কিশমিশের ১২ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা!

0
539
kishmish,raisins
benefits of raisins

রোজকার খাবারের তালিকায় হয়ত কিশমিশ থাকে না। কিন্তু কিশমিশ ব্যবহার সাধারণত হয়ে থাকে বিশেষ খাবার তৈরিতে। কেক, ফিরনি, পোলাও, কোরমা, সেমাই ইত্যাদি খাবারে অন্যান্য মশলার পাশাপাশি স্বাদ বাড়াতে ব্যবহার করা হয় কিশমিশ। অথচ কিশমিশ রাখা উচিত প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায়। কারণ ছোট থেকে বড় সবার জন্যই কিশমিশ খুবই উপকারী।

প্রতি ১০০ গ্রাম কিশমিশে রয়েছে:

এনার্জি ৩০৪ কিলোক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট ৭৪.৬ গ্রাম, ডায়েটারি ফাইবার ১.১ গ্রাম, ফ্যাট ০.৩ গ্রাম, প্রোটিন ১.৮ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৮৭ মিলিগ্রাম, আয়রন ৭.৭ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ৭৮ মিলিগ্রাম ও সোডিয়াম ২০.৮ মিলিগ্রামভ

জেনে নিন কিশমিশের কিছু গুণের কথা –

১. বয়সের ছাপ বিলম্বিত করে:
কিশমিশে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা আমাদের শরীরের কোষগুলোকে ক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা করে। ত্বক ভালো রাখে, বয়সের ছাপ সহজে পড়তে দেয় না।

২. মুখের স্বাস্থ্যবান্ধব:
কিশমিশ মিষ্টিজাতীয় খাবার হলেও দাঁত বা মুখের কোনো ক্ষতি করে না। বরং মুখের স্বাস্থ্য বা ওরাল হেলথের পক্ষে কিশমিশ বিশেষভাবে উপকারী। এর ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট ওরাল ব্যাকটেরিয়া নিমূর্ল করতে সাহায্য করে।

৩. দাঁতের জন্য ভালো:
কিশমিশের শর্করা মূলত ফ্রুক্টোজ এবং গ্লুকোজ জাতীয়। ফলে দাঁতে কোনো ক্যাভিটি তৈরি হয় না। সকালের নাশতা অথবা দুপুরের সালাদে কিশমিশ রাখতে পারেন নির্দ্বিধায়।

৪. ফলের বিকল্প:
গাজর, নানা রকম ফল নিয়মিত খেতে বলা হয় দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখা ও ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বজায় রাখার জন্য। কারণ এগুলোতে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন, ক্যারোটিনয়েড ইত্যাদি। সঠিক পরিমাণে এগুলো পেতে গেলে দিনে অন্তত ৩টি ফল খাওয়া উচিত। সব সময় তা সম্ভব নাও হতে পারে। বিকল্প হিসেবে তখন খেয়ে নিতে পারেন একমুঠো কিশমিশ।

৫. শক্তি প্রদানকারী:
কিশমিশে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট যা তাত্‍ক্ষণিকভাবে শক্তি প্রদান করে। একমুঠো কিশিমিশ বাদামের সাথে মিশিয়ে খান। এতে প্রচুর পরিমাণে এনার্জি, প্রোটিন এবং ফাইবার পাবেন।

আরও পড়ুনঃ   মাত্র ৪ দিন খালি পেটে কিশমিশের পানি খান, তারপরই দেখবেন ফল

৬. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে:
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কিশমিশ খুব কাজে দেয়। কোষ্ঠবদ্ধতা দূর করতে রোজ খানিকটা কিশমিশ খান।

৭. রক্তস্বল্পতা দূর করে:
কিশিমিশে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, আয়রন ও পটাশিয়াম। যা রক্তস্বল্পতা দূর করে ও রক্তের সংবহন ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া
৮.ইনফেকশনের সম্ভাবনা দূরীকরণ : কিসমিসের মধ্যে রয়েছে পলিফেনলস এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিইনফেমেটরী উপাদান। যা কাঁটা-ছেড়া বা ক্ষত হতে ইনফেকশন হওয়ার হাত থেকে দূরে রাখে।

৯. ক্যান্সার মুক্ত: কিসমিসের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেহের কোষগুলোকে ফ্রি র‌্যাডিক্যাল ড্যামেজের হাত থেকে রক্ষা করে এবং ক্যান্সারের কোষ উৎপন্ন হওয়ায় বাধা প্রদান করে। কিসমিসে আরও রয়েছে ক্যাটেচিন, যা পলিফেনলিক অ্যাসিড। এটি ক্যান্সার মুক্ত রাখতে সাহায্য করে। খাবারে প্রচুর পরিমাণ আঁশ থাকলে কোলোরেক্টারাল ক্যান্সার ঝুঁকি কমে যায়। এক টেবিল চামচ কিসমিসে ১ গ্রাম পরিমাণ আঁশ থাকে। সুতরাং কিসমিসের আঁশ ক্যান্সারের ঝুঁকি একেবারে কমিয়ে দেয়।

১০.দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধিকরণ: রক্তে ভিটামিন এ, এ-বিটা ক্যারোটিন এবং এ-ক্যারোটিনয়েড থাকে। কিসমিস এন্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করতে পারে। যা চোখের ফ্রি-রেডিকল দূর করতে সক্ষম। কিসমিস খেলে সহজে শরীরে বয়সের ছাপ পড়ে না। দৃষ্টি শক্তি হ্রাস ও চোখে ছানি পড়ে না। পাশাপাশি পেশী শক্তি হ্রাস পায় না। কিসমিস চোখের জন্য খুব উপকারি।

১১.দাঁতের জন্য উপকারি : কিসমিসে থাকা অলিয়ানলিক অ্যাসিড দাঁতের ক্ষয় আটকায়, দাঁতে ফুটো হওয়া ও দাঁত ভেঙে যাওয়া বন্ধ করে, সেই সঙ্গে দাঁতকে দেয় সব রকমের সুরক্ষা। মেরে ফেলে স্ত্রেপ্টোকক্কাস মিউটানস ও পরফাইরমোনাস জিঞ্জিভালিস নামের দুটি দাঁত ও মাড়ির জীবাণুকে। আর এর ক্যালসিয়াম দাঁতের এনামেলের ক্ষয় রোধ করে দাঁতকে করে তোলে কঠিন। শুনতে আশ্চর্য লাগতে পারে। কিন্তু এটা প্রমাণিত যে কিসমিস খাওয়ার সময় দাঁতে লেগে গেলে তা আসলে দাঁতের পক্ষে ভালো। এতে থাকা অলিয়ানলিক অ্যাসিড যতক্ষন দাঁতের সংস্পর্শে থাকে, ততক্ষণ প্রত্যক্ষ ভাবে রোধ করে জীবাণুর আক্রমণ। আর এই কাজে সাহায্য করে সঙ্গে উপস্থিত বোরনও।

আরও পড়ুনঃ   নিয়মিত তোকমা পানের উপকারিতা জানেন কি?

১২.হাড় শক্ত করে : কিসমিসে থাকে ক্যালসিয়াম ও বোরন। সবাই জানেন ক্যালসিয়াম হাড়ের গঠনে প্রধান উপাদান। আর বোরন ক্যালসিয়ামের আত্তীকরণ ও হাড় গঠনে কার্যকরী ভূমিকা নেয়। একটা বয়সের পর মেয়েদের ঋতু বন্ধ হওয়ার পরে যাতে অস্টিওপোরোসিস বা হাড়ের ক্ষয় না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখে কিসমিস। তাছাড়া এতে উপস্থিত পটাশিয়াম হাড় শক্ত করতে ও হাড়ের বৃদ্ধিতেও কাজ আসে।

সতর্কবার্তা : বেশি মাত্রায় কিসমিস খেলে মোটা হয়ে যেতে পারেন কিন্তু। কারণ এতে থাকে প্রচুর ক্যালরি। সেই সঙ্গে বেড়ে যায় সুগার, হৃদ রোগ, এমনকি যকৃতের ক্যান্সারের আশঙ্কাও। তাই বেশি মাত্রায় কিসমিস খাওয়া একেবারেই উচিত নয়।

কিশমিশে ৯টি উপকার জেনে নিন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

15 + two =