ইলিশ মাছের গুণাগুণ

0
1354
ইলিশ মাছের গুণ

 ইলিশ মাছ বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অনেক দেশেই একটি জনপ্রিয় মাছ। সমুদ্রে ও নদীতে থাকা এই মাছ যেমন সুস্বাদু, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর।

১০০ গ্রাম ইলিশে প্রায় ২১ দশমিক ৮ গ্রাম প্রোটিনের পাশাপাশি রয়েছে উচ্চ পরিমাণ ওমেগা তিন ফ্যাটি এসিড, নায়সিন, ট্রিপ্টোফ্যান, ভিটামিন, বি ১২, সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামসহ অন্যান্য ভিটামিন ও মিনারেলস।

তাহলে জেনে নিন ইলিশ মাছের কিছু গুণের কথা:-

১. সামুদ্রিক মাছ হিসেবে ইলিশে সম্পৃক্ত চর্বি কম থাকে। এটি হার্টের জন্য উপকারী। সপ্তাহে একবার ইলিশ খাওয়া হার্টের জন্য ভালো।

২. ইলিশ মাছ রক্তনালির স্বাস্থ্য রক্ষায় ভালো। এটি হাড়ের জন্য উপকারী।

৩. ইলিশের ভিটামিন এ চোখের সুস্থতা রক্ষায় সাহায্য করে।

৪. ইলিশ মাছের মাথা ও মাছের অংশে রয়েছে পর্যাপ্ত মিনারেল। এটি শিশু স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। শ্বাসনালি ও থাইরয়েড গ্রন্থির সুরক্ষায় এই পুষ্টি উপাদান কাজ করে।

৫. ত্বকের সৌন্দর্য রক্ষায় ও রোদ থেকে ত্বকের ক্ষতি হওয়া প্রতিরোধে ইলিশ মাছের ওমেগা তিন সাহায্য করে।

তবে ইলিশের এই স্বাস্থ্যগুণ তখনই কাজে লাগবে, যখন এই রান্না সঠিক উপায়ে হবে:-

ইলিশ মাছ তেলে ভেজে খেলে এর মধ্যে ফ্যাট ও ক্যালরির মাত্রা অনেক বেড়ে যায়। তখন উপকার কম হয়। ভাঁপা ইলিশ, মিষ্টিকুমড়ায় ইলিশ, ইলিশ দিয়ে কাঁচা আমড়া বা টমেটো, কম তেলে রান্না ইলিশ ইত্যাদি অনেক উপকারী মেন্যু। কড়া তেলে ভাজা ইলিশ, ঝলসানো ইলিশ তেমন একটা স্বাস্থ্যকর হয় না। তাই ইলিশের স্বাদ ও পুষ্টি পেতে হলে সঠিক উপায়ে রান্না করা অনেক জরুরি।

তামান্না চৌধুরী

লেখক : প্রধান পুষ্টিবিদ, অ্যাপোলো হাসপাতাল।

আরও কিছু উপকারিতা জানুন :-
* খাদ্যশক্তির উপস্থিতির তুলনায় ইলিশ মাছে রয়েছে সবচেয়ে বেশি খাদ্যশক্তি।

* শরীর গঠন ও স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারে ইলিশ মাছ প্রোটিন ও অত্যাবশ্যকীয় অ্যামিনো এসিড সরবরাহ করে। ফ্যাটি এসিডের জন্য লিপিড (লিনোলিয়েক, লিনোলাইনিক, এরাহিডোনিক) খুবই প্রয়োজনীয় এবং দ্রবণীয় স্নেহজাত ভিটামিনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

আরও পড়ুনঃ   নীলফামারীতে ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণে কেমোথেরাপির চেয়ে ১০ হাজার গুণ শক্তিশালী ফল আবিষ্কার !!

* ইলিশে রয়েছে ভিটামিন এ এবং ডি। ভিটামিন এ রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে এবং ডি শিশুদের রিকেট রোগ থেকে রক্ষা করে।

* ইলিশে থাকা খনিজ, বিশেষ করে ফসফরাস দাঁত এবং ক্যালসিয়াম হাড়ের পুষ্টির জন্য একান্ত অপরিহার্য।

* সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও লৌহ স্বাভাবিক শরীর বৃদ্ধি এবং মানসিক বিকাশের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় উপাদান।

* ওমেগা-৩ নামে এক ধরনের তেল রয়েছে ইলিশে, যা হৃদরোগ প্রতিরোধে দারুণ কার্যকর।

* সম্প্রতি ইংল্যান্ড ফুড স্ট্যান্ডার্ডস এজেন্সির বিজ্ঞানীরা গবেষণায় প্রমাণ পেয়েছেন, ভ্রূণের উপযুক্ত বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ইলিশের তেল অত্যন্ত উপকারী।

* হৃদরোগ কমানোর ক্ষেত্রে ইলিশের তেলের ক্ষমতা অপরিসীম।

সতর্কতা- উচ্চ রক্তচাপ, ইস্কিমিক হৃদরোগ বা সুগারের রোগীদের জন্য ইলিশ মাছ ক্ষতিকর নয়। তবে ইলিশ মাছ খেলে কারো শরীরে অ্যালার্জি বা গ্যাসের উদ্রেক হতে পারে। সেক্ষেত্রে আগে বুঝতে হবে আপনার শরীরে ইলিশ মাছের বিরূপ প্রভাব আছে কিনা। থাকলে এড়িয়ে চলা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

4 × five =