উৎসবে, মাংস খাওয়া হয়। তবে তা যেন পরিমিত থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
বয়স, ওজন, উচ্চতা, কাজ করার ধরণ ইত্যাদি ভেদে মানুষের শরীরের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে হয়। তাই সুস্থ থাকতে চাইলে পরিমিত খাবার খাওয়া উচিত।
ডা. কামরুল বলেন, “ভরপেট খাওয়া কখনই স্বাস্থ্যসম্মত নয়, সুস্থ সবল মানুষদেরও পরিমিত পরিমাণে গরুর মাংস খাওয়া উচিত। যাদের হৃদরোগ আছে, হার্টে ব্লক আছে, রক্ত চাপ বেশি, রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেশি বা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নেই তাদের জন্য গরুর মাংস খাওয়াটা বেশ ক্ষতিকর। সেক্ষেত্রে দুতিন টুকরা বা সর্বোচ্চ চার টুকরা মাংস খেতে পারেন। এর বেশি না খাওয়াই ভালো।”
গরুর মাংস গুরুপাক খাবার। এর সঙ্গে ভারী খাবার যেমন পোলাও, কোরমা ইত্যাদি খাওয়া হলে তা আরও বেশি গুরুতর হয়। এর জন্য গরুর মাংস খাওয়ার পাশাপাশি আঁশযুক্ত খাবার যেমন- সবজি, সালাদ ও তাজা ফল ইত্যাদি খাওয়া প্রয়োজন।
যাদের আলসার বা পিত্তথলিতে পাথরজনিত সমস্যা আছে তাদের গরুর মাংস খেলে খানিকটা অসুবিধা যেমন- পেট ব্যথা, বুক জ্বালা করা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে একটু বেছে খাওয়া উচিত।
অনেকের গরুর মাংসে এলার্জি থাকে এর ফলে শরীর ও চোখ লাল হয়ে যায়, চোখ চুলকায়, শরীরে র্যাশ দেখা দেয়। এই ধরণের সমস্যা থাকলে যতটা সম্ভব গরুর মাংস এড়িয়ে যাওয়া উচিত।
অনেকের মনে আবার এই নিয়ে নানা দ্বিমত থাকে যে, ‘বছরে একটা দিন ‘নিয়ত’ করে খাওয়া যায়’- সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে অ্যান্টি-এলার্জিক ওষুধ খেয়ে মাংস খাওয়া যেতে পারে। তবে কোনোভাবেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিজে নিজে্ ওষুধ খাওয়া যাবে না। এটি মারান্তক ক্ষতির কারণ হতে পারে।
ডা. কামরুল বলেন, “উৎসবের দিন অনেক তেল চর্বি ধরনের খাবার খাওয়া হয় যা হজমে অসুবিধা করে তাই। তাই প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। এতে দ্রুত খাবার হজম হবে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দেখা দেবে না।
—————————————————————-
বিডি হেলথ পাঠককে আমরা বলতে চাই -আপনার বয়স, ওজন, শারীরিক সমস্যা বুঝেই মাংস খাওয়া উচিত। তাই আপনার জন্য মাংস খাওয়ার পরিমাপ ও কিছু টিপস নিম্নে দেয়া হল :-
পরিমাপ :
প্রথমেই আপনার জানা উচিত মাংসের পুষ্টির উপাদান, তাহলে আপনি আপনার শারীরিক সমস্যাস সাথে মিলিয়ে জানতে পারবেন ঠিক কতটুকু মাংস আপনার খাওয়া উচিত।
পুষ্টির উপাদান প্রতি ১০০ গ্রামে= গরু ছাগল ভেড়া মহিষ
পানি % ৭৪ ৭৪ ৭৫ ৭৯
আমিষ % ২২ ২২ ২১ ১৯
চর্বি % ৩ ৭ ৩ ১
খনিজ % ১ ১ ১ ১
ভিটামিন-এ (মি.গ্রাম/১০০গ্রাম) ২০ ১০ ১০ –
ভিটামিন-সি (মাইক্রো.গ্রাম/১০০গ্রাম) ১৫০০ – ১০০০ –
ভিটামিন-ই (মি.গ্রাম/১০০গ্রাম) ৪০০ ৫০০ ৫০০ –
আয়রন (মি.গ্রাম/১০০গ্রাম) ৩ ২ ২ –
ক্যালসিয়াম (মি.গ্রাম/১০০গ্রাম) ১০ ১০ ১০ –
কোলোস্টেরল (মি.গ্রাম/১০০গ্রাম) ৭৬ ৭০ ৭০ –
টিপস
. আপনি যদি শারীরিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ থাকেন তাহলে সপ্তাহে ৩০০ গ্রাম মাংস আপনার জন্য যথেষ্ট।
. যদি আপনি ডায়েট প্ল্যান অনুসরণ করে থাকেন তাহলে ঈদের সময়ও আপনার প্ল্যান অনুসরণ করুন। খুব যদি না মানতে ইচ্ছে হয় তাহলে আপনার ডায়েটিস্টের সাথে কথা বলে অন্য খাবারের সাথে অনুপাত করে নিন।
. সকালে এবং দুপুরে মাংস খান। রাতে মাংস জাতীয় সকল খাবার এড়িয়ে চলুন।
. মাংসের সাথে খাবার তালিকায় শাকসবজি ফলমূলও বেশি পরিমাণে রাখুন।
. মাংস জাতীয় খাবার রান্না করার সময় অবশ্যই সাদা চর্বি ফেলে দিয়ে রান্না করুন।
. মাংস খাবার পর এক কাপ লেবু দিয়ে গরম পানি অথবা লেবু চা খেয়ে নিন। তাহলে পেটে চর্বি ঝমা হবে না।
. যে বেলায় মাংস খাবেন সে বেলায় বাত বা রুটির পরিমাণ কমিয়ে দিয়ে সবজির পরিমাণ বাড়িয়ে দিন।
. মাংস যদি ঝোল ঝোল রান্না করা হয় তাহলে ঝোল খাবেন না। কারণ মাংসের তেল চর্বি মসলা ক্ষতিকারক সব পদার্থ ঝোলে বেশি পরিমাণে থাকে।
. হাই ব্লাড প্রেশার, হার্টের সমস্যা থাকলে মাংস থেকে দূরে থাকুন।
সরিষার তেলে গরুর মাংস
বিঃ দ্রঃ গুরুত্বপূর্ণ হেলথ নিউজ ,টিপস ,তথ্য এবং মজার মজার রেসিপি নিয়মিত আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে লাইক দিন আমাদের ফ্যান পেজ বিডি হেলথ নিউজ এ ।
Very very very nice idea for Health…
Thank you for the comment