এই সিজনে তাপমাত্রা উঠা-নামা করছে। ফলে অনেকের রেসপিরেটরি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন বা আরটিআই হচ্ছে। এটি সিজনাল ফ্লু যা ভাইরাস দিয়ে হয়। জ্বর, মাথাব্যথা, শরীর ম্যাজম্যাজ করা, নাক দিয়ে পানি ঝরা, গলাব্যথা, কাশি- এসবই ফ্লুর লক্ষণ। সাধারণত সাধারণ চিকিৎসায় পাঁচ-সাতদিনে ভালো হয়ে যায়। তবে সাতদিনের বেশি এসব লক্ষণ থাকলে সেকেন্ডারি ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন হয়েছে কিনা তা নির্ণয়ের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ প্রয়োজন। ২ বছরের কম বয়সী বাচ্চারা এবং বৃদ্ধরা সিজনাল ফ্লুতে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। এছাড়া যারা ইমিউনোকমপ্রোমাইজড অর্থাৎ দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন অসুখে ভুগছে এবং ওষুধ খাচ্ছে, তারাও ভাইরাল ইনফেকশনে আক্রান্ত হতে পারে। এ ধরনের রোগী হচ্ছে যারা ডায়াবেটিক, ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমা আছে, ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদি বাধাজনিত অসুখ, কিডনি রোগী ইত্যাদি। রেসপিরেটরি ট্র্যাক্ট ইনফেকশনে বাসায় বসেই চিকিৎসা সম্ভব। প্রতিদিন প্রচুর তরল পান করতে হবে এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে- এ দুটো হচ্ছে ভালো হওয়ার প্রধান শর্ত। এরপর সমস্যা অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে। যেমন- জ্বর, মাথাব্যথা, শরীর ম্যাজম্যাজের জন্য প্যারাসিটামল ট্যাবলেট বা সিরাপ যা নির্দিষ্ট ডোজে খেতে হবে এবং কাশি, গলা খুসখুস, সর্দির জন্য সঠিক এন্টিহিস্টামিন জাতীয় ট্যাবলেট বা সিরাপ। ফ্রিজের ঠাণ্ডা যে কোনও জিনিস গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে। তবে জ্বর যদি বেশিমাত্রায় পাঁচ-সাতদিনের বেশি থাকে এবং হলুদ বা পাকা কফ বের হয়, সঙ্গে কাশতে কাশতে বুকব্যথা হয় তবে সঠিক এন্টিবায়োটিক নির্বাচনের জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কখনও ঠাণ্ডা অনুভূত হওয়া বা কখনও গরমের জন্য সিজনাল অ্যাজমা অ্যাটাকও হতে পারে। শ্বাসকষ্ট, কাশতে কাশতে ঘুম থেকে জেগে ওঠা, দমবন্ধ ভাব, গলা বা বুকে কাশির মতো শব্দ হওয়া- এসবই অ্যাজমার লক্ষণ। তাৎক্ষণিক উপশমের জন্য সালাবিউটামল ট্যাবলেট বা ইনহেলার বা নেবুলাইজেশন নিতে হয়, তবে অ্যাজমা প্রতিরোধের জন্য স্টেরয়েড প্রয়োজন হয়। ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ এখনও কমেনি। এ জ্বরের রোগী প্রচুর পাওয়া যাচ্ছে। ডেঙ্গুজ্বর নিয়েও ভয়ের কিছু নেই।
**************************
ডাঃ রাজাশিস চক্রবর্তী
রেসপিরেটরি মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল