নিয়মিত অশ্বগন্ধা খাওয়া উচিত কেন জানেন?

0
15428
অশ্বগন্ধার উপকারিতা

অশ্বগন্ধা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়; শক্তি, সামর্থ্য ও জীবনীশক্তি বৃদ্ধি করে; মানসিক উদ্বেগ, বিষণœতা ও অবসাদ দূর করে; বুদ্ধি, স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগ বাড়িয়ে তোলে; ব্রেইন সেল ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করে; শারীরিক ও মানসিক ভারসাম্য রক্ষা করে; ব্লাড সুগার স্বাভাবিক রাখে; হেপাটিক গ্লাইকোজেন ও হিমোগ্লোবিন লেভেল বৃদ্ধি করে; অকাল বার্ধক্য রোধে ভূমিকা রাখে; হাঁপানি, অ্যালার্জি এবং কফ নিরাময়ে কাজ করে; যৌনশক্তি বাড়িয়ে তোলে এবং হরমোন বাড়ায়।
প্রকাশিত এক নিবন্ধ থেকে জানা যায়, অশ্বগন্ধা মদপানের আসক্তি কমায়; কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে; মূত্রবর্ধক এবং কিছু বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা যায়, অশ্বগন্ধা ক্যানসার কোষ বৃদ্ধি প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

হাজার হাজার বছর ধরে প্রকৃতির মাঝে লুকিয়ে আছে একটি শক্তিশালী উপাদান। যার খোঁজ পয়েছেন যারা, তাদের জীবন গিয়েছে বদলে, আর যারা পাননি, তাঁদের পকেট হয়েছে ফাঁকা। কী বলছি ঠিক বুঝতে পারছেন না, তাই তো? সহজ কথায় প্রকৃতির ঝুলিতে এমন কিছু শক্তিশালী উপাদান সঞ্চিত রয়েছে, যা ক্যান্সারের মতো মারণ রোগের চিকিৎসাতেও কাজে আসেত পারে। কিন্তু সমস্যাটা হল এই প্রাকৃতিক সম্পদের বিষয়ে জানা আছে খুব কম সংখ্যক মানুষের। তাই তারা আজও আয়ুর্বেদ চিকিৎসার উপর ভরসা রাখতে না পেরে ছুটছে আধুনিক চিকিৎসার পিছনে। এতে একদিকে যেমন পকেট খালি হচ্ছে, তেমনি রোগ সেরে যাওয়ার গ্যারান্টিও মিলছে না। আজও প্রকৃতির শক্তিকে কাজে লাগিয়ে নিজের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটানোর সুযোগ যারা পাননি, তাদের কথা ভেবেই এই প্রবন্ধটি লেখার সিদ্ধান্ত নেওয়া। এই লেখায় এমন একটি গুল্মের সন্ধান দেওয়া হবে, যাকে গত ৩০০০ বছর ধরে কাজে লাগানো হচ্ছে নানা রোগের চিকিৎসায়। আর কেন হবে নাই বা বালুন! একাধিক আধুনিক গবেষণাতেও প্রমাণ মিলেছে যে নিয়মিত অশ্বগন্ধা গ্রহণ করলে একাধিক মারণ রোগের ফাঁদ থেকে নিস্তার পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে ক্যান্সারের মতো ভয়ঙ্কর রোগও দূরে থাকতে বাধ্য হয়। তাই রোগমুক্ত জীবনের স্বপ্ন যারা দেখেন, তাদের এই প্রবন্ধে একবার চোখ রাখতেই হবে। নিয়মিত এই প্রকৃতিক উপাদানটি খেলে সাধারণত যে যে উপকার পাওয়া যায়, সেগুলি হল…

১. থাইরয়েড রোগের চিকিৎসায় কাজে আসে: নিয়মিত এই প্রকৃতিক উপাদানটি খাওয়া শুরু করলে এমন ধরনের শারীরিক সমস্যার প্রকোপ কমতে একেবারেই সময় লাগে না। কারণ অশ্বোগন্ধার রস শরীরে প্রবেশ করার পর থাইরয়েড হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে রোগের প্রকোপ কমতে সময়ই লাগে না।

২. ডায়াবেটিস রোগকে দূরে রাখে: ইতিমধ্যেই আমাদের দেশ সারা বিশ্বের মধ্যে ডায়াবেটিস ক্যাপিটালে পরিণত হয়েছে। এমন পরিস্থিততে “সাইলেন্ট কিলার” নামে পরিচিত ডায়াবেটিস রোগ থেকে দূরে থাকতে অশ্বগন্ধাকে কাজে লাগানো যেতেই পারে। আসলে একাদিক গবেষণায় দেখা গেছে এই গুল্মটির শরীরে এমন কিছু অজানা উপাদান রয়েছে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে দারুনভাবে কাজে আসে। তাই যাদের পরিবারে ডায়াবেটিস রোগের ইতিহাস রয়েছে, তারা এই ঘরোয়া চিকিৎসার সাহায্য নিয়ে দেখতে পারেন। এমনটা করলে উপকার যে মিলবে, তা হলফ করে বলতে পারি।

আরও পড়ুনঃ   পাইলসের যন্ত্রণা কমানোর ঘরোয়া উপায়

৩. স্ট্রেস কমায়: অশ্বগন্ধায় উপস্থিত অ্যান্টি-স্ট্রেস প্রপাটিজ নিমেষে মানসিক চাপকে কমিয়ে ফেলতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, নিয়মিত এই মহৌষধিটি গ্রহণ করলে মস্তিষ্কের সার্বিক কর্মক্ষমতাও চোখে পরার মতো বৃদ্ধি পায়।

৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেহের রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থাকে শক্তপোক্ত করে তুলতে দারুনভাবে সাহায্য করে থাকে। আর ইমিউনিটি যখন একবার বেড়ে যায়, তখন ছোট-বড় কোনও রোগের পক্ষেই ক্ষতিসাধণ করা সম্ভব হয় না। প্রসঙ্গত, অশ্বগন্ধায় প্রচুর মাত্রায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ফলে এই প্রকৃতিক উপাদানটি প্রতিদিন খেলে সংক্রমণ সহ একাধিক রোগ নিয়ে কোনও চিন্তাই থাকে না। শুধু তাই নয়, গবেষণায় দেখা গেছে অশ্বগন্ধায় উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান শরীরে শ্বেত এবং লহিত রক্ত কণিকার মাত্রা বাড়ানোর পাশাপাশি প্লেটলেটের সংখ্যার বৃদ্ধি ঘটাতেও সাহায্য করে। সেই কারণেই তো এই গুল্মটি ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসাতেও এতটা কাজে আসে।

৫.রক্তাল্পতা দূর করে: বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত অশ্বাগন্ধার রস খাওয়া শুরু করলে শরীরের অন্দরে লহিত এবং শ্বেত রক্ত কণিকার উৎপাদন বেড়ে যায়। ফলে রক্তাল্পতার মতো সমস্যা দ্রুত কমে যায়। এই কারণেই তো অ্যানিমিকদের নিয়মিত এটি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন আয়ুর্বেদ চিকিৎসকেরা।

৬. অ্যাংজাইটির প্রকোপ কমায়: বেনারেস হিন্দু ইউনিভার্সিটির গবেষকদের করা এক গবেষণায় দেখা গেছে অশ্বগন্ধার অন্দরে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা অ্যাংজাইটি কমানোর পাশাপাশি ব্রেন পাওয়ার বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, আজকাল কাজের চাপ সহ আরও নানা কারণে যুবসমাজের মধ্যে যে ভাবে অ্যাংজাইটি এবং ডিপ্রেশনের মতো রোগের প্রকোপ বাড়ছে, তাতে অশ্বগন্ধার প্রয়োজনীয়তা যেন আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।

৭.ক্যান্সার রোগকে ধারে কাছেও ঘেঁষতে দেয় না: ড্রিঙ্কিং এবং স্মোকিং-এর তো কু-অভ্যাস নেই, তাহলে ভয় কিসের? সমীক্ষা বলছে এমন নেশা না থাকলেও আরও নানা কারণে শরীরে ক্যান্সার সেল জন্ম নিতে পারে। তাই সাবধান থাকাটা জরুরি। আর এক্ষেত্রে দারুনভাবে সাহায্য করতে পারে অশ্বগন্ধা। কারণ গবেষণা বলছে, এতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ক্যান্সার সেলের জন্ম নেওয়া যেমন আটকায়, তেমনি কেমোথেরাপির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

আরও পড়ুনঃ   যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে পেঁয়াজ

৮. খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়: আপনি কি অনিয়ন্ত্রিত কোলেস্টেরলের কারণে চিন্তায় রয়েছেন? তাহলে আজ থেকেই অশ্বগন্ধা খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলবে। কারণ এই প্রকৃতিক উপাদানটিতে উপস্থিত অ্যান্ট-ইনফ্লেমেটরি প্রপাটিজ এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট একদিকে যেমন রক্তে উপস্থিত খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়, তেমনি অন্যদিকে হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতিও বিশেষ ভূমিকা নেয়। এক কথায় হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়াতে অশ্বগন্ধার কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে।

৯. বাবা হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ায়: স্ট্রেস এবং অতিরিক্ত মাত্রায় কম্পিউটার ব্যবহারের কারণ অধিকাংশ পুরুষেরই স্পার্ম কাউন্ট কমছে। ফলে বাড়ছে বন্ধ্যাত্বের সমস্যা। কিন্তু এদিকে আমাদের জৈনন্দিন জীবন এমন হয়েছে যে কম্পিউটার বা স্ট্রেস থেকে দূরে থাকাও সম্ভব হচ্ছে না। তাহলে উপায় কী? এক্ষেত্রে নিয়মিত অশ্বোগন্ধা খাওয়া শুরু করতে হবে। কারণ একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত এই প্রকৃতিক উপাদানটি গ্রহণ করলে স্পার্ম কাউন্ট চোখে পরার মতো বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে বাবা হওয়ার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যাই হয় না। তাই বন্ধুরা সময় থাকতে থাকতে সাবধান হন, না হলে কিন্তু…!

সূত্রঃ বোল্ডস্কাই

আরও ৬টি উপকারিতা জেনে নিন-লিখেছেনঃ দুলন প্রভা

১. পায়ের ফুলোয়: প্রায়ই আমাশা হয়। আর এটা সেটা খেয়ে সাময়িক চাপা দেওয়া হচ্ছে, এর ফলে কিছুদিন বাদে আমরসের ফুলো পায়ে দেখা দিয়েছে, বুঝতে হবে এ আমরস রসবহ স্রোতকে দূষিত করেছে, এক্ষেত্রে অশ্বগন্ধার মূল চূর্ণ ১ গ্রাম মাত্রায় সকালে ও বিকালে থানকুনি (Centella asiatica) পাতার রস ৪ চা চামচ একটু গরম করে সেই জলীয়াংশটার সঙ্গে খেতে হবে; অথবা শ্বেত পুনর্নবার (Trianthema portulacastrum) রসও নেওয়া চলে। এই মুষ্টিযোগটি ব্যবহার করলে পায়ের ফুলোটা সেরে যাবে।

২. ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিসে: এটার আয়ুর্বেদিক নাম তমক শ্বাস। এই রোগের উপসর্গ হলো রোগী কেসেই চলেছেন কিন্তু সর্দি ওঠার নামগন্ধ নেই। এক্ষেত্রে অশ্বগন্ধার মূল চূর্ণ এক বা দেড় গ্রাম মাত্রায় নিয়ে গাওয়া ঘি এক চা চামচ ও মধু আধ চা চামচ মিশিয়ে সকালের দিকে একবার ও বিকালের দিকে একবার একটু একটু করে চেটে খেতে হবে।

৩ দৈব ঔষধ: এই ক্রমিক ব্রঙ্কাইটিসে অনেকে ভেলকিবাজী দেখিয়ে থাকেন। এই অশ্বগন্ধার মূলকে অন্তর্ধূমে পুড়িয়ে ভাল করে গুড়িয়ে নিয়ে আধ গ্রাম মাত্রায় একটু মধু মিশিয়ে চেটে খেতে বলেন। পোড়া দেওয়ার নিয়ম হচ্ছে একটু ছোট মাটির হাঁড়ির মধ্যে মূলগুলোকে পুরে, মাটির সরা ঢাকা দিয়ে পুনরায় মাটি লেপে শুকিয়ে, ঘুঁটের আগুনে লঘুপুট দিতে হবে। আগুন নিভে গেলে ওটাকে বের করে ঐ পোড়া অশ্বগন্ধার মূলগুলোকে গুঁড়ো করে নিতে হবে।

আরও পড়ুনঃ   অশ্বগন্ধা কি, কেন, কিভাবে খাবেন এবং অশ্বগন্ধার উপকারিতা ও অপকারিতা

৪. কার্শ্য রোগ: এ রোগটা শিশুদেরই বেশি দেখা যায়। এই রোগের কারণ হলো প্রথমে রসবহ স্রোত দূষিত হয়, ফলে যেটি সে খায়, সেটা থেকে তার পোষণ হয় না; তার পরিণতিতে রক্তমাংসও আর বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় না।

অনেকের ধারণা, বাইরে থেকে কোনো স্নেহজাতীয় পদার্থ মালিশ করলে ওটার পুষ্টি হবে, আভ্যন্তরিক কোনো কিছু খাওয়ানোর প্রয়োজন নাই; এর ফলে আরও খারাপের দিকে যেতে থাকে, অর্থাৎ অস্থিক্ষয় হতে থাকে। এক্ষেত্রে তাকে অশ্বগন্ধার মূল চূর্ণ আধ গ্রাম মাত্রায় দুইবার গরম দুধ ও চিনিসহ খেতে দিতে হয়। পরে শরীরে গঠন আরম্ভ হলে এটা এক গ্রাম পর্যন্তও দেওয়া যায়, কমপক্ষে ৩ থেকে ৪ মাস খাওয়াতে হয়।

৫. বুক ঘড়ফড়ানিতে: হৃদযন্ত্রের কোনো দোষ যন্ত্রে ধরা পড়ে না, পিপাসা বেশি, পেটে বায়ু, একটু আধটু যে হয় না তা নয়, তবে এটা তো অনেকেরই হয় ; সেটা কিন্তু ঠিক কারণ নয়; আসলে রক্তবহ স্রোতের বিকার চলছে, তাই এটি অসুবিধা। এই ধরনের ক্ষেত্রে অশ্বগন্ধার মূল চূর্ণ এক গ্রাম থেকে দেড় গ্রাম মাত্রায় দুই বেলা দুধসহ কয়েকদিন খেলে ওটা সেরে যাবে।
৬. ফোড়ায়: এ ফোড়া না পাকা না কাঁচা যাকে বলে দরকচা মেরে আছে, সেক্ষেত্রে অশ্বগন্ধার মূল বেটে একটু, গরম করে ফোড়ার উপর সকালে বিকালে ২ বার করে লাগালে ওটা পেকে ফেটে যাবে।

অশ্বগন্ধার রাসায়নিক উপাদান: (a) Alkaloids. (b) Withanoliide, (c) Terpenoids.

সতর্কীকরণ: ঘরে প্রস্তুতকৃত যে কোনো ভেষজ ওষুধ নিজ দায়িত্বে ব্যবহার করুন।

তথ্যসূত্রঃ

১. আয়ূর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্রচার্য, চিরঞ্জীব বনৌষধি‘ খন্ড ২, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রথম প্রকাশ ১৩৮৩, পৃষ্ঠা, ১৬২-১৬৬।

প্রাচীনকাল থেকেই আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাশাস্ত্রে অশ্বগন্ধা ব্যবহার হয়ে আসছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে প্রায় তিন হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে অশ্বগন্ধা ট্র্যাডিশনাল হার্বস হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে বলে জানা যায়। এ পর্যন্ত অশ্বগন্ধা নিয়ে দুইশর বেশি গবেষণা সম্পন্ন হয়েছে। এসব গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্য মতে যেসব ক্ষেত্রে অশ্বগন্ধার কার্যকারিতা পাওয়া যায়, তার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি উপরে তুলে ধরা হলো।

আরও পড়ুনঃ অশ্বগন্ধার এই গুণগুলির কথা জানতেন?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

1 − one =