ফুলকপির বিভিন্ন উপকারিতা, যেগুলো আপনার অজানা

0
784
ফুলকপি

ফুলকপি, আমাদের অতি পরিচিত শীতকালীন একটি সবজি। পাতা দিয়ে ঘিরে থাকা অংশটি ফুলের মত বলেই এর নাম ফুলকপি। যার বৈজ্ঞানিক নাম ব্রাসিকা অলেরাসিয়া। ফুলকপির ফুল অর্থাৎ সাদা অংশটুকু বেশি খাওয়া হলেও এর চারপাশের ঘিরে থাকা ডাটা ও পাতা দিয়ে তৈরি হয় সব্জি ভাজি ও স্যুপের মতই খাবার। ফুলের মতন অংশটুকু শুধু শুধু সাদা হয় হয় না, কমলা-সবুজ-হলুদ-বেগুনি রঙের ফুলকপিও জন্মায় বিশ্বজুড়ে। একটি মাঝারি আকারের ফুলকপিতে রয়েছে শক্তি- ২৫ কিলোক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট- ৪.৯৭ গ্রাম , প্রোটিন- ১.৯২ গ্রাম , ফ্যাট- ০.২৮ , আঁশ- ২ গ্রাম, ফোলেট- .৫৭ মাইক্রোগ্রাম নিয়াসিন- ০.৫০ মাইক্রোগ্রাম, থায়ামিন- ০.০৫ , প্যানথানিক এসিড- ০.৬৬৭ মাইকোগ্রাম।

এছাড়াও রয়েছে থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন,ভিটামিন সি,কে ,পটাসিয়াম , সোডিয়াম ইত্যাদি। ফুলকপির রয়েছে অজস্র গুনাগুন। ফুলকপির গুনাগুনের কথা সর্বপ্রথম পাওয়া যায় ১২০০-১৩০০ শতকে আরব বিজ্ঞানী ইবনে আল আওয়াল এবং ইবনে আল বাইতির লেখায়। আসুন জেনে রাখি ফুলকপি এর বারোটি উপকারিতা সর্ম্পকেঃ

  • ১) এক কাপ সিদ্ধ ফুলকপিতে রয়েছে প্রায় ৫৫ গ্রাম ভিটামিন সি। যা ফ্যাট বার্ণ করতে বা চর্বি পোড়াতে এক কার্যকরী উপাদান। এছাড়াও রয়েছে ফোলেট যা ওজন কমাতে যাদুর মত কাজ করে।
  • ২) ওজন কমাতে সহায়ক এই ফুলকপি। এক কাপ ফুলকপিতে মাত্র ৩০ কিলোক্যালরি শর্করা থাকে। তাই পেট ভরানো কিংবা খিদে মেটানোর জন্য খেয়ে ফেলা যায় নিশ্চিন্তেই।
  • ৩) এক কাপ সিদ্ধ ফুলকপি থেকে ৩.৩৫ ডায়াটেরি ফাইবার পাওয়া যায়। যা হজমে সাহায্য করে থাকে।
  • ৪) এতে রয়েছে গ্লুকোরাফিন, যা পাকস্থলির ঝিল্লি রক্ষা ছাড়াও পাকস্থলিতে হ্যালোব্যাকটার পাইলোরি নামক ব্যাকটেরিয়াকে জন্মাতে দেয়না। এছাড়াও পাকস্থলির আলসার ও ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমিয়ে দেয়।
    • ৫)ফুলকপিতে রয়েছে জিংক যা নতুন কোষ সৃষ্টি করে ক্ষত নিরাময়ে সাহায্য করে।
    • ৬) নিয়মিত ফুলকপি ভক্ষন হাড়,দাঁতকে মজবুত রাখার পাশাপাশি স্নায়ুকে সচল রাখে।
    • ৭)এটি খাদ্য তালিকায় ভিটামিন কে-এর চাহিদা পুরণ করতে পারে। যা ক্ষতস্থানে রক্ত জমাট বাঁধার অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপাদান। এক কাপ ফুলকপিতে আছে প্রায় এগারো মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন কে।
    • ৮)ফুলকপিতে আছে ক্যারোটিনয়েডস (যেমন বিটাক্যারোটিন) এবং ফাইটোহরমোন যা এন্টি অক্সিডেন্ট হিসেবে ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখবার পাশাপাশি ক্যান্সার ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
    • ৯) গর্ভাবস্থায় ফুলকপি খাওয়া অত্যন্ত ভালো অভ্যাস। এর পুষ্টি উপাদান ও ভিটামিনসমূহ কোষের বৃদ্ধিতে সহায়ক। এটি মাতৃগর্ভে ভ্রুনের বৃদ্ধিকে ত্বরানিত করে।
    • ১০)এর ম্যাগনেসিয়াম প্যারা-থাইরয়েড়কে উদ্দীপ্ত করে হরমোন উত্পাদনে সাহায্য করে এবং ফসফরাস হাড় শক্ত করে।
    • ১১) ফুলকপির সেলেনিয়াম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় পাশাপাশি ক্রনিক ইনফেকশন কমাতে ও এটি কার্যকরী। এটি সোডিয়ামেরও উত্স,যা রক্তের সঠিক ঘনমাত্রা বজায় রাখে।
    • ১২) ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড থাকায় এটি ইনফ্ল্যামেশনের সম্ভাবনা কমায়। এক কাপ ফুলকপি সিদ্ধতে থাকে ০.২১ ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড।এটি মস্তিষ্কের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করে থাকে।
    • -তাসনুভা রিয়া
  • আরো কিছু উপকারিতা জেনে নিন
আরও পড়ুনঃ   রোগ নিরাময়ে মূল্যহীন মূলার মূল্যবান উপকারিতা!

ক্যান্সার প্রতিরোধক : ফুলকপিতে রয়েছে এমন কিছু উপাদান যা ক্যান্সার প্রতিরোধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। ফুলকপির সালফোরাফেন উপাদান ক্যান্সারের স্টেম সেল ধ্বংস করতে সাহায্য করে এবং বিভিন্ন ধরনের টিউমারের বৃদ্ধি প্রতিহত করে।

হৃদযন্ত্র ভালো রাখে:  হৃদযন্ত্র ভালো রাখতে ফুলকপির জুড়ি মেলা ভার। এর সালফোরাফেন উপাদান  উচ্চ রক্তচাপ কমায় এবং কিডনি সুস্থ রাখে। এছাড়া ধমনীর ভেতরে প্রদাহ রোধে ফুলকপি সাহায্য করে।

দহন প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ: সুস্বাস্থ্যের জন্য শরীরে নির্দিষ্ট পরিমাণ দহন হওয়া জরুরি। তবে দহনের পরিমাণ বেড়ে গেলে তা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। সেক্ষেত্রে ক্যান্সার বা এ ধরনের রোগের সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে। ফুলকপিতে রয়েছে ‘অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি নিউট্রিয়েন্টস’। যা শরীরের দহন প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণে রাখে।

মস্তিষ্ক সুস্থ রাখে : ফুলকপিতে রয়েছে কলিন (এটি ভিটামিন বি কমপ্লেক্স সমৃদ্ধ এক ধরনের পানিজাতীয় পুষ্টি উপাদান) ও ভিটামিন-বি, যা মস্তিষ্ক সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কলিন মস্তিষ্কের কগনিটিভ প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে। অর্থাৎ এতে স্মৃতিশক্তি বাড়ে ও দ্রুত শিখতে সাহায্য করে।

হজমে সাহায্য করে : ফুলকপিতে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও সালফার-জাতীয় উপাদান। যা খাবার হজম প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে। তাছাড়া ফুলকপির ফাইবার খাবার হজম হতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

শরীর সুস্থ ও কর্মক্ষম রাখে : ফুলকপিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং মিনারেল। যা শরীর সুস্থ ও কর্মক্ষম রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত ফুলকপি খেলে দেহের প্রয়োজনীয় পুষ্টি চাহিদা পূরণ হয়। ফুলকপিতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন-সি। পাশাপাশি রয়েছে ভিটামিন কে, ভিটামিন বি৬, প্রোটিন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, ফাইবার, পটাসিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজ।

শীতের সবজি ফুলকপি

বিঃ দ্রঃ গুরুত্বপূর্ণ হেলথ নিউজ ,টিপস ,তথ্য এবং মজার মজার রেসিপি নিয়মিত আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে লাইক দিন আমাদের ফ্যান পেজ বিডি হেলথ নিউজ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

twelve − 10 =