ফুসফুস মেরুদণ্ডী প্রাণীর একটি অঙ্গ যা শ্বাস-প্রশ্বাসের কাজে ব্যবহৃত হয়। এই শ্বাসযন্ত্রটির প্রধান কাজ হলো বাতাস থেকে অক্সিজেনকে রক্তপ্রবাহে নেওয়া এবং রক্তপ্রবাহ হতে কার্বন ডাই-অক্সাইডকে বাতাসে নিষ্কাশন করা। এই গ্যাস আদান-প্রদান করা হয় বিশেষায়িত কোষ দ্বারা তৈরী, খুবই পাতলা দেয়াল বিশিষ্ট লক্ষাধিক বায়ু থলির দ্বারা যাকে অ্যালভীওলাই বলে। এর শ্বাসকার্য ছাড়া অন্য কাজও আছে। ফুসফুস সংক্রান্ত মেডিকেল পরিভাষা শুরু হয় পালমো- (pulmo-),[ল্যাটিন-পালমোনারিয়াস (pulmonarious) (“ফুসফুসের”)] অথবা নিউমো- (pneumo-)[গ্রিক- πνεύμω “ফুসফুস”] দ্বারা।
ফুসফুস সমূহ হৃৎপিন্ড ও বৃহৎ ধমনীগুলোকে বক্ষগহব্বরের ভেতর চারপাশ হতে জরিয়ে রেখেছে
ধূমপায়ী ব্যক্তিরা ‘জেনে শুনে বিষ করেছি যে পান’ কথাটি অহরহ বলে থাকেন। প্রকাশ্যে না হলেও, গোপনে তো বটেই। যখনই জিজ্ঞাসা করা হোক উত্তর একটাই, অনেকটা কমিয়ে ফেলেছেন। কিংবা সামনের মাস থেকেই এই কু-অভ্যাসকে বিদায় জানাবেন, এই গোছের কিছু হামেশাই তাঁদের মুখে শোনা যায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ছাড়া আর হয়ে ওঠে না। এ দিকে, ধূমপানের ফলে ফুসফুস বেচারার যে অবস্থা কাহিল। দীর্ঘ দিনের কু-অভ্যাসের ফলে শরীরে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গটি ভয়ানক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রতি দিন। ফুসফুস বাঁচাতে সব থেকে ভালো হয় যদি ধূমপানকে চিরতরে বিদায় জানাতে পারেন। ধূমপান যে ক্যান্সারের কারণ তা আর নতুন করে জানানোর প্রয়োজন নেই। যাঁরা ধনুকভাঙা পণ করেছেন যে প্রাণ যায় যাক, ধূমপান ছাড়ার প্রশ্ন নেই, তাঁদের জন্য কলকাতার এই সময় পত্রিকা অবলম্বনে একটি উপায়ের সন্ধান দিচ্ছি আমরা। এতে অন্তত ফুসফুসকে খানিকটা চাঙ্গা করে তুলতে পারেন।
মাত্র দুই দিনেই ফুসফুসের সব ময়লা পরিষ্কার করে ফেলুন, যেভাবে করবেন দেখুন
আর শুধু ধূমপান কেন, না চাইতেই সারাদিনে যে পরিমাণ ধুলো-ধোঁয়া নিশ্বাসের মাধ্যমে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে তারও ফল যে খুব ভালো তেমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই। যাঁরা ধূমপান করেন না, এমন ব্যক্তিরও ফুসফুস ভয়ানক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এর জন্য। বিশেষত যাঁরা রাস্তার ঘুরে কাজ করেন, বা দিনের বেশিরভাগ সময়টা জনবহুল রাস্তার কাটাতে হয়। সকলের জন্য রইল একটি ম্যাজিক পেস্টের রেসিপি। বাড়িতে বানিয়ে ট্রাই করে দেখুন, কয়েক দিনের মধ্যে ফল বুঝতে পারবেন।
ম্যাজিক পেস্ট বানাতে যা যা লাগবে:
১) পানি এক লিটার
২) পেঁয়াজ এক কিলো
৩) আদা ৫০ গ্রাম
৪) মধু ৪০০ গ্রাম
৫) হলুদ গুঁড়ো ২ চা চামচ
ফুসফুস থেকে ময়লা দূর করতে মিশ্রণ তৈরী প্রণালী:
প্রথমে পানিের মধ্যে মধু মেশান। পাত্রটি অল্প আঁচে বসিয়ে দিন। পানি ফুটে উঠলে ওর মধ্যে কুঁচো করে কাটা পেঁয়াজ এবং আদার পেস্ট দিয়ে দিন। এই নতুন মিশ্রণটি ফের ফুটে উঠলে তাতে হলুদ মেশান। তার পর আঁচ একদম কমিয়ে দিন। যখন মিশ্রণটি অর্ধেক হয়ে যাবে, তখন পাত্রটি নামিয়ে একটু ঠান্ডা করে মিশ্রণটি ছেঁকে শুধুমাত্র পানিটি একটি কাঁচের জারের মধ্যে রেখে দিন। পুরো ঠান্ডা হয়ে গেলে জারটি ফ্রিজের মধ্যে রেখে দিন। দেখবেন ঠান্ডা হওয়ার পর মিশ্রণটি ঘন হয়ে যাবে। অথবা উপরের কথা না বুঝলে নিচের মত করুন ।
যেভাবে তৈরি করবেন:
১। প্রথমে পানিতে মধু দিয়ে জ্বাল দিন।
২। এবার এতে পেঁয়াজ কুচি, আদা কুচি, হলুদ গুঁড়ো দিয়ে নিন।
৩। যখন এটি বলক আসবে তখন চুলা কমিয়ে দিন।
৪। তরলটি ঘন হয়ে অর্ধেক না হওয়া পর্যন্ত জ্বাল দিতে থাকুন।
৫। জ্বালের মাঝে মাঝে নাড়তে থাকুন।
৬। ঘন হয়ে গেলে নামিয়ে ফেলুন।
৭। ঠান্ডা হয়ে গেলে ফ্রিজে রেখে দিন।
যেভাবে খাবেন:
প্রত্যেক দিন সকালে খালি পেটে ২ চা চামচ খান। এবং রাতে খাওয়ার ২ ঘণ্টা আগে ২ চা চামচ খান। অর্থাৎ দিনে দুইবার এটি খান। অন্তত এটি খাওয়ার আধা ঘন্টার মধ্যে কোন কিছু খাবেন না। সপ্তাহ খানেকের মধ্যে তফাত নিজেই বুঝতে পারবেন।
বিশেষত, যাঁরা ধূমপান করেন, সারা বছর একটা কাশি থাকে। সপ্তাহ খানেকের মধ্যে সেটা অনেক কমে যাবে। রোজ ব্যবহার করলে ফুসফুস ভালো রাখতে পারবেন। বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণটি আবার বলছি, ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার পর এই পদ্ধতি খুব ভালো কাজ করবে। ধূমপান ছাড়ার কোনও বিকল্প নেই। ধূমপান আপনার শুধু ফুসফুস নয়, সম্পূর্ণ দেহের ক্ষতি করে থাকে। আপনি যদি একান্তই ধূমপান ত্যাগ করতে না পারেন, তবে এই পানীয়টি পান করুন। এটি আপনার ফুসফুস পরিস্কার করে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।