নারীদের ক্যান্সারে আক্রান্তের ঝুঁকির মধ্যে এখন শীর্ষে স্তন ক্যান্সার। নিজের প্রতি উদাসীনতা, আর্থিক সংকট, সামাজিক লজ্জা, ভয় আবার কখনও পারিবারিক অবহেলার কারণে দেশে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত নারীর সংখ্যা প্রতি বছরই বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধুমাত্র সচেতনতার অভাবে প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত না হওয়ার কারণে প্রতি বছরই প্রাণ হারাচ্ছেন হাজার হাজার নারী। এমন প্রেক্ষাপটে বিশ্বে অক্টোবর মাসকে পালন করা হয় স্তন ক্যান্সার সচেতনতার মাস হিসেবে।
চিকিৎসকের সামনে তুলে ধরার সংকোচ বোধ থেকে এবং সচেতনতার অভাবে নীরব ঘাতক স্তন ক্যান্সারের বীজ বহন করে বেড়ান অনেক নারী। দেশে প্রতি বছর ২২ হাজার নারী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন। আর এদের মধ্যে পর্যাপ্ত চিকিৎসা না পেয়ে আর দেরীতে সনাক্ত হওয়ার কারণে প্রাণ হারাচ্ছেন ৭০ শতাংশ।
পারিবারিক অসহযোগিতা বা আর্থিক সংকট, লজ্জা আর নিজের প্রতি উদাসিনতার কারণে প্রতিরোধযোগ্য এই রোগটি পরিণত হচ্ছে প্রাণঘাতিতে।
স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত কয়েকজন নারী জানান, ‘নিজের কাউকে বলতে লজ্জা করে, যদি বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করা যেত তাহলে হয়ত পরামর্শ পাওয়া যেত। যা ছিলো চিকিৎসার জন্য সব বেচে কিনে শেষ করে দিয়েছি।’
তবে, আছে ব্যতিক্রমও। রাজধানীর বেসরকারি একটি ব্যাংকের জ্যৈষ্ঠ কর্মকর্তা হোসনে আরা বেগম। লজ্জা আর সংকোচকে জয় করে স্তন ক্যান্সারের সাথে লড়াই করেছেন পাঁচটি বছর। তৃতীয় স্টেজে ক্যান্সারটি ধরা পড়লেও সার্জারির পর এখন সুস্থ স্বাভাবিক জীবন কাটাচ্ছেন তিনি।
তবে, শহুরে নারীদের মধ্যে স্তন পরীক্ষার প্রবনতা বাড়লেও। গ্রামাঞ্চলের নারীদের এ বিষয়ে সচেতনতা আর অজ্ঞতার অভাব রয়ে গেছে।
বিএসএমএমইউ সার্জিক্যাল অস্কোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. সাইফ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মার সাথে মেয়ের হবে বন্ধুর মত সম্পর্ক। দুজনেই যেন দুজনের সাথে শেয়ার করতে পারে।’
এদিকে, বর্তমানে এ রোগের চিকিৎসা রাজধানীকেন্দ্রীক হয়ে পড়েছে জানিয়ে দেশের মেডিকেল কলেজগুলোতে এ চিকিৎসা বিকেন্দ্রীকরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানালেন জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক।
প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত করা গেলে ৯০ শতাংশ রোগীকে নিরাময় করা সম্ভব বলেও জানালেন তিনি।