ব্যায়াম হোক মুখেরও!

0
332
মুখের ব্যায়াম

যতদিন যায়, ততই আমরা বার্ধক্যের দিকে এগোতে থাকি। আর সবার আগে বার্ধক্যের ছাপ পড়ে আমাদের মুখে। সেই সব ছাপকে আমরা যতটা সম্ভব দূর করতে চাই মুখ এবং জীবন থেকে। যার জন্য শরণাপন্ন হয়ে পরি নানা রকম ক্রিম, সিরাম ইত্যাদির ওপর। যদিও কেমিকালে ঠাঁসা এইসব প্রসাধনী আমাদের ত্বককে আরও খারাপ করে তোলে। ফলে অধরাই থেকে যায় মুখ থেকে বার্ধক্যের ছাপ সরানো। তবে হতাশ হবেন না। এমন কিছু ম্যাজিক আছে, যা আমাদের ত্বককে রাখবে দাগ, ছোপ এবং বার্ধক্যের থেকে অনেক দূরে। কিন্তু কি সেই ম্যাজিক?

এই ম্যাজিক হল, ফেসিয়াল বা মুখের যোগ ব্যায়াম। এই ব্যায়াম মুখ থেকে বার্ধক্যের ছাপ যেমন সরাবে, তেমনই আরআম দেবে আপনার মুখের যাবতীয় সমস্যায়। আর ঠিক এই কারণেই, আজ বোল্ডস্কাই আপনাদের জানাবে, এরকম সাতটি ব্যায়াম সম্পর্কে, যা আপনার মুখকে চিরনতুন রাখতে সাহায্য করবে।

ফেসিয়াল যোগের কিছু উপকারিতা…

 ১। কম খরচে দারুণ কাজ পাবেন:

আপনি হয়তো ভাবছেন, ফেসিয়াল যোগ করতে গেলে কত টাকা খরচে হবে, তাই তো? উত্তরটা হল, এই যোগ অনুশীলন করতে কোনও খরচ করার দরকার পরে না। বরং দিনের মাত্র কয়েক মিনিট এই ব্যায়াম করলেই কেল্লাফতে! তাই আলাদা করে দিনের ক্রিম, রাতের ক্রিম না মেখে শুরু করুন ফেসিয়াল যোগ ব্যায়াম। দেখবেন অনেক উপকার মিলবে।

২। ত্বকের জন্য উপকারি:

অ্যান্টি- এজিং ক্রিম ব্যবহার করছেন? জানেন তাতে কি হতে পারে? উত্তরটা এখন নাই বা দিলাম। তবে উত্তরটা ভেবে দেখতে হলে এই ধরণের প্রসাধনীর উপকরণ সম্বন্ধে অল্প কিছু ধারণা রাখা উচিত। অ্যান্টি- এজিং ক্রিমে মূলত প্যারাফিন, মিনারেল অয়েল, কৃত্রিম সুগন্ধ ছাড়াও আরও নানারকম উপাদান থাকে, যা আমাদের ত্বককে ভেতর থেকে খারাপ করে দিতে সাহায্য করে। আর ঠিক এই কারণেই এই সব ক্রিম না মেখে ত্বককে সুন্দর রাখতে ফেসিয়াল যোগ করা উচিত।

আরও পড়ুনঃ   সময় নেই, ব্যায়াম করব কখন?
 ৩। মুখে বয়সের ছাপ ফেলতে দেয় না:

বয়স যত বাড়তে তাকে, তত আমাদের মুখে বলিরেখা বা বার্ধক্যের ছাপ পরে। যদিও এমনটা হওয়া খুবই সাধারণ একটা ব্যাপার। তবে বলিরেখা যদি কমাতে চান, তাহলে ফেসিয়াল যোগ করতে পারেন। কারণ এক্ষেত্রে এই পদ্ধতিটি ম্যাজিকের মতো কাজ করে। নিয়মিত ফেসিয়াল যোগ অনুশীলন করলে মুখে বার্ধক্যের ছাপ সহজে পরে না।

 ৪। দুশ্চিন্তা দূর করে:

দুশ্চিন্তা দূর করতে ফেসিয়াল যোগ ব্যায়াম দারুণ কাজ দেয়। আসলে আমরা যখন খুব বেশি দুশ্চিন্তা করি, তখন আমাদের মুখ এবং গলার ত্বক দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই ধরণের সমস্যা ফেসিয়াল যোগ ব্যায়াম দূর করতে পারে এবং গলা এবং মুখের চামড়া টানটান করে রাখতে পারে।

 ৫। গলা এবং মুখের মাংসপেশি ভালো রাখে:

ফেসিয়াল যোগ ব্যায়াম আমাদের মুখের চামড়া টানটান এবং ভাল রাখতে সাহায্য করে। তাই মুখের ব্যায়াম করলে রক্ত চলাচল ভালভাবে হয়, অক্সিজেন চলাচল করতে পারে এবং ত্বককে সুস্থ রাখে। এর ফলে, কোলাজেন বেশিভাবে উৎপন্ন হতে পারে এবং ত্বক থাকে চিরনতুন।

 ৬। মুখের বাড়তি মেদ ঝরে যায়:

মুখে চর্বি বৃদ্ধি পেয়ে তা গলার কাছে ভাঁজের সৃষ্টি করেছে? এই সমস্যা কিন্তু কোনও প্রসাধনী দূর করতে পারবে না। এই ধরণের সমস্যা থেকে ছুটি পেতে হলে অবশ্যই মুখের ব্যায়াম করতে হবে। এমনটা করলে গলার কাছে জমে থাকা চর্বি দূর হবে, সেই সঙ্গে আসবে জেল্লাও।

 ৭। আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করে:

দেখেতে ভাল লাগলে মনও চাঙ্গা থাকে। সেই সঙ্গে আত্মবিশ্বাসও বাড়ে। তাই তো নিয়ম করে ফেসিয়াল ব্যায়াম করুন। এতে আপনার ত্বক এবং ব্যক্তিত্ব দুইই ঝলমলে হয়ে উঠবে।

 কিন্তু কি কি ফেসিয়াল যোগ করলে উপকার পাওয়া যায়?

স্মাইলিং ফিশ ফেস:

গালের যত্নে এই ব্যায়াম খুবই উপকারি। এই ফেসিয়াল যোগটি নিয়মিত করলে গালের চামড়া টানটান থাকে এবং মুখের লাবণ্য বৃদ্ধি পায়। ঠোঁটের মাধ্যমে এই ব্যায়াম করতে হয়। তারপর হাসির মতো মুখ করতে হয়। এইরকম ভাবে পাঁচবার এই ব্যায়াম অনুশীলন করতে হবে।

আরও পড়ুনঃ   দিনের কোন সময় শরীরচর্চা করলে ভাল ফল পাওয়া যায় জানা আছে?

মেরিলিন:

মেরিলিন বলতে কি বোঝেন আপনারা? সেই চিরন্তন হাসি। সেই সারল্যে ভরা ভঙ্গিমা। তিনি মেরিলিন মনরো। এই ফেসিয়াল যোগ ব্যায়ামটিরও ওনার নামেই নামকরণ করা হয়েছে। ঠোঁটকে চুমু খাওয়ার মতো করে সরু করুন। এবার হাতের মাধ্যমে ঠোঁটকে চাপুন আর ছেড়ে দিন। এইভাবে বেশ কয়েকবার করুন।

বেবি বার্ড:

এই ফেসিয়াল যোগ ব্যায়ামটি করলে গলার মাংসপেশি ভাল থাকে। ফলে গলার চামড়ায় ভাঁজ পরা, ডবল চিনের সমস্যা দূর হয়। এক্ষেত্রে প্রথমে ডানদিকে মাথা উপরের দিকে তুলুন। এবার জিভ বার করে ঠোঁটের উপরিভাগ স্পর্শ করুন। এবার হাসির মতো মুখ করুন এবং ঢোক গিলুন। এবার বামদিকে এবং মাঝখানে এই ব্যায়াম পুনরায় করুন।

স্যাচমো:

এক ধরণের বাদ্যযন্ত্র আমাদের চোখে প্রায়ই পরে। গাল ফুলিয়ে মুখে হাওয়া ভরে তাকে বাজাতে হয়। ঠিক একইভাবে মুখের ভিতর বাতাস ভরে একদিকের গাল থেকে অন্যদিকের গালে হাওয়া ঠেলে দিতে হবে। মুখের থেকে পুরো হাওয়া বেড়িয়ে না যাওয়া অবধি এই ব্যায়াম করতে হবে। একইরকম ভাবে আরও দশবার এই ফেসিয়াল যোগ ব্যায়াম অনুশীলন করতে হবে।

টেম্পল ড্যান্সার:

পুরো মুখ স্থির রেখে চোখ দুটিকে যতটা সম্ভব বড় করতে হবে। এবার চোখের মনি বামদিক থেকে মাঝখানে, তারপর ডানদিকে এবং ডানদিক থেকে মাঝখানে নিয়ে আসতে হবে। এইভাবে দশবার এটি করতে হবে।

বুদ্ধ:

চোখ হালকা করে বন্ধ করে মুখে স্ফিত হাসি আনতে হবে। যাতে সেই প্রশান্তির চিহ্ন পুরো মুখে ছড়িয়ে পরে।

লায়ন ফেস:

প্রথম পদ্ধতি…

প্রথমে নাক দিয়ে ভাল করে শ্বাস নিয়ে নিন। এই অবস্থায় মুখ কুঁচকে কিছুক্ষণ রেখে দিন।

দ্বিতীয় পদ্ধতি…

মুখ দিয়ে হাওয়া বের করে, জিভ যতটা সম্ভব বাইরে করে নিন। এবার চোখ বড় বড় করে খুলুন। এই সময় হাত খোলা রাখতে হবে। এই ফেসিয়াল ব্যায়ামটি তিনবার অনুশীলন করুন।

আরও পড়ুনঃ   প্রতিদিন কমপক্ষে ১৫ মিনিট হাঁটবেন কেন?

সূত্রঃ বোল্ডস্কাই

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

5 × 1 =