আপনার অঙ্গগুলো যখন ঘুমিয়ে পড়ে তখন কী ঘটে?

0
215
অঙ্গ

একটি পায়ের পাতা, পা, বা বাহুর “ঘুমিয়ে পড়া” আমাদের সকলের কাছেই পরিচিত বটে। এরই ধারাবাহিকতায় একটা সময়ে গিয়ে কিছুটা অবশ হয়ে পড়া অঙ্গকে আমাদের নাড়িয়ে জাগিয়ে তুলতে হয়।

আপনি হয়তো অভ্যাসবশতই পা ক্রস করে বসেন। অথবা সবসময়ই বাহুর ওপরই ঘুমিয়ে পড়েন। যদিও এই ধরনের অনুভূতি অনেক সময় দীর্ঘ সময় ধরে বিরাজ করার কারণে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে তথাপি বেশিরভাগ সময়ই এটি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার তেমন কোনো কারণ নেই।
যখন দেহের কোনো একটি অংশ সাময়িকের জন্য অবশ হয়ে যায় এর কারণ সম্ভবত আপনি সে অংশের স্নায়ুর ওপর অনেক বেশি চাপ প্রয়োগ করেছেন।

স্নায়ুগুলো অনেকটা বৈদ্যুতিক তারের মতো কাজ করে। যেগুলো আপনার মস্তিষ্ক থেকে আপনার দেহ এবং পিঠে সঙ্কেত প্রেরণ করে।
আর যখন কোনো স্নায়ুর ওপর দীর্ঘ সময়কালের জন্য চাপ থাকে এই সঙ্কেতগুলো দক্ষতার সঙ্গে চলাচল করতে পারে না। এটা অনেকটা পায়ের পাতার মোজার মধ্যে একটি গিট দেওয়ার মতো।

এই বিরক্তিকর অবশ অনুভূতির পাশাপাশি একটি স্নায়ুর ওপর চাপ থেকেও পিন এবং সুঁই ফোটার মতো ব্যাথা হতে পারে। চাপ পড়ার পর স্নায়ুগুলো অতি সংবেদনশীল হয়ে পড়ে।

আপনার বাহু এবং পায়ের অনেক স্নায়ু আপনার ত্বকের নিচেই অবস্থান করে। আপনি যদি আপনার কব্জির দিকে তাকান তাহলেই আপনি রগ এবং রক্তনালি দেখতে পাবেন। স্নায়ুগুলোও সেখান দিয়েই প্রবাহিত হয়। ফলে আপনার হাত ও পায়ের কিছু স্নায়ু সত্যিই খুব সহজে সংকুচিত করা সম্ভব। শুধুমাত্র সরলভাবে তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করেই।

নারীদের সচরাচর যে স্নায়ুগুলো প্রভাবিত হয় তার একটি হলো হাঁটুর বাইরের স্নায়ুটি। এর নাম পেরোনিয়াল নার্ভ। এক পায়ের ওপর আরেক পা ক্রস করে বসার ফলে এটা ঘটে।

বাহুতে হেলান দিয়ে বা পায়ের ওপর চাপ দিয়ে বসাটাও সিয়েস্তা নামে দেহের একটি অংশের ওপর চাপ পড়ার কারণ। এটা পুরোপুরি স্বাভাবিক এবং মাত্র ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই চলে যাওয়া উচিৎ। অথবা চাপ সরানোর পর যাওয়ার কথা।

আরও পড়ুনঃ   একসঙ্গে চারটি সুস্থ সন্তানের জন্ম

এর চেয়েও বেশি ভীতিকর একটি অবস্থা হলো যখন আপনি মধ্যরাতে জেগে ওঠার পর আপনার বাহুটিকে পুরোপুরি পক্ষাগাতগ্রস্ত মনে হবে। প্রথমবার যখন আপনার সঙ্গে এটা ঘটবে আপনি হয়তো আতঙ্কিত হয়ে পড়তে পারেন। তবে আতঙ্কিত না হয়ে বরং ঝাঁকি দিন তাহলে কিছুক্ষণ পরই আপনার সংবেদনা ও শক্তি ফিরে আসবে।

তবে আপনি যত বেশি সময় ধরে এর ওপর বসে থাকবেন তত দেরিতেই সংবেদনা ফিরে আসবে।
তবে যতক্ষণ স্নায়ুর কাঠামো এবং স্নায়ুর প্রতিরক্ষা দেয়াল অক্ষত থাকে ততক্ষণ কোনো স্থায়ী ক্ষতি হবে না। তবে কেটে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটেলেই শুধু তখন স্থায়ী কোনো ক্ষতি হতে পারে।

আপনার যদি কখনো কখনো অবশ অনুভূতি হয় এবং কয়েক মিনিটের মধ্যেই তা দূর না হয় এবং প্রায় প্রায়ই এমনটা ঘটে তাহলে দ্রুত ডাক্তার দেখান। আর এটা যদি আপনার বুড়ো আঙ্গুল, তর্জনী, মধ্যমা এবং অনামিকার নিচের অংশে ঘটে তাহলে এটি হতে পারে কারপাল টানেল সিনড্রোম।

কিছু কিছু অবস্থা যেমন ডায়াবেটিস বা ভিটামিন বি ১২ ঘাটতির ফলে আপনি স্নায়বিক সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকবেন বেশি। সুতরাং স্থায়ী কোনো ক্ষয় হওয়ার হাত থেকে বাঁচতে আপনার আগেভাগেই সতর্ক হওয়া উচিৎ। সূত্র: ফক্স নিউজ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

twelve − seven =