লেটুস পাতার ১৫টি স্বাস্থ্য উপকারিতা

0
880
লেটুস পাতার উপকারিতা

লেটুস পাতা মোটামুটি সবারই পরিচিত। ফাস্টফুড, সালাদে কিংবা রান্নায় এর ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এতে নানা রকম ভিটামিন ছাড়াও রয়েছে একেবারে কম ক্যালরি। লেটুস পাতার বৈজ্ঞানিক নাম লাকটুসা স্যাটিজ এল। লেটুস প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও বিটা ক্যারোটিন থাকার কারণে কোলেস্টেরলের অক্সিডেশনকে বাধা দেয়ার পাশাপাশি এবং তা কমাতে সহায়তা করে। ফলে রক্তের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং হৃৎপিণ্ড ভালো থাকে।

প্রতি ১০০ গ্রাম লেটুসে আছে ১৫ ক্যালোরি, ২৮ মিলিগ্রাম সোডিয়াম, ১৯৪ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম, ২.৯ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ১.৪ গ্রাম প্রোটিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি-৬, ক্যালসিয়াম, আয়রন ও ম্যাগনেসিয়াম। আসুন জেনে নেয়া যাক লেটুস পাতার ১৫টি স্বাস্থ্য উপকারীতা।

১।লেটুসপাতা সোডিয়াম ভিটামিন-বি ওয়ান, বি টু থ্রি শরীরের যে কোনো অঙ্গে পানি জমে যাওয়া রোধ করে। এ পাতায় নিয়মিত খেলে বার্ধক্য আসে দেরিতে ত্বকের বলিরেখাও পড় না। ঠাণ্ডাজনিত অসুখ হাঁচি, কাশি, কফ, হাঁপানি ও ফুসফুসের ইনফেকশন দূর করতে সালাদে প্রতিদিন লেটুসপাতা খেতে পারেন।

 ২। লেটুস পাতায় প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন ভিটামিন আছে যা ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। নিয়মিত লেটুস পাতা খেলে ত্বক ভেতর থেকে পরিষ্কার হয় এবং ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। তাই যাদের ত্বকে বিভিন্ন রকম সমস্যা আছে তাদের জন্য লেটুস পাতা খুবই উপকারী।

৩। লেটুসে প্রচুর পরিমাণে আয়রন আছে। ফলে হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর ক্ষেত্রে লেটুস পাতা একটি উপকারী সবজি। তাই যারা অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতায় ভুগছেন তাদের জন্য লেটুস পাতা হতে পারে একটি আদর্শ খাবার। গর্ভবতী নারীরা কাঁচা লেটুসপাতা খেলে মা ও শিশু উভয়ের শরীরেই রক্তের মাত্রা বাড়ে। চোখের ইনফেকশনজনিত সমস্যা কমায় লেটুসপাতা।

৪। নিউরনদের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে লেটুস পাতার কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আর একবার নিউরনদের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পেলে একদিকে যেমন স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটে, তেমনি অ্যালজাইমার্স মতো ব্রেন ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে। তাই যাদের পরিবারে এই ধরনের মস্তিষ্কঘটিত রোগের ইতিহাস রয়েছে তারা ডায়েটে লেটুস পাতাকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।

আরও পড়ুনঃ   দামী প্রসাধনী নয়, আদাই বাড়াবে আপনার সৌন্দর্য!

৫। লেটুস পাতা ভিটামিন কে এর একটি ভালো উৎস। ভিটামিন কে হাড়ের মেটাবলিজম বাড়ায়। এছাড়াও ভিটামিন কে হাড়ের কোষ গুলোকে সচল রাখে এবং দ্রুত হাড় ক্ষয় হওয়ার থেকে শরীর কে রক্ষা করে।

৬। লেটুসপাতার পুষ্টি উপাদান হাত-পা ফুলে যাওয়া, কিডনির পাথর, কিডনির কার্যহীনতা, মূত্রথলির ইনফেকশন ও কিডনির ব্যথায় লেটুসপাতা উপকারী।

৭। লেটুসপাতা খুশকি কমাতে সাহায্য করে। শ্যাম্পুতে লেটুসপাতা গুঁড়া ব্যবহার করা হয়। রোদে পোড়াভাব দূর করতে লেটুপসাতা থেঁতলে ত্বকে দিলে ত্বকের উপকার হয়।

৮। শরীরকে সুস্থ এবং রোগমুক্ত রাখতে লেটুসপাতার কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। শরীরে যাতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ঘাটতি কোনও সময় না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানদের বের করে দেওয়ার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে তুলতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে লেটুস পাতা।

৯।কাঁচা বা ভাজা লেটুসপাতার সালাদ রক্ত পরিষ্কার করে, হৃৎপিণ্ডের শিরা-উপশিরার দেয়ালে চর্বি জমাট বাঁধতে বাধা দেয়। লেটুসপাতায় ক্যালরির পরিমাণ কম থাকে। ডায়াবেটিক রোগীদের রক্তে চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে লেটুসপাতার গুরুত্ব অনেক বেশি। এছাড়া ওজন কমাতে এ পাতা দারুন কাজ করে।

১০। লেটুস পাতায় প্রচুর মাত্রায় রয়েছে অ্যানজিওলাইটিক প্রপাটিজ, যা স্ট্রেস এবং অ্যাংজাইটি লেভেল কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এই কারণেই তো স্ট্রেস বা দুশ্চিন্তা বাড়লে লেটুস পাতা জলে ফুটিয়ে সেই জল খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।

১১। লেটুস পাতায় আছে ফাইবার ও সেলুলোজ। এছাড়াও এতে ক্যালোরীর পরিমাণ খুবই কম। ফলে যারা ওজন সমস্যায় ভুগছেন তারা খাবার তালিকায় প্রচুর পরিমাণে লেটুস পাতা রাখতে পারেন। প্রতিদিন সালাদের সাথে প্রচুর লেটুস পাতা রাখুন। তাহলে কম ক্যালোরিতে পেটও ভরবে আর খাবারের স্বাদও অক্ষুণ্ণ থাকবে।

১২। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত লেটুস পাতার রস খাওয়া শুরু করলে শরীরের ভিতরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টর মাত্রা এতটা বৃদ্ধি পায় যে ক্যান্সার সেলের জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে যে এই উপাদানটি শরীরে প্রবেশ করার পর টক্সিক উপাদানদের খুঁজে খুঁজে বের করে দেয়। ফলে ক্যান্সার রোগ ধারে কাছে ঘেঁষারও সুযোগ পায় না।

আরও পড়ুনঃ   প্রতিদিন সকালে ১ গ্লাস মধু পানির ১৫ টি দারুণ উপকারিতা

১৩।লেটুস পাতায় উপস্থির ফাইবার রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে। এছাড়াও লেটুসে আছে ভিটামিন সি ও বিটা-ক্যারোটিন। এই দুটি উপাদান কোলেস্টেরলের অক্সিডেসন কে বাধা দেয় এবং কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে। ফলে রক্তের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রনে থাকে এবং হৃদপিন্ড ভালো থাকে।

১৪। ত্বকের কোথাও কেটে বা ছিঁড় গেলে এ পাতা থেঁতলে ব্যথার স্থানে লাগালে ব্যথা কমে যায়। লেটুসপাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধিতে সহায়তা করার কারণে অ্যামোনিয়া বা রক্তশূন্য রোগীদের জন্য লেটুসপাতা উত্তম খাবার।

১৫। লেটুসের ক্যালরীর মোট ২০ শতাংশ হলো ভেষজ প্রোটিন। এই ভেষজ প্রোটিনের সাথে প্রাণীজ প্রোটিন মিশিয়ে সালাদ বানালে শরীরের প্রোটিনের অভাব দূর হবে এবং শরীরের গঠন প্রক্রিয়া সচল থাকবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

three × 1 =