কলপ ছাড়াই সাদা চুল কালো করার ১৪টি কার্যকরী উপায়

0
20101
সাদা চুল কালো করার উপায়

প্রবীণ বয়সে হলে চুল পাকা স্বাভাবিক একটি ব্যাপার হলেও নবীন বয়সেই চুল পাকা চিন্তার বিষয়। বর্তমান সময়ে অনেক কম বয়সেই মানুষের চুল পাকার প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। মূলত যারা বেশিরভাগ সময় টেনশনে ভোগে, তারা কিন্তু খুব অল্প বয়সে চুল পাকিয়ে বসে থাকে। তবে বর্তমানে পারিপার্শ্বিক পরিবেশ এবং শারীরিক সমস্যা এই দুটি কারণেই কম বয়সে অনেকেরই চুল সাদা হয়ে যায়। আমাদের শরীরে ভিটামিন বি ১২ এর অভাব হলে বা থাইরয়েড গ্ল্যান্ড এর অসমক্ষরণ অকালেই আমাদের চুল সাদা করে দেয়। এছাড়া অতিরিক্ত স্ট্রেস, অতিরিক্ত ধুম্রপান, হেরিডিটি, এনিমিয়া, অপুষ্টি ইত্যাদি কারণে অকালেই আমাদের চুল সাদা হয়ে যাওয়ার সমস্যাটি হয়।

কম বয়সে চুল পাকার একটা অন্যতম কারণ হল আমাদের শরীরে জিন বা বংশগতির প্রভাব। তাছাড়া খাবারদাবারের ভেজাল ও পরিবেশগত দূষণসহ অতিরিক্ত মানসিক চাপ, ধূমপান, কম ঘুম, চুলের যত্ন না নেওয়া ইত্যাদি নানা সমস্যার কারণেও কম বয়সে চুল পাকা শুরু করে।

মুলত চুলের রং নির্ভর করে বিশেষ হরমোন মেলানিনের ওপর। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের মেলানিন তৈরির ক্ষমতা কমে আসে বলেই বুড়ো বয়সে চুল পাকে। সাদা চুলের রং পরিবর্তন করার জন্য বাজারে নানা রকমের হেয়ার কালার পাওয়া যায়। যেগুলি অনেক সহজেই সাদা চুল আড়াল করে দিতে পারে। তবে এতে মিশ্রিত রাসায়নিক অনেক সময় আমাদের চুল রুক্ষ করে তলে এবং এর ফলে চুল পরতে শুরু করে।

আসুন জেনে নেওয়া যাক চুল পাকা থেকে মুক্তি পাবার ১৩টি কার্যকরী ঘরোয়া উপায়-

১) কারি পাতা :

কারি পাতা যেমন খাওয়ার জন্য ভালো, তেমনই চুলের গুণগত মান বাড়ায়। চলুকে বেশি কালো করতে সাহায্য করে। এক চামচ নারকেল তেলে কিছুটা কারি পাতা দিয়ে ফুটিয়ে নিতে হবে। ভালো করে চুলে ম্যাসাজ করুন। ঘণ্টাখানেক রাখার পরে ধুয়ে ফেলুন।

২) আমলকি:

চুলের বিভিন্ন সমস্যায় আমলকীর উপকারিতা বলার অপেক্ষা রাখে না।  চুল পড়া নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি, চুল কালো করতেও এটি সমান উপকারী।

উপকরণ

১ থেকে ২ টো আমলকী ও একটু নারকেল তেল

পদ্ধতি

প্রথমে আমলকী টুকরো করে নিন। এবার শুকিয়ে নিন। এবার নারকেল তেলের সঙ্গে শুকনো আমলকী বা আমলকী গুঁড়ো ভালো করে ফুটিয়ে নিন। এবার এই তেলটি পুরো চুলে লাগান। ২ ঘণ্টা রাখুন। সারারাত রাখতে পারলে আরও ভালো।  সপ্তাহে দুবার করুন।

অথবা একটি পাত্রে নারকেল তেল নিন। এরসাথে শুকনো আমলকি বা আমলকির গুঁড়ো দিয়ে জ্বাল দিন। ঠাণ্ডা হয়ে গেলে এই তেলটি চুলে ব্যবহার করুন। সারা রাত এভাবে রাখুন। এটি সপ্তাহে একবার বা দুইবার ব্যবহার করুন। এছাড়া এক টেবিল চামচ আমলকির পেস্ট এবং লেবুর রস মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিন। এটি চুলে ভালো করে ম্যাসাজ করুন। এভাবে সারা রাত রাখুন। পরের দিন শ্যাম্পু করে ফেলুন।

৩) লেবুর রস এবং আমলকীর পেষ্ট:
চুল পাকা রোধ করতে আমলকীর জুড়িঁ নেই। ভিটামিন সি আর অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ আমলকী চুলের পাকা রোধ করার সাথে সাথে চুলের গোঁড়াও মজবুত করে থাকে। আমলকী থেঁতলে নিয়ে হালকা করে বেটে নিন, এর সাথে লেবুর রস মিশিয়ে পেষ্ট তৈরি করুন। এইবার এই পেষ্ট চুলের গোড়ায় ঘষে ঘষে মাখুন। চাইলে পাকা চুলেও লাগাতে পারেন। ১৫-২০ মিনিট রেখে দিয়ে বেশি করে পানি দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলুন। দ্রুত ফল পেতে চাইলে প্রতিদিন ব্যবহার করুন।

আরও পড়ুনঃ   তেলে তাজা চুল

৪) পেঁয়াজে:

পেঁয়াজ

নতুন চুল গজাতে পেঁয়াজ সাহায্য করে এটা আমরা অনেকেই জানি। কিন্তু সেই সঙ্গে চুল কালো করার ক্ষেত্রেও পেঁয়াজের ভূমিকা রয়েছে এটা কি জানেন? দেখে নিন।

 উপকরণ

৩ থেকে ৪ চামচ পেঁয়াজের রস ও ১ চামচ লেবুর রস।

পদ্ধতি

 একটা বড় পেঁয়াজ কেটে রস করে নিন। পেঁয়াজের রসের সঙ্গে বড় চামচের এক চামচ লেবুর রস মেশান। এবার এটি স্ক্যাল্পে লাগান। এক ঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে তিনবার লাগান কাজ হবে। এটা নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে, সেই সঙ্গে চুল কালোও করবে।
অথবা নতুন চুল গোজাতে,চুল মুজবুত করতে পেঁয়াজের ব্যবহার হয়ে আসছে সেই আদিকাল থেকে। চুল পাকা রোধতে এমন কি পাকা চুল কালো করতেও পেঁয়াজের রস অনেক উপকারী।মাথায় পেয়াজের ব্যবহার আমাদের চুলকে অনেক বয়স পর্যন্ত কালো রাখতে সক্ষম। পেঁয়াজ বেটে পেষ্ট করে নিন। চুলের গোড়ায় খুব ভালভাবে ঘষে ঘষে লাগান। পেষ্ট শুকানোর পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। এটি সপ্তাহে একদিন করতে পারেন। তবে প্রতিদিন করলে দ্রুত ফল পাবেন।

অথবা  তিন চামচ পেঁয়াজের রস ও দুই চামচ লেবুর রস ভালো করে মিশিয়ে নিন। তালুতে ভালো করে লাগান। ৩০ মিনিট এভাবে রাখার পরে শ্যাম্পু দিয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ৩ থেকে ৪ বার ব্যবহার করতে পারলে ভালো।

অথবা একট মাঝারি মাপের পেয়াজ খোসা ছাড়িয়ে মিক্সিতে ২-৩ মিনিট মত বেটে রস বানিয়ে নিন। এবার একটি নরম কাপড়ে এই পেস্টটি ছেঁকে নিন। এবার এই ছেকে নেওয়া অংশটি মাথায় ভালো করে মেখে ১ ঘন্টা পর শ্যাম্পু করে নিন।

৫) নারকেলের তেল এবং লেবুর রস:
নারকেল তেলের সাথে লেবুর রস মেশান। আঙুলের ডগায় তেল নিয়ে ঘষে ঘষে চুলের গোড়ায় ম্যাসেজ করুন। সাদা চুল কালো করতে নারকেল তেল আর লেবুর রস খুব ভাল একটি উপায়। সপ্তাহে ২/৩ বার আর সম্ভব হলে প্রতিদিনই ব্যবহার করতে পারেন। প্রতিদিন ব্যবহারে চুল পাকার সম্ভাবনাও কমে যায় অনেকখানি।

৬) গাজরের রস:
খাবারদাবারের মেনুতে নিয়মিত রাখুন গাজরের রস। প্রতিদিন ১ গ্লাস গাজরের রস পান করলে চুল পাকার সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়। গাজরের রস সরাসরি চুলে লাগানোর চেয়ে মুখে খাওয়াই বেশি কার্যকরী।

৭) তিলের তেল এবং বাদামের তেল:

চুল খুব তাড়াতাড়ি পেকে যাচ্ছে? তাহলে ব্যবহার করুন তিল। তিল চুল পাকা রোধ করতে সাহায্য করে।

উপকরণ

১ চামচ তিল তেল ও ১ চামচ বাদাম তেল

আরও পড়ুনঃ   চুলের যত্নে মেথির ব্যবহার

পদ্ধতি

তিল তেল ও বাদাম তেল মিশিয়ে গরম করুন। ঠাণ্ডা হলে মাথার স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করুন। একঘণ্টা রেখে দিন। সারারাত রাখতে পারলে আরও ভালো। সপ্তাহে দুদিন করুন। চুল পেকে যাবার সমস্যা অনেকটাই কমবে।

অথবা তিলের তেল এবং বাদামের তেল চুল পাকা কমাতে কার্যকর। এই দুই রকমের তেলের মিশ্রণ চুল পাকা রোধ করে। বাদামের তেলে তিলের বীজ দিয়ে পাঁচ-সাত মিনিট ধরে গরম করুন। ঠান্ডা হয়ে যাওয়ার পরে চুলের গোড়ায় ঘষে ঘষে সারা মাথায় মাখুন। ঘণ্টা খানেক রেখে ধুয়ে ফেলুন। রাতভর মেখে রেখে পরদিনও ধুতে পারেন।

৮) চা-পাতা :

চা পাতা সাদা চুল কালো করে খুব সহজেই। ২-৩ বড় চামচ চা পাতা জলে ফুটিয়ে নিন। এবার ছাকনি দিয়ে চা পাতা ও চায়ের জল আলাদা করে নিন। ঠান্ডা হলে চা পাতা ফোটানো জল চুলে ভালো করে লাগিয়ে নিন। ২ ঘন্টা পর ঠান্ডা জল দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলুন। শ্যাম্পু না করাই ভালো। এটি আপনি সপ্তাহে দু থেকে তিন বার চুলে লাগাতে পারেন ভালো ফল পাওয়ার জন্য। স্থায়ীভাবে চুল কালো হবে না কিন্তু দীর্ঘ সময়ের জন্য চুল কালো থাকবে।

৯। কারিপাতা জবাফুল ও নারকেল তেল

জবা ফুল ও কারিপাতা দুটি ভিটামিন পুষ্ট যা আমাদের চুলের জন্য উপকারী। এটি আমাদের চুলের স্বাভাবিক কালো রংকে সাদা হতে দেয়না বিশেষ করে যাদের চুল খুব অল্প বয়সেই সাদা হয়ে যায় তাদের জন্য এই হেয়ার প্যাকটি খুব ভালো। কয়েকটি জবা ফুলেরপাপড়ি ও কারিপাতা নারকেল তেলে সেদ্ধ করে নিন। ঠান্ডা হয়ে গেলে ছেকে নিন। তেলটি মাথার স্কালপে ভালো করে মালিশ করুন। ৪০-৪৫ মিনিট পর শ্যাম্পু করে মাথা ধুয়ে ফেলুন। এই তেলের নিয়মিত ব্যবহার মাথার আমাদের চুলকে সাদা হওয়া থেকে রক্ষা করে ও চুল ঘন কালো উজ্জল করে তোলে।

১০।মেথি ও নারকেল তেল

মেথিতে বর্তমান অ্যামিনো অ্যাসিড, ও লিকিথিন আমাদের চুল সাদা হওয়াকে কমিয়ে দিতে সক্ষম। এছাড়া নারকেল তেলে ভিটামিন, মিনারেলস আমাদের চুলের সদা হওয়াকে আটকাতে সক্ষম। নারকেল তেল গরম করে তাতে মেথি দানা দিয়ে ১০ মিনিট ফুটিয়ে নিন। এবার উষ্ণ গরম অবস্থায় মেথি ছেঁকে নিয়ে স্কাল্প ও চুলের গোঁড়ায় ভালো করে মালিশ করুন। রাতে ঘুমানোর আগে মালিশ করে পরদিন সকালে উঠে শ্যাম্পু করে নিলে সব থেকে ভালো ফল পাওয়া যাবে।

১১। ব্ল্যাক কফি:

দ্রুত সাদা চুল কালো করতে চাইলে ব্ল্যাক কফি অতুলনীয়। তরল ব্ল্যাক কফি দিয়ে চুলের গোঁড়া থেকে আগা পর্যন্ত ধুয়ে নিন। এটি স্থায়ীভাবে চুল কালো না করলেও কিছু সময়ের জন্য চুল কালো করে থাকবে।

১২।মেহেদি/হেনা:

ঘরোয়া উপায়ে সাদা চুল কালো করার সবথেকে ভালো উপায় হলো হেনা। হেনার সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক রং। এতে চুলের কোনরকম ক্ষতির সম্ভাবনা থাকেনা। এটি খুব সহজেই পাকা চুলকে আড়াল করে। হেনা পাউডার আগের দিন রাতে অল্প কফির সাথে গরম জলে ভিজিয়ে পেস্ট মত বানিয়ে রাখুন। সকালে এর সাথে দই, ১ চামচ ভিনিগার ও ১ চামচ লেবুর রস মিশিয়ে ভালো করে চুলে লাগিয়ে ১-২ ঘন্টা পর ভালো করে মাথা ধুয়ে ফেলুন। এরপর মাথায় অল্প তেল মেখে পরের দিন শ্যাম্পু করে নিন। চুলের রং দীর্ঘস্থায়ী হবে।

আরও পড়ুনঃ   কীভাবে মাথায় পেঁয়াজের রস ব্যবহার করবেন?

১৩। আমলকি ও হেনা

আমলকি আমাদের চুলের জন্য অত্যন্ত ভালো। চুল ভালো করার জন্য যে সমস্ত হারবাল অসুধ ব্যবহার করা হয় তার বেশির ভাগেরই একটি প্রধান উপাদান হলো আমলকি। ঘরোয়া উপায়ে চুল কালো করার জন্য আমলকি ও হেনার এই হেয়ার প্যাকটি অত্যন্ত কার্যকরী। হেনা পাউডার গরম জলে ভিজিয়ে পেস্ট মত বানিয়ে নিন। এবার এর সাথে আমলকি পাউডার ও অল্প কফি মিশিয়ে মিশ্রণটি ভালো করে চুলে লাগিয়ে ১ থেকে ১.১/২ ঘন্টা পর চুল ভালো করে শ্যাম্পু করে ধুয়ে নিন।

১৪।আমলকী ও মেথি

আমলকীতে রয়েছে চুল কালো করার গুণ। আর তার সাথে মেথি যোগ হলে তো কোনো কথাই নেই। চুল পড়াও যেমন কমবে, তেমনি চুল কালোও হবে।

উপকরণ

১ চামচ আমলকী পেস্ট ও ১ চামচ মেথি পেস্ট। চাইলে গুঁড়োও একই পরিমাণে ব্যবহার করতে পারেন।

পদ্ধতি

দুটো উপকরণ খুব ভালো ভাবে মিশিয়ে নিন। পুরো চুলে লাগিয়ে রাখুন আধঘণ্টা। তারপর শ্যাম্পু করে ফেলুন। সপ্তাহে তিনদিন করুন ভালো ফল পাবেন।

চুল কালো করতে বাইরের প্রোডাক্ট ব্যবহার করার পরিবর্তে ব্যবহার করুন, এই প্রাকৃতিক উপাদানগুলি। যা চুলের কোন ক্ষতি না করে সমস্যার সমাধান করবে। আর শুধু চুল কালোই নয়, চুল মজবুতও হবে। তাহলে হেয়ার ডাই কিনে আনার পরিবর্তে, বাড়িতে বসেই আজ থেকে শুরু করে দিন চুল কালো করার অভিযান।

এসবের পাশাপাশি নিয়মিতভাবে চুলে হালকা গরম সরিষা বা নারকেল তেল মাখুন। তেল মাখার সময় মাথার তালুটা মালিশ করার মতো করে ঘষে ঘষে মাখবেন। অকালে চুল পেকে যাওয়া ঠেকাতে এটা উপকারী। এ ছাড়া খাবারদাবারে যত্নবান হওয়ার পাশাপাশি প্রতিদিনই প্রচুর পানি পান করা প্রয়োজন। শরীরে পানির চাহিদা মিটিয়ে ঠিকঠাক পানি খেলে শরীর থেকে টক্সিন দূর হয়। অকালে চুল পাকার জন্য পরিবেশগত দূষণের সঙ্গে শরীরে জমা হওয়া নানা দূষিত উপাদান দায়ী।

একবার চুল পাকা শুরু করলে তা ঠেকানো মুশকিল। সুতরাং কলপ না লাগিয়ে কিংবা বাজারের প্রসাধনী ব্যবহার না করেই, পাকা চুল কালো করার উপরের ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করে দেখতে পারেন। এই উপায়গুলো আপনার চুলকে কালো করতে সাহায্য করবে। তবে অনেক সময় অনেক গুরুতর রোগের কারণে ও মাথার চুল সাদা হয়ে যেতে পারে সেক্ষেত্রে এটি অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ্র নেওয়া উচিত।

আরও পড়ুনঃ আলু দিয়ে সাদা চুলকে কালো করার উপায় জেনে নিন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

16 + twelve =