রাসুল [সা.] কোন কোন খাবার খুব পছন্দ করতেন? প্রিয় নবী (সা:) এর ১২টি প্রিয় খাবার সম্পর্কে জেনে নিন।

0
1157
নবীর প্রিয় খাবার

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) খুবই সাধারণ জীবন যাপন করে গেছেন। উনি যে খাবার খেয়েছেন কিংবা পছন্দ করতেন সেই খাবার গুলো অত্যন্ত সহজলভ্য। দেড় হাজার বছর পর আজকের বিজ্ঞান গবেষণা করে দেখেছে নবীজী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) যেসব খাবার আহার করতেন তার গুণাগুণ ও উপাদান মানব দেহের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ও যথাযথ। নবীজী (সা.) এর খাবারের মধ্যে রয়েছে বার্লি, খেজুর, ডুমুর, আঙ্গুর, মধু, তরমুজ, দুধ, মাশরুম, অলিভ অয়েল, ডালিম-বেদানা, ভিনেগার ও পানি। এসব খাবারের গুণাবলী এখানে উল্লেখ করা হলো। তিনি যেসব খাবার আহার করতেন বা আহার করতে পছন্দ করতেন তার মধ্যে কিছু খাবারের গুণাবলীসহ উল্লেখ করা হলো।

১. বার্লি (জাউ) : এটা জ্বরের জন্য এবং পেটের পীড়ায় উপকারী। অসুস্থ অবস্থায়, মূলত জ্বর হলে রাসুল [সা.] এই খাবারটি বেশি গ্রহণ করতেন বলে জানা যায়।

২. খেজুর : খেজুরের গুণাগুণ ও খাদ্যশক্তি অপরিসীম। খেজুরের খাদ্যশক্তি ও খনিজ লবণের উপাদান শরীর সতেজ রাখে। এটা থেকে প্রচুর এনার্জি পাওয়া যায়। প্রিয়নবী (সাঃ) বলতেন, যে বাড়িতে খেজুর নেই সে বাড়িতে কোনো খাবার নেই। এমনকি প্রিয়নবী (সাঃ) সন্তান প্রসবের পর প্রসূতি মাকে খেজুর খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

৩. ডুমুর : ডুমুরও রাসুল [সা.]-এর প্রিয় খাবারের অন্যতম। ডুমুর অত্যন্ত পুষ্টিকর ও ভেষজগুণসম্পন্ন যাদের পাইলস ও কোষ্ঠকাঠিন্য আছে তাদের জন্য অত্যন্ত উপযোগী খাবার।

৪. আঙ্গুর : প্রিয়নবী (সা.) আঙ্গুর খেতে অত্যন্ত ভালোবাসতেন। তার প্রিয় খাবারের তালিকায় আঙ্গুর অন্যতম। আঙ্গুরের পুষ্টিগুণ ও খাদ্যগুণ অপরিসীম। এই খাবারের উচ্চ খাদ্য শক্তির কারণে এটা থেকে আমরা তাৎক্ষণিক এনার্জি পাই এবং এটা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। আঙ্গুর কিডনির জন্য উপকারী এবং বাওয়েল মুভমেন্টে সহায়ক। যাদের আইবিএস বা ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম আছে তারা খেতে পারেন।

৫. মধু : মধু ছিলো রাসুল [সা.]-এর অত্যন্ত প্রিয় একটি খাদ্য। বিভিন্ন সময় তিনি মধু খেতেন। মধুর নানা পুষ্টিগুণ ও ভেষজ গুণ রয়েছে। মধুকে বলা হয় খাবার, পানীয় ও ওষুধের সেরা। হালকা গরম পানির সঙ্গে মিশিয়ে মধু পান করা ডায়রিয়ার জন্য ভালো। খাবারে অরুচি, পাকস্থলীর সমস্যা, হেয়ার কন্ডিশনার ও মাউথ ওয়াশ হিসেবে উপকারী।

আরও পড়ুনঃ   সিয়াম হতে পারে ক্যান্সার প্রতিরোধের সর্বোত্তম উপায়!

৬. তরমুজ : প্রিয়নবী (সা.) তরমুজ আহারকে গুরুত্ব দিতেন। নিজেও বেশ পরিমাণে তরমুজ খেতেন। সব ধরনের তরমুজ স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি। যেসব গর্ভবর্তী মায়েরা তরমুজ আহার করেন তাদের সন্তান প্রসব সহজ হয়। তরমুজের পুষ্টি, খাদ্য ও ভেষজগুণ এখন সর্বজনবিদিত ও বৈজ্ঞানিক সত্য।

৭. দুধ : আজ থেকে দেড় হাজার বছর আগে বিজ্ঞান যখন অন্ধকারে তখন প্রিয়নবী (সা.) দুধ সম্পর্কে বলেন, দুধ হার্টের জন্য ভালো। দুধ রাসুল [সা.] –এর অত্যন্ত প্রিয় ছিলো। দুধকে জান্নাতি খাবার বলা হয়। দুধের খাদ্যগুণ, পুষ্টিগুণ ও ভেষজগুণ বর্ণনাতীত। দুধ পানে মেরুদ- সবল হয়, মস্তিষ্ক সুগঠিত হয় এবং দৃষ্টিশক্তি ও স্মৃতিশক্তি প্রখর হয়। আজকের বিজ্ঞানিরাও দুধকে আদর্শ খাবার হিসেবে ঘোষণা করেছেন এবং এর ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি অস্থিগঠনে সহায়ক।

৮. মাশরুম : অথচ দেড় হাজার বছর আগে প্রিয়নবী (সা.) জানতেন মাশরুম চোখের জন্য ভালো। এটা বার্থ কন্ট্রোলে সহায়ক ও মাশরুমের ভেষজগুণের কারণে এটা নার্ভ শক্ত করে এবং শরীরের প্যারালাইসিস বা অকেজো হওয়ার প্রক্রিয়া রোধ করে। আজ বিশ্ব জুড়ে মাশরুম একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার এবং মাশরুম নিয়ে চলছে নানা গবেষণা।

৯. জলপাই তেল : অলিভ অয়েলের খাদ্য ও পুষ্টিগুণ অনেক। গবেষণায় দেখা গেছে অলিভ অয়েল ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী এবং বয়স ধরে রাখার ক্ষেত্রে সহায়ক বা বুড়িয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া বিলম্বিত করে। এছাড়া অলিভ অয়েল পাকস্থলীর প্রদাহ নিরাময়ে সহায়ক।

১০. ডালিম-বেদানা : প্রিয়নবী (সা.) বলেছেন, ডালিম-বেদানা আহারকারীদের শয়তান ও মন্দ চিন্তা থেকে বিরত রাখে। যদিও তিনি ছিলেন শয়তানের সব ধরনের প্ররোচনা থেকে মুক্ত তবুও ডালিম-বেদানা খুব পছন্দ ছিলো তার। বেদানার পুষ্টিগুণ ও খাদ্যগুণের পাশাপাশি এটার ধর্মীয় একটি দিক আছে।

১১. ভিনেগার : ভিনেগারের ভেষজ গুণ ও খাদ্যগুণ অপরিসীম। প্রিয়নবী (সা.) অলিভ অয়েলের সঙ্গে মিশিয়ে ভিনেগার খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। আজকের এই মর্ডান ও বিজ্ঞানের অভূতপূর্ব সাফল্যের যুগে বিশ্বের বড় বড় নামি-দামি রেস্টুরেন্টে বিশেষ করে এলিট ইটালিয়ান রেস্টুরেন্টে অভিল অয়েল ও ভিনেগার এক সঙ্গে মিশিয়ে পরিবেশন করা হয়।

আরও পড়ুনঃ   ইসলাম ও বাস্তবিক দৃষ্টিকোণ থেকে হস্তমৈথুনের শারীরিক ক্ষতিসমূহ জেনে নিন

১২. খাবার পানি : প্রিয়নবী (সা.) পানিকে পৃথিবীর সেরা ড্রিংক বা পানীয় হিসাবে উল্লেখ করেছেন। পানির অপর নাম জীবন। পানির ভেষজগুণ অপরিসীম। সৌন্দর্য চর্চা থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য রক্ষায় চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা আজ প্রচুর পানি পান করতে বলেন। গ্রন্থনা : মাওলানা মিরাজ রহমান

প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) কোন কোন খাবার পছন্দ করতেন?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

2 × 3 =