সকালে না খেলে কী হয়?

0
218
সকালে না খেলে কী হয়?

অনেকেই সকালের নাস্তাকে এড়িয়ে যান। এটি একেবারেই ভুল।

সকালের নাস্তা আপনার সারাদিনের খাবারকে সুষম করতে অর্থাৎ খাবারের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।

কেননা সুস্বাস্থ্যের জন্য একটি বড় উপায় হলো সকালে সঠিকভাবে, সঠিক পরিমাণে, সঠিক সময়ে নাস্তা খাওয়া। না খেলে যে পাঁচ ক্ষতির কবলে পড়বে আপনার স্বাস্থ্য।

১। হৃদপিণ্ডের জন্য ক্ষতিকর

জামা নামক জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে জানা যায় যে, যে সমস্ত ছেলেরা সকালের নাস্তা বাদ দেন তাদের মধ্যে ২৭ শতাংশের হার্ট অ্যাটাক হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন। এই গবেষণার নেতৃত্ব দেন ড. লিয়া চাহিল, তিনি বলেন, এই ঝুঁকির হার নিয়ে খুব বেশি চিন্তান্বিত হওয়ার কিছু নেই। তবে তিনি এটাও সমর্থন করেন যে, স্বাস্থ্যকর নাস্তা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। যারা সকালের নাস্তা এড়িয়ে যান তাদের উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায় এবং ধমনীতে রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্থ হয়। এর ফলশ্রুতিতে স্ট্রোক ও হতে পারে।

২। টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ পাবলিক হেলথ একটি গবেষণা পরিচালনা করে স্বাস্থ্য ও খাদ্যাভ্যাসের পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে। ৪৬,২৮৯ জন মহিলার উপর এই গবেষণাটি পরিচালনা করা হয় ৬ বছর যাবত। এই গবেষণার ফলাফলটি এসেছে খুবই বিশ্বয়কর। ফলাফল অনুযায়ী, যে সকল মহিলারা নিয়মিত সকালের নাস্তা খান তাদের তুলনায় যারা নাস্তা খান না তাদের টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। আরো খারাপ দিক হচ্ছে, যে সকল কর্মজীবী মহিলারা সকালের নাস্তা বাদ দেন তাদের ৫৪ শতাংশের টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।

৩। ওজন বৃদ্ধি ঘটাতে পারে

আপনি যদি ওজন কমানোর জন্য সকালের নাস্তা বাদ দিতে চান তাহলে আরো একবার চিন্তা করে নিন। সকালের নাস্তা না খাওয়ার নেতিবাচক দিকগুলো নিয়ে একটি গবেষণা পরিচালিত হয়। তাতে দেখা যায় যে, যারা সকালের নাস্তা বাদ দেন তাদের ওজন বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি হয়। সকালের নাস্তা না খেলে চিনি ও চর্বি যুক্ত খাদ্য গ্রহণের উৎসাহ বৃদ্ধি পায়। সেই সাথে তীব্র ক্ষুধা পায় বলে সারাদিনে আপনি যাই পান তাই খেতে থাকেন। ক্ষুধা যত বৃদ্ধি পাবে খাদ্য গ্রহণের পরিমাণও বৃদ্ধি পায়। যা আপনার প্রতিদিনের ক্যালরি গ্রহণের মাত্রাও ছাড়িয়ে যায়। তাই নিয়মিত সকালের নাস্তা বাদ দিলে ওজন কমার বদলে ওজন বৃদ্ধিই পাবে।

আরও পড়ুনঃ   অনেক বয়স পর্যন্ত তারুণ্য ধরে রাখার কৌশল!

৪। মুড ও এনার্জিলেভেল এর উপর বিরূপ প্রভাব পড়ে

১৯৯৯ সালে সাইকোলজিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা নিবন্ধে জানা যায় যে, সকালের নাস্তা এড়িয়ে গেলে মেজাজ ও এনার্জির উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এই গবেষণায় ১৪৪ জন স্বাস্থ্যবান মানুষকে ৩টি গ্রুপে ভাগ করা হয়। একটি দলকে স্বাস্থ্যসম্মত পরিমিত ব্রেকফাস্ট দেয়া হয়, দ্বিতীয় দলকে শুধুমাত্র কফি দেয়া হয় এবং তৃতীয় দলটিকে কোন নাস্তা দেয়া হয়নি। দেখা যায় যে, যে গ্রুপটিকে সকালের নাস্তা দেয়া হয়নি তাদের স্মৃতির দক্ষতা নিম্নতম পর্যায়ে চলে যায় এবং তাদের ক্লান্তিবোধের স্তর উচ্চতর পর্যায়ের হয়। অন্য দুই দলের মধ্যে তেমন তাৎপর্য পূর্ণ কোন পরিবর্তন লক্ষ করা যায়না। ২০১৩ এর আগস্টে “ব্রিটিশ জার্নাল অফ নিউট্রিশন” এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, যখন আপনি নাস্তা না করেন তখন আপনার এনার্জি কমে যায় এবং শারীরিক কর্মক্ষমতার স্তর ও কমতে থাকে।

৫। চুল পড়া বৃদ্ধি করে

খাবারে প্রোটিনের পরিমাণ কম হলে কেরাটিনের স্তরকে প্রভাবিত করে যা চুলের বৃদ্ধিকে প্রতিহত করে এবং চুল পড়া বৃদ্ধি করে। ব্রেকফাস্ট সারা দিনের এমন একটি খাবার যা হেয়ার ফলিকল উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই যদি আপনি উজ্জ্বল ও শক্তিশালী চুল চান তাহলে প্রোটিন সমৃদ্ধ সকালের নাস্তা খান।

সকালের নাস্তা বাদ দিলে আরো যে সমস্যা গুলো হতে পারে : ধীশক্তি কমে যায়, মাথা ব্যথা হতে পারে, বিপাকের উপর প্রভাব পড়ে, হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে, মাইগ্রেন হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়, ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।

সকালের নাস্তা ৮টা থেকে সাড়ে ৮টা বা ৯টার মধ্যে শেষ করতে হবে। সকালের নাস্তায় খেতে হবে অনেক বেশি। এটি সারাদিনের প্রতিটি খাবারের তুলনায় বেশি হবে। সুতরাং সকালের নাস্তা অবশ্যই ঠিক মতো খেয়ে বাড়ি থেকে বের হবেন।

বুকে ব্যথা হয় যেসব কারণে


 ম. উ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

2 × five =