চিকিৎসা বিজ্ঞানের এহেন উন্নততর যুগেও অনেক মাকে বোঝানো যায় না, ‘ডায়রিয়ায় ওষুধ দিলে শিশুর উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হয়।’ ক্ষেত্রবিশেষে ওষুধ লাগে সত্যি, তবে অধিকাংশ সময় দাস্ত মানেই খাবার স্যালাইন। অথচ ওষুধ না লিখলে অভিভাবকদের ডাক্তার পাল্টানোর প্রবণতা এক অর্থে শিশুরই ক্ষতি করে বৈকি। তাই ডায়রিয়ায় জরুরি সতর্কতা হলোঃ প্রতিবার দাস্তের পর শিশুকে ওরস্যালাইন খাওয়ানো। এর নিয়ম হচ্ছেঃ দু’বছরের কম বয়সে ১০ থেকে ২০ চামচ, দুই থেকে দশ বছর হলে ২০ থেকে ৪০ চামচ ও ১০ বছরের পর যত খুশি সম্ভব।
বমি হলেও স্যালাইন বন্ধ না করে বরং ৫ থেকে ১০ মিনিট অপেক্ষার পর আবার ২-৩ মিনিট পরপর এক চামচ করে খাওয়ানো চালিয়ে যেতে হয়। কারণ ডায়রিয়ায় বমি বন্ধেরও মূল ওষুধ হলো ‘ওরস্যালাইন’। এ ক্ষেত্রে মজার বিষয় হচ্ছে, পেটে একবার স্যালাইন গেলেই ব্যাস, স্যালাইনে বিদ্যমান লবণ রক্তে শোষিত হয়ে যায়। ফলে বমি হ্রাস পেতে থাকে ধীরে ধীরে। বুকের দুধের পাশাপাশি সিরিয়্যাল, খিঁচুড়ি, কাঁচাকলা ও কাঁচা পেঁপের সবজি কচলিয়ে পাকাকলা ইত্যাদি খেতে দেয়া।
দাস্ত ভালো হওয়ার পর শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো। এই ভিটামিন তিন দিন খাওয়াতে হয় এবং কতটুকু খাওয়াতে হয় তা নির্ভর করে শিশুর বয়সের ওপর। যেমন ছয় মাস বয়স পর্যন্ত ৫০ হাজার ইউনিট করে প্রথম, দ্বিতীয় ও ১৪তম দিন। এভাবে ৬ থেকে ১২ মাসে ১ লাখ এবং এক বছর পর দু’লাখ ইউনিট করে।
সর্বোপরি, দাস্ত হলে সব সময় মনে রাখুন, জ্বর থাকলে, মলের সাথে রক্ত গেলে কিংবা তিন দিনের মধ্যে পায়খানার উন্নতি না হলে তাহলেই প্রয়োজন এন্টিবায়োটিক ও অন্যান্য ওষুধ, নচেত নয়। সে ক্ষেত্রে থাকতে হবে শুধু ধৈর্য ও সচেতনতা।
**************************
ডাঃ বিমল কুমার আগরওয়ালা