বাতজ্বর নিয়ে যত বিভ্রান্তি

0
402
বাতজ্বর , বিভ্রান্তি,rheumatic fever

বাতজ্বর বা রিউমাটিক ফিভার পাঁচ থেকে ১৫ বছরের শিশুদেরই বেশি হয়ে থাকে। বাতজ্বর থেকে পরে হূদেরাগ, হূদ্যন্ত্রের ভালভ নষ্ট হওয়া ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে বলে অভিভাবকেরা রোগটি নিয়ে আতঙ্কে থাকেন। শিশুদের গিঁটে ব্যথা হলে অনেক সময় বাতজ্বর হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়। সেই সঙ্গে এ ধরনের উপসর্গে শিশুর রক্তে ইএসআর, এএসও টাইটার ইত্যাদি পরীক্ষা করা হয়। এএসও টাইটার একটু বেশি পেলেই অনেক সময় বাতজ্বরের দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা শুরু করে দেওয়া হয়। কিন্তু এ রোগ নির্ণয়ের সময় কিছু জরুরি বিষয় চিকিৎসক ও অভিভাবক—উভয়েরই মনে রাখা উচিত:
১. কেবল এএসও টাইটার বাড়লেই বাতজ্বর হয়েছে তা বলা যাবে না। আবার এ রিপোর্ট স্বাভাবিক, মানে বাতজ্বর নেই তা-ও বলা যায় না। বাতজ্বরের অনেকগুলো সুস্পষ্ট উপসর্গ ও লক্ষণ রয়েছে, যেগুলোর সমন্বয়ে রোগটি নির্ণয় করতে হয়।
২. স্ট্রেপটোকক্কাস ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে টনসিল বা গলার প্রদাহ হলে রক্তে এএসও টাইটার বাড়ে। যেকোনো নিরীহ টনসিল সংক্রমণেই এ পরীক্ষার রিপোর্ট অস্বাভাবিক আসতে পারে। তাই এটি বাতজ্বরের কোনো নিশ্চিত ও একমাত্র প্রমাণ নয়।
৩. বাতজ্বরে গলা, পিঠ, হাত ও পায়ের ছোট ছোট গিরা আক্রান্ত হয় না।
৪. ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে হূৎপিণ্ডে প্রদাহ হয় না।
বাতজ্বর নির্ণয় করা হলে একটি শিশুকে দীর্ঘদিন বছরের পর বছর পেনিসিলিন ইনজেকশন বা বড়ি সেবন করতে হয়। তাই চট করে চিকিৎসা শুরু করার আগে রোগ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে নেওয়াই ভালো। এবার জেনে নিন বাতজ্বরের মুখ্য ও গৌণ উপসর্গগুলো, যার সমন্বয়ে রোগ নির্ণয়ে পৌঁছাতে হয়।

মুখ্য উপসর্গ  

১. অস্থিসন্ধির প্রদাহজনিত ব্যথা ও ফুলে যাওয়া, যা একটি সন্ধি ভালো হয়ে গেলে অন্যটিকে আক্রমণ করে

২. হূৎপিণ্ডের প্রদাহ বা কার্ডাইটিস

৩. ত্বকের নিচে গোটা, ত্বকের লালচে দাগ

৪. স্নায়ুজটিলতায় পেশির অস্বাভাবিক চলন

আরও পড়ুনঃ   জন্ডিসের খাবারঃ জন্ডিসের কিছু ঘরোয়া প্রতিকার জেনে নিন

গৌণ উপসর্গ:

জ্বর, সন্ধিতে ব্যথা, ইসিজিতে বিশেষ পরিবর্তন, রক্তে ইএসআর বা সিআরপি বৃদ্ধি ইত্যাদি।

দুটি মুখ্য অথবা একটি মুখ্য উপসর্গের সঙ্গে দুটি গৌণ উপসর্গ মিলে গেলে এবং এর সঙ্গে স্ট্রেপটোকক্কাস ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ প্রমাণিত হলেই কেবল বাতজ্বর হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া যাবে। স্ট্রেপটোকক্কাস সংক্রমণ প্রমাণ করতে এএসও টাইটার করা হয়। তার মানে, এএসও টাইটার বাতজ্বরের প্রধানতম নির্দেশিক নয়, একটি সহায়ক মাত্র।

অধ্যাপক এ বি এম আবদুল্লাহ

বাতজ্বর সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

one × 5 =