ইংরেজিতে লটকনকে বলা হয় বার্মিজ গ্রেপ। হলুদাভ ছোট ও গোলাকার এই ফলটি স্বাদ, পুষ্টি ও ঔষধিগুণে পরিপূর্ণ। টক-মিষ্টি স্বাদের লটকন ফলকে সরাসরি খাওয়া হয় বা জ্যাম তৈরি করেও খাওয়া যায়। এই ফলটির আবার বেশ কয়েকটি নাম রয়েছে। যেমন- হাড়ফাটা, ডুবি, বুবি, কানাইজু, লটকা, লটকাউ, কিছুয়ান ইত্যাদি। লটকন গাছ দক্ষিণ এশিয়ায় বুনো গাছ হিসেবে জন্মালেও বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে বাণিজ্যিক চাষ হয়। লটকন খেলে মুখে রুচি আসে। বাংলাদেশের আবহাওয়া ও মাটি বেশ উপযোগী লটকন উৎপাদনের জন্য।
আসুন জেনে নেই ফলটির নানা পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে।
১. লটকনে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ আছে। সিজনের সময় প্রতিদিন দুই-তিনটি লটকন খাওয়া মানেই আমাদের দৈনন্দিন ভিটামিন ‘সি’র চাহিদা পূরণ হওয়া। এ ছাড়া এ ফলে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে চর্বি, আমিষ, লৌহ ও খনিজ পদার্থ।
২. লটকন গাছের শুকনো গুঁড়ো পাতা ডায়রিয়া উপশম করে। এর গাছের পাতা ও মূল খেলে পেটের পীড়া ও পুরান জ্বর নিরাময় হয়। এমনকি গনোরিয়া রোগের ওষুধ হিসেবেও ব্যবহৃত হয় এ ফলের বীজ।
৩. প্রতি ১০০ গ্রাম লটকনের কোয়ায় খাদ্যশক্তি থাকে প্রায় ৯২ কিলোক্যালরি। অবাক বিষয় হলো এতে ক্যালরি আছে আমাদের জাতীয় ফল কাঁঠালের প্রায় দ্বিগুণ।
৪. লটকনে আছে প্রচুর পরিমাণে নানা ধরনের ভিটামিন ‘বি’। এতে ভিটামিন বি-১ এবং ভিটামিন বি-২ আছে যথাক্রমে ১০ দশমিক ০৪ মিলিগ্রাম এবং ০.২০ মিলিগ্রাম। ফলে পাকা লটকন খাদ্যমানের দিক দিয়ে খুবই সমৃদ্ধ।
৫. লটকনে রয়েছে অ্যামাইনো অ্যাসিড ও এনজাইম যা দেহ গঠন ও কোষকলার সুস্থতায় কাজে লাগে। এইসব উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
৬. লটকন খেলে বমি বমি ভাব দূর হয় সহজেই। তৃষ্ণাও নিবারণ করে। মানসিক চাপ কমায় এ ফল। এর গাছের ছাল ও পাতা খেলে চর্মরোগ দূর হয়।
৭. এটি খেলে মানসিক অবসাদ দূর হয়।
৮. লটকন মুখের রুচি বাড়ায়।
লটকন শিশু এবং মেয়েদের একটি প্রিয় ফল। তবে লটকন বেশি খেলে ক্ষুধামন্দা দেখা দিতে পারে।