
ডায়াজিপাম
এটি ঘুমের ওষুধ। এটি খেলে শিশুর মাংসপেশির দৃঢ়তা থাকবে না। বাজারে সেডিল, রিলাক্সেন ইত্যাদি নামে পাওয়া যায়।
ভিটামিন এ
বেশি মাত্রায় ব্যবহারে শিশুর জন্মগত ত্রুটি দেখা দিতে পারে।
কৃমিনাশক
গর্ভাবস্থায় এই ওষুধের সেবনে গর্ভপাত ঘটানোর আশঙ্কা থাকে। বাজারে এই ওষুধঅ্যালবেন, অ্যালমক্স, আরমক্স ইত্যাদি নামে পাওয়া যায়।
এসব ওষুধ সাধারণত বেশি ব্যাবহার করা হয়। তাই এসব থেকে বেশি সতর্কতার প্রয়োজন। এসব ছাড়াও বিশেষ কিছু ওষুধ আছে যা হয়ত সবাইকে ব্যাবহার করতে হয়না। কিন্তু গর্ভবতী মায়ের যদি এইগুলোর কোন একটা সমস্যা থাকে তবেঁ তিনি এসব ওষুধ এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন। যেমন-
সালফোনামাইড
এটি খেলে শিশুর জন্ডিস হতে পারে। এটি ডায়াবেটিসের ওষুধ। মা’র যদি ডায়াবেটিকস থাকে তবে গর্ভাবস্থায় মায়ের ইনসুলিন ব্যবহার করাই শ্রেয়।
এন্ডোমিথাসিন
এই ওষুধ বাতের ব্যাথার জন্য খাওয়া হয়। আইমেট, ইন্ডোমেট ইত্যাদি নামে পাওয়া যায়। গর্ভাবস্থায় এই ওষুধ খেলে শিশুর শারীরিক গঠনে অসুবিধা হতে পারে।
ক্লোরোকুইন
এই ওষুধটি হল ম্যালেরিয়ার জন্য। এই ওষুধের গর্ভাবস্থায় প্রথম দিকে ব্যাবহারের ফলে ব্যবহারে শিশু বধির ও বোবা হতে পারে।
ক্লোরামফেনিকল
এই ওষুধের সেবন গর্ভাবস্থায় শিশুর মৃত্যু ঘটায়। এটি টাইফয়েডের ওষুধ।
টেট্রাসাইক্লিন
এটি শিশুর হাড় ও দাঁতের গঠনে ক্ষতি করে।
কর্টিসোন/প্রেডনিসোলন
এই ওষুধটি স্টেরয়েড-জাতীয় ওষুধ। এর সেবনের ফলে মৃত শিশু জন্ম নেবে।
ইস্ট্রোজেন/স্টিলবেস্টরন
মেয়েশিশু হলে ভবিষ্যতে যৌনাঙ্গে ক্যানসার হতে পারে। এটি হরমোন জাতীয় ওষুধ।
জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি (ওরাল কন্ট্রাসেপটিভ পিল)
ভ্রূণের গঠন বিকৃতি করবে। ফলে বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম হতে পারে।
ওষুধের ফলে গর্ভের সন্তানের ক্ষতি হতে পারে এইটা যেমন সত্যি তেমন সব ওষুধেই যে ক্ষতি হবে এটাও ঠিক নয়। কোন কোন ক্ষেত্রে বাচ্চার ভালোর জন্যই কিছু ওষুধ খেতে হবে। তবে যে ওষুধ খাওয়ার দরকার পড়ুক না কেন আগে নিজের ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিতে ভুল করবেন না। প্রত্যেক গর্ভবতী মা ওষুধের ব্যাপারে সতর্ক থাকলেই একটি সুস্থ ও সুন্দর সন্তান জন্ম নিবে।

আরও পড়ুনঃ   সিজার করে বাচ্চা হয়েছে? অবশ্যই জেনে রাখুন দরকারি এসব তথ্য

১০ দিনে দুইবার গর্ভবতী হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার এক নারী!

সূত্রঃ দুরন্ত সংবাদ

বিঃ দ্রঃ গুরুত্বপূর্ণ হেলথ নিউজ ,টিপস ,তথ্য এবং মজার মজার রেসিপি নিয়মিত আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে লাইক দিন আমাদের ফ্যান পেজ বিডি হেলথ নিউজ এ ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

four × 1 =