মানবজাতির বেচে থাকা এবং পৃথিবীতে মানব বংশ বিস্তারে বিয়ের কোন বিকল্প নেই। সকল ধর্মের মানুষের কাছেই বিয়ে একটি পবিত্র বন্ধন। বিয়ে সকল মানুষের জীবনে অনেক আকাঙ্ক্ষিত একটি সময়। সবাই চায় এই সুন্দর মুহূর্তগুলোকে তার জীবন ফ্রেমে বন্দি করে রাখতে। সকল স্মৃতির ভাঁজে বিয়ের মধুর স্মৃতিকে ধরে রাখতে। সুন্দর সুন্দর মুহূর্তগুলোকে ফ্রেমে বন্দি করে রাখার জন্য আমরা নানা ধরনের আয়োজন করে থাকি এবং এই সকল আয়োজন সুন্দর ও গুছিয়ে করার জন্য প্রস্তুতির প্রয়োজন রয়েছে । অনেকে মনে করেন বিয়েতে কেবল মেয়েদেরই প্রস্তুতির প্রয়োজন আছে। কিন্তু ব্যাপারটা একেবারেই ভুল, ছেলেদেরও রয়েছে সমানভাবে প্রস্তুতির প্রয়োজন।
বিয়ের আগে ছেলেদের প্রস্তুতির জন্য যা যা করা দরকার।

মানসিক ভাবে প্রস্তুত হয়ে নিন।

বিয়ে শব্দটা দেখতে বা পড়তে একেবারেই ছোট মনে হয়। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে এটা অনেক বড় একটি দায়িত্ব। বিয়ের আগে আপনি সব ক্ষেত্রে নিজের উপর ডিপেন্ডেন্ট থাকতে পারলেও বিয়ের পর আপনার সকল কাজ, ডিসিশান থেকে শুরু করে অনেক কিছু আপনার সহ ধর্মিণীর কথা চিন্তা করেই আপনাকে নিতে তখন আর আপনি আর আপনার থাকবেন না।
আপনার সকল ক্ষেত্রে চাইতে বা না চাইতে ও তার একটা প্রভাব থাকবে, সুতরাং এর জন্য নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করে নেয়া অনেক বেশি জরুরী।
নিজের মনকে এটা বলে অন্তত মানিয়ে নেয়া উচিত যে ‘বিয়ের পর জীবনযাপনে কিছুটা হলেও পরিবর্তন আসবে এবং তা ভালোর জন্যই’।
চুলের যত্ন নিন

ছেলেদেরকে দিনের বেশির ভাগ সময় বাহিরের রোদ এবং ধুলাবালিতে কাটাতে হয় । যার ফলে অনেক চুল পড়া, খুশকিসহ নানান সমস্যা দেখা দেই। তাই বিয়ের অন্তত ১৫-৩০ দিন আগে থেকে চুলের যত্ন নেওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। আগে থেকে চুলের যত্ন নিলে বিয়ের সময় চুলের কালার ও গঠন সুন্দর দেখাবে ।
চুলের যত্নে ঘরোয়া কয়েকটি উপায় ব্যবহার করা যেতে পারে।চুলের রুক্ষতা দূর করতে দারুন কার্যকর একটি ঘরোয়া রেমেডি ইউস করতে পারেন।
লেবুর রস আর অলিভ ওয়েলে ১ টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে তা চুলে মাখিয়ে আধা ঘন্টা রাখুন।
তারপর পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালোভাবে মাথা ধুয়ে নিন। এই প্যাকটি দুই দিন পর পর অথবা সাপ্তাহে ২-৩ বার ইউস করা যেতে পারে। এতে করে আপনার চুলের রুক্ষতা অনেকাংশেই কমে যাবে। আপনার চুল সুন্দর ও সিল্কি হয়ে যাবে।
পার্টনারের সাথে ঝগড়া করুন।

এটা আপনার কাছে শুনতে হয়তো বেশ অবাক মনে হতে পারে তবে এই বিষয়টি বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
কারণ এই কথাটা বলার পিছনে বিশাল একটা লজিক রয়েছে , সাধারনত আমরা ঝগড়ায় লজিক ব্যবহার করি এবং এর মাধ্যমে খুব সহজেই তার লজিক সম্পর্কে আপনি ধারনা পেয়ে যাবেন।
ঝগড়া কতদূর পর্যন্ত যেতে পারে বা কোন অবস্থানে যেতে পারে তা বেশ ভালো করে বুঝে নিতে পারবেন যা পরবর্তী জীবনে অনেক কাজে লাগবে।
স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভ্যাস করুন

প্রায় ছেলেরাই দেখায় যায় নিজেদের শরীর নিয়ে অনেক উদাসীন থাকেন যা একদম উচিৎ নয়। সুস্থ জীবনের প্রধান মাধ্যম হলো স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভ্যাস।
খাবারের মাধ্যমে আমাদের বিভিন্ন ধরনের হেলথ ইস্যু তৈরী হয় ,সুতরাং খাবারের তালিকায় স্বাস্থ্যসম্মত খাবার যুক্ত করতে হবে। তেল-চর্বিযুক্ত খাবার গুলো যতটা পারা যায় এভোইড করা উচিৎ। প্রতিদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠা এবং নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস এই ফাঁকে গড়ে তুলতে পারেন।
ধূমপানের মতো বদ অভ্যাস থাকলে অবশ্যই বন্ধ করা উচিৎ।
টেস্টোস্টেরন লেভেলকে প্রমোট করে, ফার্টিলিটি রেট বাড়ায় এবং দেহকে সুস্থ ও সবল রাখতে সাহায্য করে এমন খাবার খাদ্যতালিকায় যুক্ত করতে হবে।
পাশাপাশি ভিটামিন,কেলসিয়াম, আয়রন, মেগনেজিয়াম যুক্ত খাবার খাওয়ার অভ্যাস করার চেষ্টা করতে হবে।
যেমন: কলা, ডিম, রসুন, পালং শাঁক, তরমুজ, খেজুর, দুধ ও বিভিন্ন প্রকারের বাদাম প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যুক্ত করতে হবে।
হবু স্ত্রীকে মানসিকভাবে সহায়তা করা।

আমাদের দেশের বেশিরভাগ নারী প্রথম রাতেই শারীরিক মিলনের জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত হতে পারেন না, এটা অবশ্যই একজন আদর্শবান স্বামীর বুঝতে হবে।
বিয়ের রাতেই শারীরিক মিলনের জন্য
জোরাজুরি না করে তাকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করুন।
নিজেদের মধ্যে আগে ভালো লাগা এবং ভালোবাসার সেতু বন্ধন তৈরি করার চেষ্টা করুন, যাতে সে নিজ থেকেই মিলনের জন্য আগ্রহী হয়ে উঠে। মিলনের শুরুতে ভালোবাসার আদান প্রদান সরূপ তাকে কাছে টেনে নিন এবং একটা ভালো সময় নিয়ে ফোরপ্লে করুন। এতে করে আপনাদের সামনের যৌন জীবন অনেক সুন্দর হবে।
- নিজেদের মধ্যে বিশ্বাস এবং ভালোবাসার ঘাটতি যাতে না হয় তার জন্য সবসময়ই কমিটেড এবং অনেস্ট থাকবেন।
- একসাথে নামাজ আদায় করুন। নিজ নিজ ধর্মের পার্থণা করুন।
- স্রষ্টার কাছে তার জন্য দোয়া করুন।
- কেউ একজন রেগে গেলে অপর জন ঠাণ্ডা মাথায় বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করুন।
- দ্বিমত রয়েছে এমন বিষয়গুলো নিয়ে বেশী কথা না বাড়িয়ে হেঁসে হেঁসে বা মজার ছলে বুঝানোর চেষ্টা করুন।
- অফিস বা ঘরের বাহিরে গেলে ফোন করে খোঁজ খবর রাখুন।
- স্ত্রীর বাবা- মাকে নিজের বাবা মায়ের মতো সম্মান এবং মায়া মমতা করুন, এতে আপনার প্রতি তার আলাদা একটা মায়া জন্মাবে।
- খুব বেশী খরচ বা অনেক কিপ্টামো না করে মধ্যম মানের খরচ করুন।
- তার কোন সমস্যা এড়িয়ে না গিয়ে তার হাত ধরে তাকে ভরসা দেন, যে আপনি তার পাশে আছেন।
আশা করছি এই সকল বিষয়গুলো হতে কোন একটি টিপস আপনার জন্য অনেক কাজে দিবে এবং আপনার সুখী জীবন কামনা করে আজ এখানেই শেষ করছি।