বিজ্ঞানের নানা সুফল আমরা ভোগ করছি। কিন্তু নগরায়নের দাপটে আজ আমাদের ফুসফুসের বারোটা বাজতে বসেছে।
ফুসফুসের নানা সমস্যা বর্তমানে অনেক বেড়ে গেছে। ফুসফুস প্রধানত দুটি কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রথমত, নানা ধরণের অসুখ বিসুখের কারণে এবং দ্বিতীয়ত, জন্মগত অসুখ। জন্মগত অসুখ প্রতিরোধ করা না গেলেও ফসুফুসের আরো অর্জিত বিভিন্ন অসুখ প্রতিরোধ করা যায় সহজেই।
ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হবার বিভিন্ন কারণ নিম্নে আলোচিত হল-
১. যক্ষ্মার জন্য ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
২. মশার কয়েল থেকেও ফুসফুসের ভীষণ ক্ষতি হতে পারে।
৩. দুর্ঘটনা জনিত কারণে এবং ফুসফুসে আঘাতের কারণে এর ক্ষতি হয়।
৪. কয়লা খনিতে যারা কাজ করে তাদের যক্ষ্মাসহ বিভিন্ন ফুসফুসের অসুখ দেখা যায়। ফলে ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
৫. ধোঁয়া, গাড়ির ধোঁয়া যাতে প্রচুর কার্বন ডাই অক্সাইড থাকে এগুলো ফুসফুসের জন্য ভীষণ বিপজ্জনক।
৬. দূষিত পরিবেশ ফুসফুসকে ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
৭. বিভিন্ন খনি অঞ্চলে ফুসফুসের অসুখ বেশি হয়।
ফুসফুস জীবন রক্ষার অপরিহার্য অঙ্গ। যদিও একটি ফুসফুস নিয়ে বাঁচা সম্ভব কিন্তু দুটিফুসফুসই যদি রোগাক্রান্ত হয় তবে মৃত্যু অনিবার্য।
ফুসফুস সুস্থ রাখতে নিম্নবর্ণিত নিয়ম মেনে চলতে হবে-
১. ধূমপানকে চিরবিদায় জানাতে হবে। ধূমপান ফুসফুসের অনেক ক্ষতি করে। ফুসফুসের ক্যান্সারের প্রধান কারণ ধূমপান।
২. মশা তাড়াতে কয়েলের পরিবর্তে মশারী ব্যবহার করা উচিত।
৩. অ্যালার্জি দীর্ঘদিন থাকলে ফুসফুসের অনেক ক্ষতি হয়। যেসব খাবারে অ্যলার্জি হয় তা থেকে দূরে থাকতে হবে।
৪. ধোঁয়াজনিত পরিবেশে অবশ্যই রুমাল ব্যবহার করতে হবে।
৫. কলকারখানার ধোঁয়ার ব্যাপারে যথাযথ আইন প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
৬. গাড়ির ব্যবহার কমাতে হবে এবং পরিবেশে বান্ধব যানবাহন আবিস্কার ও ব্যবহার বাড়াতে হবে।
৭. যক্ষ্মা রোগীর কাছ থেকে দূরে থাকতে হবে। কাছে গেলে মাস্ক পড়তে হবে।
৮. জন্মগত ফুসফুস রোগে যথাযথ চিকিত্সা করতে হবে।
৯. বাড়ির চারপার্শ্বের পরিবেশ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
১০. ফুসফুস রোগাক্রান্ত হলে দ্রুত চিকিত্সকের শরণাপন্ন হতে হবে।
তাই আশা করা যায় সবাই সচেতন হলে এই সুন্দর পৃথিবীতে শ্বাস প্রশ্বাস নিতে ফুসফুসের সুস্থতা অপরিহার্য।
Source:এইবেলা
উপসংহারেও ফুসফুস ভাল রাখার উপায় সম্পর্কে আরো কিছু অভ্যাসগত দিক ও খাবারের পরামর্শ
ধূমপান করলে রক্তে নিকোটিনের পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। একইসঙ্গে ফুসফুসে ধোয়া জমতে থাকে। ধূমপানে অভ্যস্তরা নিজের ফুসফুস পরিষ্কার করতে পারেন নানা উপায়ে। তবে ধূমপান ছাড়তে পারলে তার থেকে বড় আর অন্য কিছু হতে পারে না।
যদি কোনোভাবেই ধূমপানের নেশা ছাড়তে না পারেন, তাহলে ফুসফুসকে রক্ষার জন্য কয়েকটি উপায় জেনে নিন।
- যোগ ব্যায়াম অভ্যাস করুন : প্রাণ ভরে শ্বাস-প্রশ্বাস নিলে শরীর থেকে টক্সিন বেরতে সাহায্য করে। যোগ ব্যায়াম অভ্যাস করলে ফুসফুসকে পরিষ্কার রাখা সম্ভব হয়।
- পুদিনা-তুলসী পাতার ব্যবহার : নানা ধরনের ফুসফুসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে পুদিনা-তুলসী এমনকি বাসক পাতার রস খেতে পারেন।
- ডায়েটে আনারস : আপনার ডায়েট চার্টে এমন খাবার রাখুন যাতে অনেক বেশি করে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস ও ভিটামিন সি রয়েছে। এক্ষেত্রে আনারস বা নানা ধরনের বেরি, পেয়ারা ইত্যাদি ফল দারুন কাজ দেবে।
- আদার রস : গলা খুসখুস বা সর্দি-কাশিতে যেমন দারুণ কাজ দেয় আদা, তেমনই ফুসফুসের ময়লা পরিষ্কার করতেও এর জুড়ি নেই। একটুকরো আদা মুখে পুরে নিন। এতে দারুন কাজ দেবে।
- গাজরের রস : গাজরের রস শুধু ফুসফুস নয়, শরীরের নানা দূষিত পদার্থকেও বাইরে বের করে দেয়। প্রতিদিন অল্প করে গাজরের রস খেলে শরীর অনেক চাঙা থাকে।
- লেবুর রস : শরীর সুস্থ রাখতে লেবুর রসের কোনো জুড়ি নেই। প্রতিদিন একগ্লাস লেবুর শরবত ফুসফুসের সঙ্গে সারা শরীরকে সুস্থ রাখে।
- গ্রিন টি : নিয়মিত গ্রিন টি খেলে ফুসফুস সুস্থ থাকতে দারুন সাহায্য করে।
- ডেয়ারিজাত দ্রব্য খাওয়া নয় : যখন ফুসফুসকে পরিষ্কার করার প্রক্রিয়া চালু করবেন তখন ডেয়ারিজাত কোনো প্রোডাক্ট খাবেন না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।
বিঃ দ্রঃ গুরুত্বপূর্ণ হেলথ নিউজ ,টিপস ,তথ্য এবং মজার মজার রেসিপি নিয়মিত আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে লাইক দিন আমাদের ফ্যান পেজ বিডি হেলথ নিউজ এ ।