আমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ মাংসপেশী ও পর্দা দিয়ে তৈরী দেয়াল দিয়ে ঘেরা থাকে, কোনো কারনে যদি সেই দেয়াল দুর্বল হয়ে যায় এবং তা দিয়ে কোনো অঙ্গ থলের মতো বেরিয়ে আসে তাকে হার্নিয়া (Hernia) বলে। সাধারন অর্থে যদিও সবাই হার্নিয়া শব্দটি শুনলে ধরে নেয় এটা অন্ডকোষেই শুধু হয়, হার্নিয়া কিন্ত কুচকিতে, উরুর কাছে, কোমড়ে, পেটের মাঝ বরাবর, পেটের মধ্যে এমন কি বুকের মধ্যেও হতে পারে। তবে অধিকাংশ হার্নিয়াই কুচকিতে হয় এবং একে ইনগুইনাল (Inguinal) হার্নিয়া বলে। এই হার্নিয়া বড় হতে হতে একসময় অন্ডকোষে চলে যায় এজন্য অনেকেই ভাবে হার্নিয়া বুঝি অন্ডকোষ বড় হয়ে যাওয়ার একটি রোগ।
সব ধরনের হার্নিয়ার একমাত্র চিকিৎসা অপারেশন করে দুর্বল দেয়ালটি সারিয়ে নেয়া। তবে হার্নিয়া খুব ছোটো হলে ওজন কমিয়ে এবং কিছু নিয়ম কানুন মেনে অনেকদিন অপারেশন না করিয়ে থাকা যায়। আবার হার্নিয়া খুব বড় হয়ে গেলেও সাথে সাথে অপারেশন করানো যায়না ওজন কমিয়ে, ডায়াবেটিস বা এই জাতীয় রোগ থাকলে তা নিয়ন্ত্রন করে তবেই তাকে সফল ভাবে সারানো যায়।
ইনগুইনাল হার্নিয়ার ক্ষেত্রে শুধু শরীরের নিচের অংশ অবশ করেই অপারেশন করা হয়। তবে হার্নিয়া খুব বড় হলে বা অন্য স্থানের হার্নিয়ার ক্ষেত্রে অবশ্য রোগীকে অজ্ঞান করে নেয়া হয়। হার্নিয়া সরাসরি বন্ধ করে দেয়া যায় আবার কখনো কখনো কৃত্রিম জালি (Mesh) ব্যবহার করেও এটা বন্ধ করতে হয়।
ল্যাপারোস্কোপি (Laparoscopic surgery) করেও হার্নিয়া সারিয়ে তোলা যায়, এতে রোগীর শরীরে খুব সামান্য দাগ থাকে এবং সে খুব দ্রুত বাড়ি চলে যেতে পারে, তবে এক্ষেত্রে সার্জন কে খুব পারদর্শী হতে হয়।
হার্নিয়ার অপারেশন বড় কোনো অপারেশন নয়, এর ঝুকিও খুব সামান্য। অপারেশনের পরে রোগীর কাশি হলে, কোষ্ঠ কাঠিন্য হলে, পেট ফুলে গেলে, শ্বাস কষ্ট হলে বা ডায়াবেটিস বেড়ে গেলে সাথে সাথে এর চিকিৎসা করাতে হবে অন্যথায় খুব সফল একটা অপারেশন ব্যর্থতায় পর্যবশিত হতে পারে।
-susastho