সাধারণ কাঁচামরিচের অসাধারণ যত স্বাস্থ্যগুণ!

0
255
কাঁচামরিচ

ঝাল খেতে যারা ভীষণ পছন্দ করেন তাদের জন্য কাঁচামরিচ হলো অন্যতম পছন্দের একটি খাদ্য উপাদান। খুব একটা ঝাল খাবার খেতে না পারলেও প্রায় সকল ধরণের মশলাযুক্ত খাবারেই কাঁচামরিচ ব্যবহার করা হয়ে থাকে বলে কমবেশী সকলেরই তা খাওয়া হয়। ভর্তা-ভাজি থেকে শুরু করে হেন কোন ঝাল-মশলাযুক্ত খাবার নেই যে রান্নাতে কাঁচামরিচ ব্যবহার করা হয় না। বহুল পরিচিত ও ব্যবহৃত এই খাদ্য উপাদানটি প্রতিদিন খাওয়া হলেও এর উপকারিতা সম্পর্কে সঠিকভাবে আমরা ক’জন জানি? আজকের ফিচার থেকে জেনে নিন কাঁচামরিচের চমকপ্রদ কিছু স্বাস্থ্যগুণ এর কথা।

ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে

কাঁচামরিচে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা শরীরে ‘দ্বাররক্ষী’ হিসেবে কাজ করে থাকে। তারা শরীর ‘ফ্রি-র‍্যাডিকেল ড্যামেজ’ এর বিরুদ্ধে কাজ করে প্রাকৃতিকভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে। একইসাথে কাঁচামরিচ বয়স বাড়ার প্রক্রিয়াকে ধীর করতে সাহায্য করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে

কাঁচামরিচে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি। খেয়াল করে দেখবেন, কাঁচামরিচ খাওয়ার ফলে অনেক সময়ে বন্ধ নাক খুলে যায়। কাঁচামরিচে থাকা এই ভিটামিন-সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে খুব দারুনভাবে কাজ করে।

ত্বকের জন্য দারুণ উপকারী

কাঁচামরিচে ভিটামিন-সি এর পাশাপাশি রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-ই। যা ত্বকের প্রাকৃতিক তেল উৎপন্ন করতে সাহায্য করে থাকে বলে ত্বক অনেক সুস্থ থাকে।

জিরো ক্যালোরি

খুবই মজার ব্যাপার হচ্ছে, কাঁচামরিচে কোন ক্যালোরি নেই। অর্থাৎ একদম শূন্য ক্যালোরিযুক্ত একটি খাদ্য উপাদান হলো কাঁচামরিচ। আরো দারুণ তথ্য হলো, কাঁচামরিচ খাওয়ার পরে শরীরের মেটাবলিজম প্রায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়! তাই আপনি যদি ডায়েটে থাকেন, তবে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় বেশী করে কাঁচামরিচ যোগ করার চেষ্টা করুন।

রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে

যাদের ডায়বেটিসের সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য কাঁচামরিচ অন্যতম একটি প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান। কাঁচামরিচ রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করে। তবে এমনটা মনে করবেন না যে, অতিরিক্ত মিষ্টি ও চিনিযুক্ত খাবার খাওয়ার পরে কাঁচামরিচ খেলে সাথে সাথে কাজ করবে!

আরও পড়ুনঃ   মিষ্টি কুমড়ার পুষ্টিগুণ

খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে

কাঁচামরিচে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দিলে, সেক্ষেত্রে কাঁচামরিচ খেলে ভালো ফলাফল পাওয়া সম্ভব হয়। এছাড়াও, সাধারণ সময়ে খাদ্য দ্রুত পরিপাক করতে সাহায্য করে বলে নিয়মিত কাঁচামরিচ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা প্রয়োজন।

কাঁচামরিচ খাওয়া মানে মনমেজাজ ভালো

ঝাল কোন খাবার বিশেষ করে কাঁচামরিচ খাওয়ার ফলে মস্তিষ্ক থেকে ‘এন্ডরফিনস’ নিঃসৃত হয়, যা মনমেজাজ ভালো ও চাঙ্গা রাখতে সাহায্য করে থাকে। যার ফলে কাঁচামরিচ খাওয়ার পরে আপনি খুব ফুরফুরে ও আনন্দিত বোধ করবেন। বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত।

ত্বকের ইনফেকশনের সমস্যায় কাজ করে থাকে

কাঁচামরিচে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকার ফলে, শরীরের যেকোন অংশে ত্বকের ইনফেকশন হওয়া থেকে এটি প্রতিরোধ করে থাকে।

রক্তপাত বন্ধে সাহায্য করে

পূর্বে বলা হয়েছে যে, কাঁচামরিচে রয়েছে ভিটামিন- ই ও ভিটামিন সি। একইসাথে কাঁচামরিচে রয়েছে আরো একটি ভিটামিন, ভিটামিন-কে। যেটা অস্টিওপোরোসিসের সমস্যায় অথবা শরীরের কোন অংশ কেটে গেলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের সমস্যায় খুব ভালো কাজ করে থাকে।

আয়রনপূর্ণ কাঁচামরিচ

যাদের শরীরে আয়রনের ঘাটতি রয়েছে তাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় বেশী করে কাঁচামরিচ যোগ করা জরুরি। কারণ প্রাকৃতিক খাদ্য উপাদান হিসেবে কাঁচামরিচে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ আয়রন।

চোখের জন্য দারুণ উপকারী

ভিটামিন-সি এর পাশাপাশি কাঁচামরিচে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে বেটা-ক্যারোটিন। যা সুস্থ চোখের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। তবে কাঁচামরিচের ভিটামিন-সি সঠিকভাবে পাওয়ার জন্য কাঁচামরিচ সংরক্ষণ করতে হবে ঠাণ্ডা ও অন্ধকার স্থানে। অতিরিক্ত আলো ও গরমে কাঁচামরিচ তার গুনাগুণ হারিয়ে ফেলে।

প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় শুধুমাত্র স্বাদ বৃদ্ধির জন্যেই নয়, নিজেকে সুস্থ রাখার জন্যেও এখন থেকে বেশী করে কাঁচামরিচ যোগ করুন। কাঁচামরিচ খুবই ছোট ও সাধারণ মশলা হলেও, আদতে এটির স্বাস্থ্যগুণ চমৎকার।

সূত্র: Smart Cooky , Boldsky 

 কে এন দেয়া

শুকনো মরিচের উপকারিতা জেনে নিন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

five × three =