টেস্টিং সল্ট খান? সাবধান! টেস্টিং সল্টে রয়েছে ভয়ংকর বিষ!

0
746
টেস্টিং সল্ট

আমাদের অনেক খাবারে টেস্টিং সল্ট ব্যবহার করা হয় খাবারকে সুস্বাদু করার জন্য। খাবার সুস্বাদু হবে সেটা আমরা সবাই চাই। কিন্তু টেস্টিং সল্ট নামে যে রাসায়নিক উপাদানটি আমরা ব্যবহার করছি তা নিয়ে বিজ্ঞানী মহলে শোরগোল চলছে। এর স্বাস্থ্যগত ক্ষতির বিষয়টি বিজ্ঞানীরা এখন আর উপেক্ষা করতে পারছেন না। এই রাসায়নিক উপাদানটির নাম মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট বা সংক্ষেপে এমএসজি। শুধু সোডিয়াম গ্লুটামেট নামেও এটি পরিচিত। বিজ্ঞানীরা অবশ্য এর ক্ষতির কথা বিবেচনা করে একে ‘এক্সাইটোটক্সিন’ গ্র“পের মধ্যে ফেলেছেন। এটি সড়বায়ুকে উত্তেজিত করে স্বাদের অনুভূতি বাড়ায়, কিন্তু এটি এখন বিষাক্ত বলে পরিগণিত হওয়াতেই এর এমন পরিচিতি।

খাবারের স্বাদ বাড়ানোর জন্য ব্যবহৃত টেস্টিং সল্ট নামে মারাত্মক বিষ গ্রহণ করছে মানুষ। এটি একটি রাসায়নিক উপাদান, যা খাবারকে মুখরোচক বা মজাদার করার লক্ষ্যে বেশি ব্যবহৃত হয়। এটি অধিক পরিমাণে ব্যবহার করলে স্বায়ুতন্ত্রের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে বলছেন বিজ্ঞানীরা। বিভিন্ন জটিল রোগের ঝুঁকি আছে এতে, অথচ কোনো পুষ্টিগুণই নেই।

টেস্টিং সল্ট প্রধানত চায়নিজ ও থাই খাবারে এবং পাশাপাশি নামিদামি হোটেল, বিয়ে, মেজবানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের রান্নায় অধিক পরিমাণে ব্যবহার করা হয়। অনেকে ঘরোয়াভাবে তৈরি খাবারেও ব্যবহার করেন এই সল্ট।

চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা টেস্টিং সল্টকে স্নায়ুবিষ বলে আখ্যায়িত করেছেন। বিশেষজ্ঞরা জানান, টেস্টিং সল্ট মস্তিস্ককে উদ্দীপ্ত করে এমন একটি অবস্থার সৃষ্টি করে যাতে মনে হয়, খাবারটি খুবই সুস্বাদু। মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর টেস্টিং সল্টমিশ্রিত খাবার সরবরাহ নিষিদ্ধ করতে সরকারকে উদ্যোগী হতে আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টেস্টিং সল্ট মানবদেহে প্রবেশ করে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে বিষিয়ে তোলে। ফলে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। ঘুম কম হয়। আক্রান্ত ব্যক্তির কাছে স্বাভাবিক খাবার অরুচিকর লাগে। কাজে মনোযোগ দেওয়ার ক্ষমতা হ্রাস পায়।

নিয়মিত টেস্টিং সল্ট ব্যবহারকারীদের মধ্যে মাথাব্যথা, খিঁচুনি, হরমোন নিঃসরণে গোলযোগ, শিশুদের ক্ষেত্রে লেখাপড়ায় কম মনোযোগ, মনোবৈকল্য, অতিরিক্ত ছটফটানি ভাব, মুটিয়ে যাওয়া, হাঠৎ ক্ষেপে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে। অ্যাজমায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা টেস্টিং সল্ট খেলে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। এ ছাড়া মস্তিস্কে ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দেয় এটি।

আরও পড়ুনঃ   ‘ধূমপানের কারণে দেশের ৮০ লাখ মানুষ মারাত্মক রোগে আক্রান্ত’

১৯০৮ সালে জাপানি রসায়নবিদ ও টোকিও ইমপেরিয়াল ইউনিভার্সিটির গবেষক কিকুনেই ইকেতা টেস্টিং সল্ট উদ্ভাবন করেন। সে সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ও পরে চীনে খাবার সুগন্ধিকারক হিসেবে এটি জনপ্রিয়তা পায়। তবে বর্তমানে চীনে টেস্টিং সল্ট নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সম্প্রতি ভারতের উত্তর প্রদেশের বারবানকি এলাকায় এক খাদ্য নিরাপত্তা কর্মকর্তা একটি বহুজাতিক কোম্পানির খাদ্যে টেস্টিং সল্ট পাওয়ার প্রমাণ দেওয়ার পর দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এরপর সরকার ওই বহুজাতিক কোম্পানি পণ্যটি নিষিদ্ধ করতে বাধ্য হয়।

খাবারের স্বাদবর্ধনকারী টেস্টিংসল্টের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরা হয়েছে। এবার সিদ্ধান্ত নেয়ার দায়িত্ব আপনার।

খাবার উৎপাদকদের প্রতি অনুরোধ, আমাদের ও আমাদের সন্তানদের স্বাস্থ্যরক্ষার স্বার্থে আপনারা আপনাদের উৎপাদিত খাবারে টেস্টিং সল্টের মাত্রা কমিয়ে আনুন। আপনাদের তৈরি খাবারকে নিরাপদ করতে উদ্যোগ নিন। সেই সাথে সরকারের কাছে আবেদন, খাবারে টেস্টিং সল্টের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার রোধ করতে কার্যকর পদক্ষেপ এখন থেকেই গ্রহণ করুন। প্রতিটি উৎপাদক যাতে তাদের তৈরি খাবারে টেস্টিং সল্টের মাত্রা উল্লেখ করে সেরকম আইন প্রণয়ন করুন। এমনকি ফাস্ট ফুড, হোটেল, রেস্টুরেন্ট ও চায়নিজ রেস্টুরেন্টের মেন্যুতে খাদ্যের নাম ও দামের পাশাপাশি যাতে টেস্টিং সল্টের মাত্রা বলা থাকে তার ব্যবস্থা নিন। বাংলাদেশের জনগণের জন্য টেস্টিং সল্টের দৈনিক গ্রহণযোগ্য মাত্রা কতটুকু হবে তা নির্ধারণ করুন। এর ফলে ভোক্তারা বিষাক্ত প্রতিক্রিয়া এড়িয়ে দৈনিক কতটুকু টেস্টিং সল্ট খাচ্ছেন তা নিজেরাই হিসেব রাখতে পারবেন।

শিশুর মস্তিস্কের উন্নয়নে ১৮০ ডিম!!!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

seventeen − 10 =