মায়ের বুকের দুধ বাড়ানোর উপায়

অনেক মা তাদের বাচ্চাদের জন্য কম দুধ পান, যার মানে শিশু যতই চেষ্টা করুক না কেন, তার মুখে বুকের দুধের পরিমাণ পর্যাপ্ত পাওয়া যায় না। দুধ ছাড়া শিশুর ক্ষুধা মেটে না এবং সে চিৎকার ও কান্নাকাটি করে। শিশুটি অপুষ্টিতে ভুগছে। বুকে দুধ কম থাকলে হাত দিয়ে দুধ পাম্প করার চেষ্টা করতে হবে। এটি বুকের দুধ আনার সেরা উপায়।
উল্লেখ্য, বাজারে এখন কিছু পাম্পিং মেশিন পাওয়া যায় এবং সেগুলোও কার্যকর। প্রোটিন বা ক্যালরির পরিমাণ বাড়ালে স্তনে দুধ আসবে- এটা ভুল ধারণা। তবে শিশুকে খাওয়ানোর সময় মাকে অবশ্যই শরীরের চাহিদার কথা মাথায় রেখে সুষম খাবার খেতে হবে। প্রচুর পানি, শাকসবজি, ফলমূল, মাছ (সামুদ্রিক মাছ নয়) এবং উপকারী চর্বিযুক্ত খেতে হবে। এতে মায়ের স্তনে দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।
প্রতিটি শিশুর চাহিদা ভিন্ন। কেউ বারবার একটু একটু করে খেতে চায় আবার কেউ কেউ দীর্ঘ সময় ধরে খায়। শিশুকে প্রথমে একটি স্তন, তারপর অন্য স্তন খাওয়াতে হবে অর্থাৎ শিশুকে প্রথমে একটি স্তনের দুধ খাইয়ে শেষ করে, তারপর আরেকটি স্তন তার মুখে দিতে হবে। শিশুকে বারবার দুধ খাওয়াতে হবে এবং যতবার শিশু চাইবে, ততবার দুধ খাওয়াতে হবে। ধৈর্য সহকারে দুধ পান করানো উচিত, দুধ খাওয়া শেষ করার পূর্বে এটি অপসারণ করা উচিত নয়। এর কারণ হল শিশু যখন চুষে খায়, তখন মায়ের মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে থাকা পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে প্রোল্যাকটিন হরমোন নিঃসৃত হয়, যা অধিক দুধ উৎপাদনে উদ্দীপিত হয়।
শিশু যত বেশি দুধ চুষবে, তত বেশি হরমোন নিঃসৃত হবে এবং তত বেশি দুধ তৈরি হবে। তাই বুকের দুধ তৈরির একমাত্র উদ্দীপনা হল শিশুর বুকের দুধ টানা বা খেতে থাকা। বুকের দুধ না পাওয়ায় শিশুকে ফর্মুলা খাবার দেওয়া যাবে না। এতে মায়ের দুধ আরও কমে যাবে এবং শিশুর বুকের দুধ খাওয়ার অভ্যাস চলে যাবে। কোনো অবস্থাতেই শিশুর মুখে বোতল বা চুষনী বোতল রাখা উচিত নয়। ফলে শিশু তার মায়ের স্তনের বোঁটা মুখে নিতে চাইবে না। শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি খাওয়া উচিত নয়। এতে বুকের দুধ কমে যেতে পারে। তাই এ সময় অন্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন।
লেখক: আবাসিক চিকিৎসক, প্যাথলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।