খাদ্যে ও ঔষধে ভেজাল

0
401
ঔষধে ভেজাল

আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেছেন,

নিশ্চয়ই আল্লাহ পবিত্র। পবিত্র বস্ত্ত ভিন্ন তিনি কবুল করেন না। আর আল্লাহ মুমিনদের সেই নির্দেশ দিয়েছেন, যে নির্দেশ তিনি রাসূলগণকে দিয়েছেন। অতঃপর তিনি পাঠ করেন আল্লাহর বাণী, ‘হে রাসূলগণ! আপনারা পবিত্র খাদ্য গ্রহণ করুন এবং সৎকর্ম সম্পাদন করুন। (মনে রাখবেন) আপনারা যা কিছু করেন, সকল বিষয়ে আমি সম্যক অবহিত’ (মুমিনূন ২৩/৫১)

অতঃপর মুমিনদের উদ্দেশ্যে তিনি একই কথা বলেছেন,

‘হে মুমিনগণ তোমাদেরকে আমরা যে পবিত্র রূযী দান করেছি, সেখান থেকে খাদ্য গ্রহণ কর’ (বাক্বারাহ ২/১৭২)

অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) একজন ব্যক্তির উদাহরণ দিয়ে বললেন,

যে ব্যক্তি দীর্ঘ সফরে থাকা অবস্থায় এলোমেলো চুল ও ধূলি-মলিন চেহারায় দু’হাত আকাশের দিকে তুলে আল্লাহকে ডাকে, হে প্রভু! হে প্রভু! অথচ তার খাদ্য হারাম, তার পানীয় ও পরিধেয় বস্ত্র হারাম এবং সে হারাম খাদ্য দ্বারা পরিপুষ্ট হয়েছে। ফলে কিভাবে তার দো‘আ কবুল হবে?’  [1]

 

উক্ত হাদীছ প্রমাণ করে যে, হারাম খাদ্যে পরিপুষ্ট ব্যক্তির দো‘আ কবুল হয় না এবং ঐ ব্যক্তি কখনো জান্নাতে যাবে না। যেমন অন্য হাদীছে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,

‘ঐ দেহ জান্নাতে যাবে না, যা হারাম দ্বারা পরিপুষ্ট হয়েছে’। [2]

এক্ষণে খাদ্য কিসে হারাম হয়, সে বিষয়ে মৌলিক কিছু বিষয় বর্ণিত হ’ল-

 [১] খাদ্য গ্রহণের জন্য কুরআনে দু’টি মূলনীতি বর্ণিত হয়েছে- হালাল এবং ত্বাইয়িব। অর্থাৎ আইনসিদ্ধ ও পবিত্র। যেমন আল্লাহ বলেন,

‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা যমীন থেকে হালাল ও পবিত্র খাদ্য গ্রহণ কর’ (বাক্বারাহ ২/১৬৮)

এর বিপরীত খাদ্য হারাম। যেমন নিজ ক্ষেতে উৎপাদিত পাকা কলা হালাল। কিন্তু সেটা পচা হলে তা ত্বাইয়িব বা পবিত্র নয় বিধায় হারাম। পক্ষান্তরে চুরি করা খাদ্য ত্বাইয়িব হলেও তা হালাল নয় বিধায় হারাম। ঐ খাদ্য খেয়ে জান্নাত পাওয়া যাবে না।

[২] চিরন্তন হারাম খাদ্য সমূহ। যেমন আল্লাহ বলেন,

 ‘নিশ্চয়ই তিনি তোমাদের জন্য হারাম করেছেন মৃত প্রাণী, প্রবাহিত রক্ত, শুকরের গোশত এবং যা আল্লাহ ব্যতীত অন্যের উদ্দেশ্যে উৎসর্গীত (বাক্বারাহ ২/১৭৩; মায়েদাহ ৫/৩)।

তবে দু’টি মৃত প্রাণী হালাল: মাছ ও টিড্ডি পাখি এবং দু’টি রক্ত হালাল: কলিজা ও প্লীহা’। [3]

[৩] চিরন্তন হারাম বস্ত্ত সমূহ : যেমন আল্লাহ বলেন,

‘হে মুমিনগণ! নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, পূজার বেদী, শুভাশুভ নির্ণয়ের তীর, এসবই গর্হিত বিষয় শয়তানী কাজ। অতএব তোমরা এসব থেকে দূরে থাক। যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো’ (মায়েদাহ ৫/৯০)।

 

[৪] বস্ত্ত হালাল। কিন্তু হারাম মিশানোর কারণে হারাম হয়ে যায়। যেমন, মাছ-গোশত, শাক-সবজি, ফল-মূলের সাথে বিষাক্ত কেমিক্যাল মিশানো। এর দ্বারা মানব স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। এমনকি তার মৃত্যু হয়ে যায়।

পত্রিকার রিপোর্ট মতে গত জুনে মাত্র দু’সপ্তাহে দিনাজপুরে পরপর ১৪টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে বিষাক্ত কেমিক্যাল স্প্রে করা লিচু খেয়ে। তরতাজা স্কুল শিশুরা লিচু খাওয়ার দিন থেকে দু’দিনের মধ্যে হাসপাতালে মারা গেছে। ২০০৯ সালের জুলাই মাসে ‘রিড ফার্মা’ নামের একটি ঔষধ কোম্পানীর ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে ২৭টি শিশু মারা যায়। এ ছাড়া অনেক কোম্পানীর ট্যাবলেট-ক্যাপসুল তৈরী হচ্ছে আটা-ময়দা বা খড়িমাটি দিয়ে। সিরাপে দেওয়া হচ্ছে কেমিক্যাল মিশানো রং। এমনকি ‘ভল্টারিন’-এর মত নামকরা ব্যথানাশক ইনজেকশনের অ্যাম্পুলে ভরে দেওয়া হচ্ছে স্রেফ ডিস্টিল্ড ওয়াটার। বিভিন্ন নামি-দামী দেশী কোম্পানীর, এমনকি বিদেশী কোম্পানীর ঔষধও নকল করে চলেছে অনেক ঔষধ কোম্পানী লেভেল ও বোতল ঠিক রেখে! এভাবে বর্তমানে প্রায় ৪০০০ রকম নকল ঔষধ বাজারে চলছে। সরল মনে এসব ঔষধ সেবন করে শরীরে দেখা দিচ্ছে উল্টা প্রতিক্রিয়া। অনেকে মারা যাচ্ছে।

রাজশাহীতে আম গবেষণা সেমিনারে প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়েছে যে, আমে মুকুল আসার শুরু থেকে আম বিক্রয় করা পর্যন্ত ক্ষেত্র বিশেষে ৭ বার পর্যন্ত বিষাক্ত কেমিক্যাল স্প্রে করা হয় এবং মিশানো হয়। শুরুতে যে স্প্রে করা হয়, তার বিষক্রিয়া ছয় মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয়। ফলে ঐ আম খেলে নিঃসন্দেহে দেহের মধ্যে বিষ প্রবেশ করে। যাতে সে পরবর্তীতে কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়। ডাক্তার রোগ ধরতে পারেন না। অবশেষে অজ্ঞাত রোগে বা অপচিকিৎসায় অথবা বিনা চিকিৎসায় সে দ্রুত মারা যায়। অথচ বিষদাতা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। রাজশাহীর বাজারে লিচু ও আমের শতকরা ৯৫ ভাগ বিষযুক্ত বলে প্রমাণিত হয়েছে এবং এইসব ফলচাষী ও ব্যবসায়ীদের ক্রস ফায়ারে হত্যা করার দাবী উঠেছে। গত ১০ জুলাই সিরাজগঞ্জের শাহাজাদপুরে বাজারের কেনা আম খেয়ে চারজন হাসপাতালে নীত হয়েছে। যাদের একজনের অবস্থা আশংকাজনক। সৈয়দপুরে বিষাক্ত কেমিকেলের ড্রাম ধরা পড়েছে। যেখানে কাঁঠাল, লিচু, আপেল, ডালিম, বেদানা, তরমুজ ইত্যাদি চুবিয়ে উঠানো হয় এবং সপ্তাহকাল তাযা রেখে বিক্রি করা হয়। কলায় মোচা ধরার পরপরই তাতে স্প্রে করা হয়। তাতে কলা মোটা হয়। কিন্তু স্বাদহীন ও বিষাক্ত হয়। আলু-টমেটোতে প্রকাশ্যে কেমিক্যাল মিশিয়ে বিক্রি করা হয়। যার ছবি প্রায়ই পত্র-পত্রিকায় আসে। ভ্রাম্যমান আদালত মাঝে-মধ্যে আড়তে হানা দিয়ে এগুলি বিনষ্ট করে দেন। কিন্তু মূল আসামীদের টিকিতে হাত দেন না। অনেক ব্যবসায়ী শুকরের চর্বি দিয়ে সিমাই ভেজে ঘিয়ে ভাজা টাটকা সেমাই বলে চালিয়ে দেন বলে জানা যায়। অনেক বেকারীতে পচা ডিম মিশানো হয়। অনেক হোটেলে মরা মুরগী, কুকুরের গোশত ইত্যাদি বিক্রি হয় ও পচা-বাসি খাবার পরিবেশন করা হয়। অনেক ফার্মেসীতে মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ বিক্রি করা হয়। যা জনস্বাস্থ্যে দারুণ ক্ষতিকর।

আরও পড়ুনঃ   আমি কিভাবে বীর্য ও কামরসের মাঝে পার্থক্য করতে পারি? সেটা কি গন্ধের মাধ্যমে?

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,

 ‘ক্ষতিগ্রস্ত হয়োনা এবং কারু ক্ষতি করো না’। [4]  যারা এভাবে জেনে-শুনে মানুষের ক্ষতি করে, তারা সাময়িক লাভবান হলেও তারা হারামখোর। তাদের জন্য জান্নাত হারাম।

[৫] বস্ত্ত হালাল। কিন্তু প্রতারণা যুক্ত হওয়ায় তা হারামে পরিণত হয়। যেমন দুধের সাথে পানি বা পাউডার মিশানো, ড্রেনের ময়লা পানি বোতলজাত করে মিনারেল ওয়াটার বলে চালানো, নিম্নমানের পণ্য উন্নত মানের বলে প্রচার করা, নীচে নিম্নমানের পণ্য রেখে উপরে উত্তম পণ্য সাজানো, দুগ্ধবতী গাভী বিক্রয়ের পূর্বে দুধ আটকানো, গরু মোটাতাজা করার নামে ইউরিয়া সার ও অন্যান্য বস্ত্ত খাওয়ানো, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। মুরগী বিক্রির আগে তাকে পাথরের টুকরা খাইয়ে অধিক ওযনদার করা। ভাল সিমেন্টের সাথে নষ্ট সিমেন্ট গুড়া করে মিশানো ইত্যাদি যাবতীয় রকমের ভেজাল মিশ্রিত বস্ত্ত।

৯ জুলাই’১২ পত্রিকার রিপোর্ট মোতাবেক দেশে বর্তমানে ২৫৮টি এলোপ্যাথী, ২২৪টি আয়ুর্বেদী, ২৯৫টি ইউনানী ও ৭৭টি হোমিওপ্যাথিসহ মোট ৮৫৪টি ঔষধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ঔষধ কোম্পানীগুলোর মধ্যে বড় জোর ৪০টি ছাড়া বাকী প্রতিষ্ঠানগুলো নকল ও নিম্নমানের ঔষধ তৈরী করে বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি ৬২টি কোম্পানীর উৎপাদন সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হলেও এগুলির নাম রহস্যজনকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। ফলে তাদের ঔষধ বাজারে চলছে আগের মতই’।

জানা যায়, বড় বড় ডাক্তাররাই এইসব ভেজাল ঔষধ বাজারে চালু করার মূল সহযোগী। তারা এইসব কোম্পানীর কাছ থেকে বহু মূল্যের গিফ্ট (ঘুষ) নিয়ে তাদের ঔষধ প্রেসক্রিপশন করেন। কমদামের খাঁটি ঔষধ বাদ দিয়ে উচ্চ মূল্যের ভেজাল ঔষধ লিখে দেন। কারণ রোগীদের ধারণায় দামী ঔষধ খাঁটি ও দ্রুত ফলদায়ক। অনেক সময় রোগীর ঔষধের প্রয়োজন না হ’লেও স্রেফ কোম্পানীর স্বার্থে বাড়তি ঔষধ লিখে দেন।

শিশুরা জাতির ভবিষ্যৎ। তারা আমাদের সবচেয়ে প্রিয়। অথচ এই নিষ্পাপ ফুটফুটে শিশুদের আমরাই হত্যা করছি নিষ্ঠুরের মত। এদের জন্য আল্লাহ প্রদত্ত খাঁটি গরুর দুধে ভেজাল মিশিয়ে তা বিষাক্ত নকল দুধে পরিণত করা হচ্ছে। এমনকি আদৌ দুধ নয়, বরং তরল পদার্থের সাথে অন্যান্য বস্ত্ত মিশিয়ে নকল দুধ বানানো হচ্ছে। ফরমালিন মেশানো দুধ, মিষ্টি, আইসক্রিম এবং কাপড়ের রং মেশানো চকোলেট, কেক, চানাচুর ইত্যাদি খেয়ে বিশেষ করে শিশুরা দ্রুত কিডনী রোগে ও ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। এখন নকল ডিমও চোরাই পথে আসছে বিদেশ থেকে। দুগ্ধজাত ঘি, মাখন, ছানা সবকিছুতে ভেজাল। জমিতে যে সার দেওয়া হচ্ছে, সেখানেও ভেজাল। ফলে কৃষক প্রতারিত হচ্ছে। গাছে আশানুরূপ দানা ও ফল আসছে না। চাউলেও এখন ভেজাল মিশানো হচ্ছে। এক কথায় মানুষের হাত ঘুরে যেটাই আসছে, সেটাতেই ভেজাল। এমনকি বিষেও ভেজাল।

ভেজাল চেনার উপায় :

  • ১. চাঁপাইয়ের আম যখন হলুদ হবে
  • ২. লিচু যখন তার স্বাভাবিক রং হারিয়ে ফ্যাকাশে অথবা অধিক হলুদ হবে
  • ৩. পাকা কলা যখন অস্বাভাবিক রং হবে ও অধিক মোটা হবে। খোসা পাকবে ও পচবে। কিন্তু ভিতর শক্ত থাকবে ও স্বাদ নষ্ট হবে
  • ৪. আপেল, কমলা, আঙ্গুর যখন বেশী চকচক করবে। আপেলের ভিতরটা পচা, উপরের অংশ ভাল। বুঝতে হবে বিষযুক্ত।

করণীয় :

এইসব ফল কাউকে দিবেন না। মাটিতে পুঁতে ফেলবেন অথবা বদ্ধ ডোবায় বা স্রোতে ফেলে দিবেন।

বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য অধিদফতর প্রকাশিত স্বাস্থ্য বুলেটিন-২০১১-তে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী গত এক দশক ধরে বাজারে যেসব ভোগ্যপণ্য বিক্রি হচ্ছে তার শতকরা ৫০ ভাগই ভেজাল। মহাখালী জনস্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের ফুড টেস্টিং ল্যাবরেটরীতে ২০০১ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত রাজধানীসহ সারা দেশ থেকে নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে, ভোগ্যপণ্যের শতকরা ৪৮ ভাগই ভেজাল এবং ২০১০ সালে এর হার ছিল ৫২ ভাগ। উক্ত ল্যাবরেটরীর রিপোর্ট মোতাবেক দেশের বিভিন্ন কোম্পানীর ঘি ও বাজারের মিষ্টির শতকরা ৯০ ভাগই ভেজাল। তারা বলেন, মাছে ফরমালিন ও ফলমূলে হরহামেশা কার্বাইড, ইথাইনিল ও এথ্রিল মিশানো হচ্ছে’।

গত ৫ই জুলাই প্রকাশিত পত্রিকার রিপোর্ট মোতাবেক দেশের প্রসিদ্ধ ‘প্রাণ’ কোম্পানীর হট টমেটো সস পুরোটাই ভেজাল ও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর প্রমাণিত হয়েছে ল্যাব টেস্টে। তাদের বিরুদ্ধে দু’টি মামলাও হয়েছে। অথচ দেশের বড় বড় তারকা হোটেলে এগুলি সাপ্লাই দেওয়া হয়।

বস্ত্ততঃ এইসব ভেজাল যারা মিশায়, যারা সহযোগিতা করে এবং যেসব সরকারী কর্মকর্তা এসব দেখেও না দেখার ভান করে, তারা প্রত্যেকে দায়ী হবে। যারা এইসব ভেজাল খেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তাদের সকলের ক্ষতির দায়ভার ক্বিয়ামতের দিন ঐসব লোকদের উপর বর্তাবে।

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,

 ‘যে ব্যক্তি আমাদের ধোঁকা দেয়, সে ব্যক্তি আমাদের দলভুক্ত নয়। ধোঁকাবাজ ও প্রতারক জাহান্নামী’। [5] অর্থাৎ ঐ ব্যক্তি ক্বিয়ামতের দিন রাসূল (ছাঃ)-এর শাফা‘আত লাভে ব্যর্থ হবে। ফলে সে জাহান্নামী হবে।

আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন,

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) একদিন একটি খাদ্যস্ত্তপের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। এমন সময় তিনি তার মধ্যে হাত ঢুকিয়ে দিলে তাঁর হাত ভিজে গেল। তিনি বিক্রেতাকে কারণ জিজ্ঞেস করলে সে বলল, বৃষ্টিতে ভিজে গেছে। রাসূল (ছাঃ) তাকে বললেন, তাহ’লে তুমি কেন ভিজা অংশটি উপরে রাখলে না? মনে রেখ, যে প্রতারণা করে, সে আমার দলভুক্ত নয়’। [6]

শাস্তি বিধান :

ইসলামে তিন ধরনের শাস্তি বিধান রয়েছে। হুদূদ, ক্বিছাছ ও তা‘যীর।

  • ১. হুদূদ : যেগুলি আল্লাহর হক-এর সাথে সংশ্লিষ্ট এবং যেগুলির দন্ডবিধি কুরআন ও হাদীছে বর্ণিত হয়েছে। যেমন যেনা, চুরি, মদ্যপান, ধর্মত্যাগ ইত্যাদির শাস্তি।
  • ২. ক্বিছাছ : যেগুলি বান্দার হক-এর সাথে জড়িত। এগুলির শাস্তি হ’ল জীবনের বদলে জীবন, অঙ্গের বদলে অঙ্গ, যখমের বদলে যখম’ (বাক্বারাহ ২/১৭৮-৭৯; মায়েদাহ ৫/৪৫)।
  • ৩. তাযীর : যেসব শাস্তি ইসলাম বিচারকদের উপর ন্যস্ত করেছে। অপরাধের গুরুত্ব বুঝে বিচারকগণ গুরু ও লঘু দন্ড দিতে পারেন।

এক্ষণে খাদ্যে বিষ ও ঔষধে ভেজাল মিশানো ও তাতে জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি ও মৃত্যু হওয়া সাধারণভাবে তা‘যীরের অন্তর্ভুক্ত মনে করা হলেও ক্ষেত্র বিশেষে তা ক্বিছাছ-এর পর্যায়ে চলে যায়। অমনিভাবে ভেজাল সিমেন্টে বিল্ডিং বা ব্রীজ-কালভার্ট নির্মাণ করে তা ভেঙ্গে পড়ে যদি মানুষের মৃত্যু হয়, তাহ’লে সেটাও অনেক সময় ক্বিছাছ-এর পর্যায়ে চলে যায়। এইসব নীরব ঘাতকদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কঠোর আইন তৈরী করা উচিত এবং বিচারকদের নিরপেক্ষভাবে ও নিরাসক্ত মনে এদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি বিধান করা উচিত। কেননা ভেজাল দানকারীরা মানুষ হত্যাকারী এবং তারা নিঃসন্দেহে বান্দার হক বিনষ্টকারী।

আরও পড়ুনঃ   পর্নোগ্রাফী দেখলে মস্তিষ্ক যেভাবে বদলে যায়

সামাজিক শাস্তি :

উপরোক্ত আইনী ও প্রশাসনিক শাস্তি ছাড়াও সামাজিকভাবে এইসব নরঘাতকদের ঘৃণা ও বয়কট করা উচিত। এদের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক ও সামাজিক সুসম্পর্ক স্থাপন করা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। ইতিমধ্যে যেমন সূদখোর ও ভমিদস্যুরা সমাজে ঘৃণিত শ্রেণীতে পরিণত হয়েছে। খাদ্যে বিষ ও ভেজালদানকারী ব্যবসায়ী ও ফলচাষীরাও তেমনি যত দ্রুত জনগণের কাছে ঘৃণিত ও ধিকৃত হবে, তত দ্রুত এদের হাত থেকে মানুষ রক্ষা পাবে।

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,

 ‘তোমাদের যে কেউ কোন অন্যায় কাজ দেখলে সে যেন তা হাত দিয়ে প্রতিরোধ করে। না পারলে যবান দিয়ে, না পারলে অন্তর দিয়ে ঘৃণা করে। আর সেটা হ’ল দুর্বলতম ঈমান’। [7]অন্য বর্ণনায় এসেছে, এর বাইরে তার মধ্যে সরিষাদানা পরিমাণ ঈমান নেই’। [8]

তাই প্রশাসনের কর্তব্য এদের ধরে নিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া। সমাজনেতা ও সচেতন ব্যক্তিদের কর্তব্য যবান ও কলম দিয়ে এদের বিরুদ্ধে ব্যাপক জনমত গড়ে তোলা। আর নিরীহ মানুষের কর্তব্য এদের প্রতি অন্তর থেকে ঘৃণা পোষণ করা ও এদেরকে বয়কট করা।

কুরআনের বাণী :

যারা সমাজে কৃত্রিম অভাব ও দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করে এবং যারা বিষ ও ভেজাল মিশানোর মাধ্যমে মানুষ হত্যা করে, তাদের বিরুদ্ধে আল্লাহ বলেন,

 ‘যে ব্যক্তি নরহত্যা বা জনপদে ফাসাদ সৃষ্টি ব্যতিরেকেই কাউকে হত্যা করল, সে যেন সকল মানুষকে হত্যা করল’ (মায়েদাহ ৫/৩২)

তিনি বলেন,

‘তোমরা পরস্পরকে হত্যা করো না’ (নিসা ৪/২৯)

তিনি আরও বলেন,

‘মন্দের প্রতিফল মন্দই হবে’ (শূরা ৪২/৪০)

তিনি ঈমানদারগণের উদ্দেশ্যে বলেন,

 ‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না’ (নিসা ৪/২৯)

আল্লাহ বলেন,

‘তোমরা যেখানেই থাকো না কেন, তিনি সর্বদা তোমাদের সাথে আছেন এবং তোমরা যা কিছু কর, আল্লাহ সবই দেখেন’ (হাদীদ ৫৭/৪)

হাদীছের বাণী :

যারা এগুলি করে তারা মূলতঃ লোভের বশবর্তী হয়েই করে। লোভ মানুষের সহজাত ও তার ষড়রিপুর অন্তর্ভুক্ত। যেমন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,

‘যদি আদম সন্তানকে দুই ময়দান ভর্তি মাল দেওয়া হয়, তাহলেও সে তৃতীয় আরেকটি ময়দান চাইবে। কবরে যাওয়া পর্যন্ত তার পেট ভরবে না। তবে যে ব্যক্তি তওবা করে, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন’। [9]

ষড়রিপু আল্লাহ মানুষের মধ্যে সৃষ্টি করেছেন তাকে পরীক্ষা করার জন্য। মুমিনগণ এগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করেন এবং তার বিনিময়ে আল্লাহর অনুগ্রহ কামনা করেন। লোভ ও কৃপণতা অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। প্রকৃত মুমিন সর্বদা উদার ও দানশীল হয়। সে কখনোই লোভ ও কৃপণতার কাছে নতি স্বীকার করে না। কেননা এ দু’টির মাধ্যমে আল্লাহ তাকে বেশী পরীক্ষা করে থাকেন। তাই রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,

 ‘কৃপণতা ও ঈমান কখনোই কোন মুমিনের হৃদয়ে একত্রিত হ’তে পারে না’। [10] কিন্তু অসৎ ব্যবসায়ীরা সাধারণতঃ লোভে পড়েই অন্যায় করে। তারা মিথ্যা কসম করে ভেজাল মাল খাঁটি বলে বিক্রি করে ও অধিক লাভ করে। এইভাবে তারা হরহামেশা খরিদ্দারকে ঠকায়। এর দ্বারা তারা নিজেদেরকে অধিক চতুর ও অধিক লাভবান মনে করে। অথচ সে এর দ্বারা তার আখেরাত হারালো। ‘ক্বিয়ামতের দিন তার হাত-পা তার বিরুদ্ধে সাক্ষী দিবে’ (হামীম সাজদাহ ৪১/২০)

ভেজাল দানকারী ও মিথ্যা শপথকারী প্রতারক ব্যবসায়ীদের সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,

 ‘তিনজন ব্যক্তির সাথে আল্লাহ ক্বিয়ামতের দিন কথা বলবেন না এবং তাদের দিকে ফিরেও তাকাবেন না- (১) যে ব্যক্তি অহংকার বশে টাখনুর নীচে কাপড় ঝুলিয়ে পরে (২)যে ব্যক্তি দান করে খোটা দেয় এবং (৩) যে ব্যক্তি মিথ্যা শপথ করে অধিক দামে মাল বিক্রি করে ও তা চালু করার চেষ্টা করে’। [11]

আখেরাতের শাস্তি :

কৃপণ ব্যক্তি ও লোভী ধনিক শ্রেণী সাধারণতঃ এই অপকর্মগুলি করে থাকে আরো অধিক ধনী হওয়ার আশায়। বিশেষ করে রামাযান মাস এলে এদের শয়তানী নেশা আরো বেড়ে যায়। ফলে রামাযানের বরকত হাছিলের জন্য যেখানে জিনিষ-পত্রের মূল্য কমানো উচিত এবং লাভ কম করা উচিত, সেখানে এরা লাগামহীন ভাবে দাম বাড়িয়ে দেয়। তারা কেউ কেউ নিয়মিত ছালাত-ছিয়াম ও হজ্জ-ওমরাহ সম্পাদন করে। তাদের ধারণায় এসবের মাধ্যমে বান্দার হক নষ্ট করার মহাপাপ সব মাফ হয়ে যাবে। অথচ তারা জানেন না যে, বান্দার হক বান্দা মাফ না করলে তা কখনো আল্লাহ মাফ করেন না।

আরও পড়ুনঃ   সিঙ্গা লাগানো /হিজামা/ Cupping চিকিৎসা

আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) সবাইকে বললেন,

‘তোমরা কি জানো নিঃস্ব কে? তারা বলল, আমাদের মধ্যে নিঃস্ব সেই ব্যক্তি যার কোন টাকা-পয়সা ও ধন-সম্পদ নেই। তখন রাসূল (ছাঃ) বললেন, আমার উম্মতের মধ্যে নিঃস্ব ঐ ব্যক্তি, যে ক্বিয়ামতের দিন ছালাত, ছিয়াম, যাকাত ইত্যাদির নেকী নিয়ে হাযির হবে। কিন্তু দেখা যাবে যে, সে কাউকে গালি দিয়েছে, কাউকে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে, কারু মাল আত্মসাৎ করেছে, কারু রক্ত প্রবাহিত করেছে ও কাউকে মেরেছে। তখন তার নেকীসমূহ থেকে তাদের বদলা দেওয়া হবে। এভাবে দিতে দিতে তার সব নেকী শেষ হয়ে গেলে বাকী বদলার জন্য দাবীদারদের পাপসমূহ তার উপরে চাপানো হবে। অতঃপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে’ (এভাবেই নেকীর পাহাড় নিয়ে আসা লোকটি অবশেষে নেকীহীন নিঃস্ব ব্যক্তিতে পরিণত হবে এবং জাহান্নামে পতিত হবে)। [12]

আল্লাহ বলেন,

‘অতঃপর যে ব্যক্তি সীমালংঘন করে’ ও দুনিয়াবী জীবনকে অগ্রাধিকার দেয়’, ‘জাহান্নামই তার ঠিকানা হবে’ (নাযে‘আত ৭৯/৩৭-৩৯)

সরকারের প্রতি পরামর্শ :

  • ১. প্রশাসনিক কঠোরতা বৃদ্ধি করুন এবং কর্তব্যে উদাসীন ও ঘুষখোর অফিসারদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিন। তাদেরকে গ্রামে ও বাজারে পাঠিয়ে ভেজালের অপকারিতা সম্পর্কে চাষী ও ব্যবসায়ীদের সজাগ করে তুলতে বলুন।
  • ২. দলীয় নিয়োগ নীতি বাতিল করে মেধা, সততা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রশাসনের সর্বত্র লোক নিয়োগ করুন। সেই সাথে চাঁদাবাজ ও দলীয় ক্যাডারদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করুন।
  • ৩. ফরমালিন ও বিষাক্ত কেমিক্যাল তৈরীর কারখানাগুলির বিপণন কঠোরভাবে তদারকি করুন। সাথে সাথে যাতে এগুলি বিদেশ থেকে দেশে প্রবেশ করতে না পারে, তার যথাযোগ্য ব্যবস্থা নিন।
  • ৪. দেশের কৃষি বিজ্ঞানীদের এমন কিছু আবিষ্কার করতে উদ্বুদ্ধ করুন, যা বিষমুক্ত ভাবে শস্য ও ফল-মূল সংরক্ষণে সহায়ক হয়। সাথে সাথে ভেজাল শনাক্ত করণ মেশিন ও যন্ত্রপাতি সহজলভ্য করুন ও এর উপরে ছাত্র ও যুবকদের প্রশিক্ষণ দিন।
  • ৫. চাষী ও ব্যবসায়ীদেরকে আল্লাহর উপরে ঈমান বৃদ্ধি ও তাক্বদীরে বিশ্বাসী হওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করুন এবং তাদেরকে হালাল রূযী গ্রহণের প্রতি উৎসাহিত করুন।
  • ৬. প্রত্যেক গ্রামের সৎ কৃষক ও বাজারের সৎ ব্যবসায়ীদের পুরস্কৃত করুন ও তাদের তালিকা টাঙিয়ে দিন।
  • ৭. ভেজাল শনাক্তকারী মেশিনে পরীক্ষা করে বাজারে মালামাল সরবরাহ নিশ্চিত করুন। এজন্য বাজার কেন্দ্রিক নির্দলীয় ‘ভোক্তা কমিটি’ গঠন করে তাদের সহযোগিতা নিন।
  • ৮. ভ্রাম্যমান আদালতের সংখ্যা ও তাদের লোকবল বৃদ্ধি করুন।
  • ৯. ঔষধ প্রশাসনকে গতিশীল করুন। দেশে বর্তমানের মাত্র ২টির স্থলে ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরীর সংখ্যা প্রতি উপযেলায় একটি করে স্থাপন করুন। সেই সাথে সারা দেশে বর্তমানের মাত্র ৩৩ জনের স্থলে প্রতি উপযেলায় অন্ততঃ একজন করে ড্রাগ সুপার ও সহকারী সুপার নিয়োগ দিন।
  • ১০. সরকারী কর্মকর্তাদের সরাসরি কৃষক ও উৎপাদকদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে বলুন। সেই সাথে গ্রামের কৃষক, ব্যবসায়ী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিকটে গিয়ে তাদের সাথে নিয়মিত বৈঠক করতে বলুন।

উপসংহার :

পরিশেষে বলব, অন্য সবকিছুর চাইতে খাদ্যে ও ঔষধে ভেজাল দেওয়া সবচাইতে মারাত্মক অপরাধ। কেননা খাদ্য ছাড়া মানুষ বাঁচে না। আর ঔষধ ছাড়া রোগ সারে না। যেকোন মানুষ এ দু’টি বস্ত্ত ছাড়া দুনিয়ায় বাঁচতে পারে না। যারা এসবে বিষ দেয় ও ভেজাল মেশায়, তারাও এসবের মুখাপেক্ষী। দেখা যাবে যে, তারই বিষ দেওয়া ফল খেয়ে সে নিজে বা তার কোন নিকটাত্মীয় রোগাক্রান্ত হয়েছে বা মৃত্যু বরণ করেছে। তারই তৈরী ভেজাল ঔষধে তার নিজের বা তার কোন নিকটাত্মীয়ের মৃত্যু হয়েছে। তার ভাবা উচিত যে, দুনিয়ায় মানুষকে ফাঁকি দেওয়া গেলেও আল্লাহকে ফাঁকি দেওয়া যাবে না।

‘মানুষের চোখের চাহনি ও অন্তরের গোপন কথা তিনি জানেন’ (মুমিন ৪০/১৯)

অতএব যারা এগুলি করেন এবং যারা এগুলিতে প্রত্যক্ষভাবে ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেন, সকলে সমানভাবে দায়ী হবেন এবং সবাইকে ক্বিয়ামতের কঠিন দিনে আল্লাহর সম্মুখে আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,

‘তুমি দুনিয়াতে বসবাস কর এমন অবস্থায় যেন তুমি একজন আগন্তুক ব্যক্তি অথবা পথযাত্রী মুসাফির। আর তুমি সর্বদা নিজেকে কবরের বাসিন্দাদের মধ্যে গণ্য কর’। [13]

আল্লাহ তুমি আমাদেরকে জান্নাতের পথে হেদায়াত দান কর- আমীন!


[1]. মুসলিম, মিশকাত হা/২৭৬০ ‘ক্রয়-বিক্রয়’ অধ্যায়, বঙ্গানুবাদ হা/২৬৪০।

[2]. বায়হাক্বী-শু‘আব, মিশকাত হা/২৭৮৭, ‘ক্রয়-বিক্রয়’ অধ্যায়-১১ ‘হালাল উপার্জন’ অনুচ্ছেদ-১; ছহীহাহ হা/২৬০৯।

[3]. আহমাদ, ইবনু মাজাহ হা/৩৩১৪; মিশকাত হা/৪১৩২, ‘শিকার ও যবহ’ অধ্যায়-২০, অনুচ্ছেদ-২; ছহীহাহ হা/১১১৮।

[4]. আহমাদ, ইবনু মাজাহ হা/২৩৪০; ছহীহাহ হা/২৫০।

[5]. মুসলিম, মিশকাত হা/৩৫২০; ছহীহ ইবনু হিববান, ছহীহাহ হা/১০৫৮।

[6]. মুসলিম, মিশকাত হা/২৮৬০ ‘ক্রয়-বিক্রয়’ অধ্যায়-১১ অনুচ্ছেদ-৫।

[7]. মুসলিম, মিশকাত হা/৫১৩৭।

[8]. মুসলিম, মিশকাত হা/১৫৭।

[9]. মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৫২৭৩ ‘রিক্বাক্ব’ অধ্যায়-২৬, অনুচ্ছেদ-২।

[10]. নাসাঈ হা/৩১১০ ‘জিহাদ’ অধ্যায় ৮ অনুচ্ছেদ; মিশকাত হা/৩৮২৮।

[11]. মুসলিম, মিশকাত হা/২৭৯৫; মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২৯৯৫ ‘ক্রয়-বিক্রয়’ অধ্যায়-১১, অনুচ্ছেদ-২, ১৫।

[12]. মুসলিম, মিশকাত হা/৫১২৭ ‘শিষ্টাচার’ অধ্যায়-২৫ ‘যুলুম অনুচ্ছেদ-২১।

[13]. বুখারী, মিশকাত হা/৫২৭৪; বঙ্গানুবাদ হা/৫০৪৪ ‘রিক্বাক্ব’ অধ্যায়-২৬ ‘আশা ও লোভ-লালসা’ অনুচ্ছেদ-২।

খাদ্যে ভেজাল : ইসলামী দৃষ্টিতে মহা অপরাধ

লিখেছেনঃ মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব        ওয়েব সম্পাদনাঃ মোঃ মাহমুদ -ই- গাফফার

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

17 − one =