চার দিকে এখন ডায়রিয়া হচ্ছে। ডায়রিয়া এমন একটি রোগ যা থেকে কারও মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। অথচ খুব সহজেই ডায়রিয়া প্রতিরোধ করা সম্ভব এবং ডায়রিয়া হলে তা থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব।
ডায়রিয়া হলে
প্রথমেই ওরস্যালাইন খাওয়া শুরু করবেন। বয়স অনুযায়ী খাওয়ার নিয়ম হলোঃ
২ বছরের কম শিশুকেঃ প্রতিবার পাতলা পায়খানার পর ১০-২০ চামচ।
২ বছর হতে ১০ বছরঃ প্রতিবার পায়খানার পর ২০-৪০ চামচ।
১০ বছরের বেশিঃ যতটুকু খাওয়া সম্ভব।
ওরস্যালাইন না থাকলে বিকল্প হিসেবে খাওয়া যায় নিচের যে কোনোটিঃ
বাড়িতে প্রস্তুতকৃত লবণ-গুড়ের সরবত।
ভাতের মাড়, চিঁড়ার পানি বা ডাবের পানি।
এমনকি হাতের কাছে কিছুই না থাকলে শুধু সাদা পানি।
ডায়রিয়া আক্রান্ত প্রতিটি শিশুকে খাওয়াতে হবে ‘ভিটামিন এ’ ক্যাপসুল। ফলে শিশুকে রাতকানা, জেরাপথালমিয়া এমনকি অন্ধত্বের কবল থেকে রক্ষা করা যাবে।
ডায়রিয়া হলে কি করবেন না
স্বাভাবিক খাবার খাওয়া বন্ধ করবেন না। শিশুদের বুকের দুধ, বড়দের সব খাবার বিশেষ করে পটাসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার যেমন পাকা কলা, কমলা লেবু, আনারস, ডাবের পানি, গোল আলু, মিষ্টি আলু, মুরগির গোশত, গরুর লিভার ইত্যাদি খেতে হবে।
বমি ও পায়খানা নিরোধক ওষুধ যেমন মটিলন, স্টিমিটিল, ফেনারগান, ইমোটিল ইত্যাদি ওষুধ খাওয়া যাবে না। অনেকে এগুলোসহ ‘ওরাডেক্সন’ ওষুধও খেয়ে থাকেন যা বিপজ্জনক।
ডায়রিয়া থেকে মুক্তি পেতে কী করবেন
শিশুকে ৫ মাস বয়স পর্যন্ত শুধু বুকের দুধ খাওয়াবেন এমনকি পানিও না। তারপর বুকের দুধের পাশাপাশি ভালোবাসে রন্ধনকৃত নরম/মণ্ড করে সিরিয়্যাল, শাকসবজি, ডাল, ফল, ডিম, মাছ, মাংস ও দুধের সামগ্রী। উল্লেখ্য, ২ বছর পর্যন্ত শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াতে হবে।
পানি ফুটিয়ে কিংবা ট্যাবলেট মিশিয়ে পান করবেন।
মলত্যাগের পর, খাবার তৈরির আগে, ভোজনের পূর্বে, শিশুকে খাওয়ানোর আগে সাবান দিয়ে হাত ভালোভাবে ধোবেন।
শিশুর মল ফেলবেন নিরাপদ স্থানে। কারণ এতে রয়েছে অনেক জীবাণু।
শিশুকে মিজেলস-এর টিকা দেবেন। কারণ এর সাথে ডায়রিয়ার নিবিড় সম্পর্ক।
উপসংহারে বলা যায়, ডায়রিয়া নিজে নিজেই ভালো হয়ে যায়।
*************************
ডাঃ বিমল আগর ওয়ালা
ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল