দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্যে স্বল্প খরচে আধুনিক কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার

0
461
কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই সেবাকেন্দ্র থেকে ধনী-গরিব সবাই সেবা নিতে পারবে। প্রতিদিন ২৫ জন অতি দরিদ্র (অর্থ পরিশোধ করতে অসমর্থ শ্রেণি) রোগীকে বিনামূল্যে ডায়ালাইসিস করা হবে। দরিদ্র ৩০০ রোগী প্রতিদিন এক হাজার ১০০ টাকায় ডায়ালাইসিস করতে পারবেন। এখান থেকে এ শ্রেণির রোগীরা মাত্র ৭৫ হাজার টাকায় কিডনি প্রতিস্থাপন করাতে পারবেন। অতি দরিদ্ররা বিনামূল্যে কিডনি প্রতিস্থাপনেরও সুযোগ পাবেন। মধ্যবিত্ত শ্রেণির ১৫০ জন ডায়ালাইসিস করাতে পারবেন ১ হাজার ৫০০ টাকায় এবং তাদের কিডনি প্রতিস্থাপন করাতে পারবেন দেড় লাখ টাকায়। এছাড়াও ধনী/উচ্চবিত্ত শ্রেণির ২৫ জন তিন হাজার টাকায় অথবা ইচ্ছামতো দানও করতে পারবেন ডায়ালাইসিস করাতে। এ শ্রেণির লোকজন আড়াই লাখ টাকায় কিডনিও প্রতিস্থাপন করাতে পারবেন।
আরো জানা যায়, ডায়ালাইসিস করতে হলে প্রতি সেশনে (কমপক্ষে চার ঘণ্টা) সাড়ে তিন লিটার রক্ত পরিশোধন করতে ১৫০ লিটার বিশুদ্ধ পানি প্রয়োজন। এখানে আমেরিকান স্ট্যান্ডার্ডে দুইটি ধাপে পানি উৎপাদন করা হচ্ছে। পানি বিশুদ্ধ না হলে কিডনি রোগীরা ডায়ালাইসিসের মাধ্যমেই সংক্রামক রোগে ভুগতে পারেন অথবা পানির বিষাক্ত পদার্থ রক্তে মিশে গিয়ে নতুন নতুন রোগের সৃষ্টি করবে।
রাজধানীর অন্যান্য হাসপাতাল ও কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একজন রোগীর একবার ডায়ালাইসিস করাতে খরচ হয় ৪ হাজার থেকে ৯ হাজার টাকা পর্যন্ত। প্রতিমাসের হিসেবে যা প্রায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা।
এ রকম একটা আধুনিক কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার কেন করলেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে গণস্বাস্থ্য ইনিষ্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, দেশে চিকিৎসা আছে কিন্তু টাকার অভাবে মানুষ চিকিৎসা নিতে পারবে না এটা আমাকে প্রভাবিত করেছে। আমি যখন প্রথম ডায়ালাইসিস করাতে যাই তখন আমি দেখেছি মানুষ কি পরিমানে কষ্ট করে ডায়ালাইসিস করায়। অনেককে আমি হাউ মাউ করে কাঁদতে দেখেছি। অনেকে টাকার অভাবে ফের কবে ডায়ালাইসিস করাতে পারবে তা জানে না। এই বিষয়গুলো আমাকে খুব নাড়া দেয়। আমি প্রথম দিন ডায়ালাইসিস করিয়ে বাইরে এসে কেঁদেছিলাম। সেই দিন থেকেই আমি আমার বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করি। দেশের বাইরে খোঁজ নেই।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি খোঁজ নিয়ে দেখেছি ভারতে অনেক কম খরচে ডায়ালাইসিস করা যায়। এমনকি পাকিস্থান, ইরানসহ কয়েকটি দেশে বিনা খরচে ডায়ালাইসিস করা যায়। তারপর থেকেই আমি সবার সাথে যোগাযোগ করে কাজ শুরু করি। সবাই আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছে।  আমার তো ইচ্ছা ছিল ৭ মার্চ এটার অনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবো। কিন্তু সম্ভব হয়নি।’
‘সবচেয়ে গর্বের বিষয় হল সম্পূর্ণ বাংলাদেশি টাকায় এই ডায়ালাইসিস সেন্টারটি স্থাপন করা হয়েছে। কোনো বিদেশীদের সাহায্যের চিন্তা করতে হয়নি,’ বলেন ড.  জাফরুল্লাহ।
গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টারের সমন্নয়কারী ডা. মুহিব উল্লাহ খোন্দকার বলেন, ‘১০০টি ডায়ালাইসিস মেশিন নিয়ে এই সেন্টারটি ২৪ ঘণ্টা চালু থাকবে। আগ্রহী রোগীরা গণস্বাস্থ্য ডায়ালাইসিস সেন্টারের অভ্যর্থনা বিভাগে যোগাযোগ করে নির্ধারিত ফর্মে আবেদন করলে তাদের নির্ধারিত গ্রুপে ভাগ করা হবে।’
ভবিষ্যতে এখানকার চিকিৎসা ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কোনো আশঙ্কা তো নেই, বরং ধীরে ধীরে কমবে বলেও জানান ড. মহিব উল্লাহ।
এ বিষয়ে কিডনি বিশেষজ্ঞ ড. আব্দুল হামিদ বলেন, ‘এই ধরণের আধুনিক ডায়ালাইসিস সেন্টার বাংলাদেশে প্রথম। এখানে আমরা রোগীদের আন্তর্জাতিক মানের সেবা দিতে পারবো। যা সম্পূর্ণ মেশিনের মাধ্যমে করা হবে। ডায়ালাইসিসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হচ্ছে পানি। অন্যান ডায়ালাইসিস সেন্টারে এই পানি প্রথম ধাপে বিশুদ্ধ করা হয়। কিন্তু আমরা এখানে দুই ধাপে পানি বিশুদ্ধ করছি। এছাড়াও অভিজ্ঞ সব ডাক্তার ও নার্স এখানে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এখানে খুব অল্প খরচে রোগীরা সর্বোচ্চ সেবা পাবে বলে আমি আশা করছি।’

আরও পড়ুনঃ   গাজীপুরে চাঁদা না পেয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট

লেখাটি ভাললাগলে কিংবা উপকারে আসলে শেয়ার করে অপরকে জানান।

বিঃ দ্রঃ গুরুত্বপূর্ণ হেলথ নিউজ ,টিপস ,তথ্য এবং মজার মজার রেসিপি নিয়মিত আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে লাইক দিন আমাদের ফ্যান পেজ বিডি হেলথ নিউজ এ ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

18 + fourteen =