কলা গাছের প্রতিটা অংশই পুষ্টিকর। কচি কলাপাতা হজমে সাহায্য করে, কলার ফুল মোচা ডায়াবেটিসের জন্য অত্যন্ত উপকারি। তেমনই উপকারি কলা গাছের কান্ড, থোড়ও। ফলন্ত কলা গাছের কাণ্ডের মজ্জা, যা কলার থোড় হিসেবে পরিচিত। অনেক এলাকায় একে ভাধাইল বা কাঞ্জাইলও বলে।
কলা খাবার হিসেবে উপাদেয় আর পুষ্টিগুণে ভরপুর। কলাগাছের প্রতিটি অংশ ছোটো-বড়ো সবার জন্য খুব ভালো। কলার মোচা ও থোড় কলার মতোই পুষ্টিগুণে ভরপুর।
স্বাস্থ্যবিষয়ক এক ওয়েবসাইটের দেওয়া তথ্য মতে কলাপাতা হজমে উপকারী, কলাতে থাকে প্রচুর পটাশিয়াম ও বিভিন্ন ভিটামিন, কলাগাছের ফুল ডায়বেটিস রোগীদের জন্য বিশেষ উপকারী। আর কলার থোড়ে রয়েছে নানান উপকার।
হজম সহায়ক ও বিষনাশক: কলার থোড়ের শরবত শরীর থেকে বিভিন্ন বিষাক্ত উপাদান দূর করতে সাহায্য করে। মুত্রবর্ধক এই খাবার শরীরকে ভেতর থেকে পরিষ্কার করার জন্য আদর্শ। নিয়মিত অন্ত্র থেকে মল অপসারণ সহজ করতে এবং অন্ত্রে প্রয়োজনীয় ভোজ্য-আঁশ সরবরাহের মাধ্যমে হজমেও সাহায্য করে। থোড়ের রস হজমে সাহায্য করে। পোট পরিষ্কার রাখে। বাচ্চা কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগলে চোখ বুজে রোজ থোড় খাওয়ান। সমস্যা কমবে। থোড় হজমে সাহায্য করে। শরীর থেকে টক্সিন দূর করে পেট পরিষ্কার রাখে।
বৃক্কে পাথর ও মুত্রনালীর প্রদাহের চিকিৎসায়: কলার থোড়ের শরবতের সঙ্গে এলাচ মিশিয়ে পান করলে তা মুত্রথলিকে আরাম দেয় এবং বৃক্কে পাথর জমা রোধ করে। কলার থোড়ের শরবতে লেবুর রস মিশিয়ে পান করলেও বৃক্কে পাথর হওয়ার ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব। মুত্রনালীর প্রদাহজনীত ব্যথা ও অস্বস্তি দূর করতেও এই শরবত উপকারী।
ওজন কমাতে: থোড়ে থাকা আঁশ শরীরের কোষে জমে থাকা শর্করা ও চর্বি নিঃসরণ প্রক্রিয়াকে মন্থর করে। এটি বিপাকক্রিয়া উন্নত করে এবং এতে ক্যালরির পরিমাণও বেশ কম।
হিমোগ্লোবিন বাড়ায়, কোলেস্টেরল কমায়ঃথোড়ের মধ্যে থাকা ভিটামিন বি ৬ আর আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়ায়। একইভাবে এর মধ্যে থাকা পটাশিয়াম কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে। তাই কোলেস্টেরল ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এটি বেশ উপকারী।
অ্যাসিডিটি ও গ্যাসের সমস্যা তাড়াতে: নিয়মিত অ্যাসিডিটির সমস্যায় ভুগলে আপনার উচিত কলার থোড়ের শরবত খাওয়া যা শরীরে অ্যাসিডের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে, বজায় রাখে ভারসাম্য। বুক জ্বালাপোড়া, অস্বস্তি ও পেটব্যথা সারাতেও এটি বেশ উপকারী। সারাক্ষণ জাংক ফুড খাওয়ার ফলে আজকাল ছোটো-বড়ো সবাই অম্বলে ভোগে। এই কষ্ট কমাতে চাইলে সকালে খালিপেটে অবশ্যই থোড়ের রস খেতে হবে।
গলব্লাডার পরিষ্কার, কিডনি স্টোনমুক্তঃ নিয়মিত থোড়ের রসে এলাচগুঁড়ো মিশিয়ে খেলে গলব্লাডার পরিষ্কার থাকে। বাচ্চার ইউরিনের সমস্যা থাকলে থোড়ের রসে কয়েকফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে খাওয়ান। ইউরিন পরিষ্কার হওয়ার পাশাপাশি কখনও কিডনিতে স্টোন হবে না।
ফ্যাট ঝরায়, সুগার কমায়ঃ থোড় ফাইবারে সমৃদ্ধ। এই উপাদান ফ্যাট এবং সুগার দুই শত্রুকেই নিয়ন্ত্রণে রাখে।
আজ কলার কান্ড থোড়ের কিছু পুষ্টিগুণ নিয়ে অর্থসূচকের আয়োজন-
- থোড়ের রস ও এলাচ মিশিয়ে গেলে তা ব্লাডারের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
- কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মেশালে কিডনি স্টোনের সমস্যা থেকেও রেহাই দিতে পারে থোড়ের রস।
- প্রচুর পরিমাণ ফাইবার থাকার কারণে থোড় শরীরের কোষ থেকে ফ্যাট ও শর্করা ঝরাতে সাহায্য করে। মেটাবলিজমেও সাহায্য করে।
কলার মোচার পুষ্টিগুণ ও ঔষধিগুণ