মরণঘাতি ব্যাধি লিভার ক্যান্সারের অত্যাধুনিক চিকিত্সায় সম্প্রতি সফল হয়েছেন বাংলাদেশের চিকিত্সক দল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) হেপাটোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ মামুন-আল-মাহতাবের (স্বপ্নীল) নেতৃত্বে চিকিত্সক দল দীর্ঘদিন গবেষণা চালিয়ে এই সফলতা লাভ করেন।
লিভার ক্যান্সারের রোগীদের ক্ষেত্রে উন্নত বিশ্বে ট্রান্স-আরটারিয়াল কেমো-এম্বোলাইজেশন’ (টেস) নামে অত্যন্ত কার্যকরী একটি চিকিত্সা প্রয়োগ করা হচ্ছে। এ পদ্ধতিতে রক্তনালীর মাধ্যমে সরাসরি টিউমারে কেমোথেরাপি দেয়া যায়।
সম্প্রতি ঢাকার একটি বেসরকারী হাসপাতালে প্রথমবারের মত এ পদ্ধতি ব্যবহার করে সফল হয়েছেন অধ্যাপক স্বপ্নীলের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের এ লিভার বিশেষজ্ঞ দল। সংশি্লষ্টরা জানিয়েছেন, এরফলে বাংলাদেশ ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজির নতুন আঙ্গিনায় প্রবেশ করল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক স্বপ্নীল যুগান্তরকে জানান, আমাদের রোগীরা এখন থেকে দেশেই লিভার ক্যান্সারের এই অত্যাধুনিক চিকিত্সা পাবেন। পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের তুলনায় খরচ পড়বে প্রায় অর্থেক। দেশের সরকারী হাসপাতালগুলোতেও এ চিকিত্সা শুরু করা সম্ভব হবে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, বাংলাদেশে ক্যান্সার জনিত মৃতু্যর প্রধান কারণ লিভারের ক্যান্সার। বিশেষতঃ এদেশে পুরম্নষদের ড়্গেত্রে এটি তৃতীয় প্রধান ঘাতক ক্যান্সার। বাংলাদেশে লিভার ক্যান্সারে আক্রানত্ম হওয়ার বয়স ৩৫-৪৫ বছর। সাধারণতঃ হেপাটাইটিস বি এবং সি ভাইরাস আমাদের দেশে লিভার ক্যান্সারের প্রধান কারণ। এই ক্যান্সারের চিকিত্সা অন্যান্য ক্যান্সারের চিকিত্সার তুলনায় কিছুটা ভিন্ন। প্রাথমিক অবস্থায় অথবা ছোট টিউমারের ড়্গেত্রে সার্জারী বা অপারেশনের মাধ্যমে চিকিত্সা দেওয়া সম্ভব হয়। কিনত্ম লিভার ক্যান্সার বেশিরভাগ ড়্গেত্রে সিরোসিসে আক্রানত্ম রোগীদের বেশী হয়। এছাড়া অবস্থান ও আকৃতিগত কারণে অনেকের লিভারের টিউমার অপারেশনের মাধ্যমে সারানো সম্ভব হয় না।
ডা. স্বপ্নীলের নেতৃত্বে টেস’ গবেষণায় আরও আছেন, ডাঃ শেখ মোহাম্মদ নূর-ই-আলম, ডাঃ মোঃ আশরাফুল ইসলাম, ডাঃ সৈয়দ আবুল ফয়েজ, ডাঃ জাহাঙ্গীর আলম সরকার, ডাঃ আহমেদ লুত্ফুল মোবিন, ডাঃ মোঃ আব্দুর রহিম ও ডাঃ ফয়েজ আহমদ খন্দকার। ডাঃ স্বপ্নীল জানান, এদের সবাই নয়া দিল্লীর ইন্সটিটিউট অব লিভার এন্ড বিলিয়ারী সাইন্সেস এবং চেন্নাইয়ের গে্লাবাল হেলথ সিটিতে টেস পদ্ধতির ওপর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।