নিয়মিত হাঁটার উপকারিতা ও কিছু টিপস

0
630
হাঁটার উপকারিতা

আমাদের দেহকে সুস্থ সবল রাখার জন্য হাঁটার ওপর আর কোনো ব্যায়াম নেই। এক জন মানুষ নিয়ম করে ৩০ মিনিট হাঁটে তাহলে সে অনেক রকম সমস্যা থেকে নিজেকে দুরে রাখতে পারবে। এমনটা বলা হয়ে থাকে যে কেউ যদি প্রতিদিন সকালে নিয়ম করে হাঁটে তাহলে সে শারীরিক এবং মানসিক উভয় দিক থেকে ভালো থাকবে। আসুন আজ আমরা জেনে নেই নিয়মিত হাঁটলে কি কি উপকার পাওয়া যায় এবং সঠিক নিয়মে হাঁটার জন্য কিছু টিপস।

হাঁটার উপকারিতা:

নিয়মিত হাঁটলে হার্ট ভালো থাকে এবং হার্টে ব্লক তৈরি হয় না। হাঁটা দেহের রক্ত চলাচল বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ফলে ব্রেইন এবং হার্ট এট্যাকের ঝুকিও কম হয়।

প্রতিদিন হাঁটলে উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। নিয়মিত হাটলে ৬০% উচ্চরক্তচাপের রোগী ঔষধ ছাড়াই নিন্ত্রণে রাখতে পারেন।

হাঁটলে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং মেদ ভূড়িও কম হয়। হাঁটার ফলে রক্তে চর্বির পরিমান কমে যাওয়ার ফলে ধমণীতে ফলক সৃষ্টি হতে পারে না।

অনেকেরই বুকে এবং পেটে চর্বি জমার ফলে হৃদরোগের ঝুঁকিতে থাকেন। প্রতিদিন এক (১) ঘণ্টা হাঁটলে চর্বি কমে গিয়ে ঝুঁকিও কমে আসে। নিয়মিত হাঁটলে যাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি আছে তাদের মধ্যে প্রায় ৬৩% লোকের স্ট্রোকের ঝুকি কম হয়।

নিয়মিত হাঁটার ফলে হার্ট বিট প্রতিদিন ২০,০০০-৩০,০০০ বার স্পন্দিত হয় যার ফলে আপনার দৈনন্দিন বাড়তি কাজের চাপে হার্টের উপর প্রভাব কম পড়ে। এক বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন আট (৮) কিলোমিটার হাঁটেন, তাদের আয়ু বৃদ্ধি পায়।

যাদের ডায়বেটিকস আছে, তারা যদি প্রতিদিন হাঁটেন, তাহলে ডায়বেটিকস নিয়ন্ত্রণে থাকে।

হাঁটার ফলে রাতের ঘুম ভালো হয়, হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় ও ক্ষুধা বাড়ে।

নিয়মিত হাঁটায় কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি পায় ও কাজের প্রতি অনিহা থাকে না।

হাঁটার ফলে হার্ট, কিডনি, যকৃত ও ফুসফুসসহ অন্নান্য অঙ্গের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি পায়।

আরও পড়ুনঃ   বেশিদিন বাঁচতে হলে উচ্চ রক্তচাপকে দূরে রাখুন

সাধারণত ৩০ বছর বয়সের পর শরীরের চামড়া ঢিলা হতে থাকে। নিয়মিত হাঁটলে এ সমস্যার থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। যারা আগে থেকেই নিয়মিত হাঁটে, তাদের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে শরীরের চামড়া অনেক বয়স পর্যন্তও টান টান থাকে। যারা নিয়মিত হাঁটেন তারা ৭০ বছর বয়সেও বেশ শক্ত সবল থাকেন।

শরীরের ভিতর বিভিন্ন সমস্যা যেমন, ঝিমঝিম ভাব, বাত ব্যাথা, ম্যাচমেচে ভাব থাকা ইত্যাদি ভাব প্রতিদিন হাঁটার ফলে কমে যায়।

গবেষনায় দেখা যায় যেসকল মেয়েরা নিয়মিত হাঁটেন, তাদের ব্রেষ্ট ক্যান্সার হবার ঝুকি অন্য মেয়েদের থেকে ৪৫% কম থাকে। মনোবিজ্ঞানীদের মতে মন-মেজাজ ঝরঝরে এবং ভালো রাখতে হাঁটার উপরে ভালো কোন ঔষধ নাই।

রৌদ্রে হাঁটার ফলে আপনার দেহ ভিটামিন ডি পায়, যা সাধারণত খাবার থেকে আসে না এবং রৌদ্রে হাঁটার ফলে আপনি পেতে পারেন।

হাঁটা-হাঁটি শুরু করতে নিচের কিছু টিপস:

প্রথম দিনেই প্রচুর পথ হাঁটবেন না। প্রথম দিন অল্প থেকে শুরু করুন, এরপর প্রতি দু-তিন দিন পর পর সামান্য একটু পথ বাড়িয়ে নিন।

হাঁটবার সময় দেহ সোজা করে হাঁটবেন, কুজো বা বাঁকা হয়ে হাঁটবেন না।

হাঁটা শুরু করবার আগে অন্তত দুই (২) গ্লাস পানি পান করে নিবেন।

অফিস থেকে বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফেরবার সময় বাস থেকে আগের স্টপেজেই নেমে পড়ুন, এতে করে স্বাভাবিকের তুলনায় একটু বেশিই হাঁটা হবে।

হাঁটার জন্য পাতলা স্যান্ডেল বা জুতা হলে ভালো হয়। ভারী কোনো কিছু পরে বেশি হাঁটলে পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা হতে পারে।

আপনার যদি কোনো শারীরিক সমস্যা থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তারপর হাঁটবেন।

আয়ু বৃদ্ধি পায় ৩০ মিনিট হাঁটলেই!

ইসি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

19 + 1 =