বয়ঃসন্ধিকালে কিশোর কিশোরীর মানসিক ও শারীরিক উভয় ধরনেরই পরিবর্তন হয়। তাই এসময় অনেকেই মনে মনে ভাবে হয়তো তার সমস্যাগুলো কেউ বুঝে না আর বুঝতে চায় না। কিংবা কখনো এমন হয় যে তুমি কাউকেই মন খুলে কিছু বলতে পারছ না বা বলতে লজ্জা লাগছে। মানসিক দিক দিয়ে দ্বিধায় ভুগবে। হঠাৎ করে এ পরিবর্তনের সাথে অনেকেই মানাতে পারে না। নিজেকে খুব বেমানান মনে হয়। মনে হয় যেন তুমি সবার সাথে মিশতে পারছ না। আর তুমি যাই কর না কেন সবাই তোমার ভুল ধরছে, এমনটাই মনে হয়। পুরো পৃথিবীটাই যেন তোমার বিরুদ্ধে। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এই বয়স যখন তুমি অতিক্রম করবে তখন এসব আর কিছুই মনে হবে না, তখন নিজের ভুলগুলো বুঝতে পারবে।
মেয়েদের ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধিকাল শুরু হয় ৯-১২ বছর বয়সে। কিন্তু ছেলের ক্ষেত্রে তা ১১-১৪ বছর। এই সময়ে
ছেলে মেয়ে উভয়েরই শারীরিক পরিবর্তন হয়। যেমনঃ
মেয়েদের ক্ষেত্রেঃ
১। স্তন সুউচ্চ হয়।
২। শরীরের আকার পরিবর্তন হয় এবং উচ্চাতা তুলনামূলক একটু বেশি বাড়তে থাকে।
৩। পিরিয়ড শুরু হয়।
৪। বগলে ও গোপন অঙ্গে চুল গজায়।
৫। কোমরে মেদ বাড়তে থাকে।
ছেলেদের ক্ষেত্রেঃ
১। দাড়ি গোঁফ গজাতে শুরু করে।
২। শরীরের আকার পরিবর্তন হয় এবং উচ্চাতা তুলনামূলক একটু বেশি বাড়তে থাকে।
৩। স্বপ্নদোষ শুরু হয়।
৪। কণ্ঠের পরিবর্তন হয়।
৫। বগলে ও গোপন অঙ্গে চুল গজায়।
এছাড়াও মস্তিষ্কের যথেষ্ট উন্নতি সাধিত হয়। শরীরের হাড় ও বিভিন্ন অঙ্গ পূর্ণতা পেতে থাকে। এ সময়ে হঠাৎ এসব পরিবর্তন সম্পর্কে অবগত না থাকায় অনেকেই আতংকিত হয়, মেয়েদের ক্ষেত্রেই এটি বেশি ঘটে।
কিশোর কিশোরীদের সাথে এ সময়ে বাবা-মা এবং পরিবারের অন্যান্যদের বন্ধুসুলভ আচরণ করা উচিৎ। যেন তারা কোনো সমস্যায় পড়লে মন খুলে বলতে পারে, কোনো দ্বিধায় না পড়ে। এছাড়া বয়ঃসন্ধিকালের পরিবর্তনগুলো সম্পর্কে আগে থেকেই কিশোর কিশোরীদের সচেতন করা উচিৎ, যাতে তারা হতাশ না হয়। কারণ আজকের ফুটন্ত কিশোর কিশোরীরাই আগামী দিনের উজ্জ্বল নক্ষত্র।
হাসনাত আব্দুল্লাহ