টাইফয়েড খুব পরিচিত এক সংক্রামক রোগ। সালমোনেলা টাইফি নামক একটি ব্যাকটেরিয়া দিয়ে এ রোগ হয়। বর্তমানে ভালো-ভালো এন্টিবায়োটিক আবিষ্কারের ফলে এর প্রকোপ এবং জটিলতা অনেক কমে গেছে। এক সময় টাইফয়েড জ্বরে অনেকে মারা যেত এবং বিভিন্ন জটিলতাও হতো।
টাইফয়েড প্রতিরোধ করতে হলে প্রথমে জানতে হবে টাইফয়েড কিভাবে ছড়ায়। তাহলে সেগুলো থেকে দূরে থাকলেই টাইফয়েড প্রতিরোধ করা যাবে সহজেই। টাইফয়েডের জীবাণু সালমোনেলা টাইফি খাবার এবং পানির মাধ্যমে মানুষের শরীরে ঢোকে। সংক্রমিত ব্যক্তি রোগ জীবাণু বহন করে। আক্রান্ত ব্যক্তির মল-মূত্র দিয়ে জীবাণুটি বের হয়ে পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ে। খাবার ও পানি যদি সে জীবাণু দিয়ে সংক্রমিত হয় তবে সে খাবার ও পানি খেয়ে অন্য মানুষও রোগাক্রান্ত হয়। এছাড়াও মাছি, তেলাপোকা এবং অন্যান্য কীটপতঙ্গ টাইফয়েডের জীবাণু এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যায়।
টাইফয়েড কিভাবে হয় এবং কিভাবে ছড়ায় তা জানা হলো। এখন সহজেই বোঝা যাচ্ছে কিভাবে প্রতিরোধ করা যাবে। প্রথমেই বলতে হয় খাবার ও পানির ব্যাপারে সাবধান হতে হবে। ফোটানো পানি বা টিউবওয়েলের পানি ছাড়া খাওয়া ঠিক নয়। পচা-বাসি খাবার খাওয়া যাবে না। খাবার ভালভাবে ঢেকে রাখা উচিত যাতে মাছি, তেলাপোকা এবং অন্য কীটপতঙ্গ বসতে না পারে। মল-মূত্র নিষ্কাশন করতে হবে যথাযথভাবে। রাস্তাঘাটের পচা-বাসি খাবার বর্জন করতে হবে।
টাইফয়েড রোগী ভাল হয়ে যাবার পর কেউ কেউ দীর্ঘদিন জীবাণুটি শরীরে বহন করেন। এসব রোগীরা সুস্থ মানুষের জন্য বিপজ্জনক। এদের যথাযথ চিকিৎসা প্রয়োজন না হলে অন্যরা আক্রান্ত হবেন। স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। মিডিয়াকে এগিয়ে আসতে হবে। স্বাস্থ্যশিক্ষা দিতে হবে সবাইকে। আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটালে টাইফয়েডের প্রকোপ অনেক কমে যাবে। টাইফয়েড প্রতিরোধ খুব সহজ। দরকার শুধুমাত্র সামান্য সচেতনতা।
ডা. মোঃ ফজলুল কবির পাভেল