লক্ষ্মীপুর জেলায় ভুল চিকিৎসায় এক শিশু পঙ্গু হয়ে যাওয়ার অভিযোগে ভুয়া অর্থোপেডিক চিকিৎসক বিকাশ ভৌমিককে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এছাড়া স্মৃতি আক্তার (১৩) নামে ওই বাকপ্রতিবন্ধী শিশুর চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনের জন্য তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নুরুজ্জামান এসব জরিমানা করেন।
জরিমানাপ্রাপ্ত ভুয়া চিকিৎসক বিকাশ লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ সেবক (ব্রাদার) ও কুমিল্লা জেলার মৃত নিশি কান্ত ভৌমিকের ছেলে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, সদর হাসপাতালে স্টাফ সেবক বিকাশ দীর্ঘদিন যাবত জেলা শহরের হাসপাতাল রোড সার্জিকেল মার্ট নামে চেম্বার খুলে নিজেকে অর্থপেডিক ডাক্তার দাবি করে চিকিৎসার নামে প্রতারণা করে আসছিল। গত ১৭ জুলাই সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের গনিপুর গ্রামের এক বাকপ্রতিবন্ধী শিশুর ডান পা ভেঙে গেলে সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আনে তার পরিবার। এ সময় সদর হাসপাতালে অর্থপেডিকের ডাক্তার নেই দাবি করে এক দালাল তাদের বিকাশ ভৌমিকের কাছে নিয়ে যায়।
একপর্যায়ে নিজেকে অর্থপেডিকের চিকিৎসক দাবি করে ওই রোগীর পরিবারের কাছ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় বিকাশ। পরবর্তীতে ওই প্রতিবন্ধী শিশুর পায়ে পচন ধরলে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে তার মা জান্নাতুল ফেরদাউস সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেন।
এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে এ অভিযোগের সত্যতা পেলে বাক প্রতিবন্ধী শিশুর চিকিৎসার জন্য তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয় ওই ভুয়া চিকিৎসককে। পরবর্তীতে ওই শিশুর চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয়ভার বহনেরও নির্দেশ দেয়া হয়। এছাড়া তার চেম্বারের মালামাল জব্দ করা হয়।
প্রতিবন্ধী স্মৃতি আক্তারের মা জান্নাতুল ফেরদাউস বলেন, ‘আমরা স্মৃতিকে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে বিভিন্ন ভাবে পরামর্শ দিয়ে ভুয়া ডাক্তার বিকাশ বাবুর চেম্বারে নিয়ে আসে হয়। এ সময় শিশুটির ভুল অপারেশন করে নগদ সাড়ে ৪ হাজার টাকা নেয়। অথচ আমার মেয়েকে ভালো না করে আজীবনের জন্য পঙ্গু করে দেয় ওই ভুয়া ডাক্তার বিকাশ বাবু।’
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান বলেন, ‘শিশু স্মৃতি আক্তারের পরিবারের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়ে ভুয়া অর্থপেডিক চিকিৎসক বিকাশ ভৌমিককে আটক করা হয়। পরে ঘটনার সত্যতা পেয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাকে জরিমানা করা হয়।’