আমরা সকলেই জানি চিনি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্যে ক্ষতিকর। অথচ মিষ্টি জাতীয় খাদ্যের প্রতি আমাদের অস্বাভাবিক আকর্ষণ! বিশেষ করে মিষ্টি কোমল পানীয়ের প্রতি সকলের আকর্ষণটা আলাদাভাবে চোখে পড়ার মতো। যেকোন অনুষ্ঠানে অথবা ভারী কোন খাবার খাওয়ার সময় কোমল পানীয় না থাকলে যেন সবকিছু অপূর্ণ হয়ে যায়। কিন্তু খুবই দুঃখের সাথে জানাতে হচ্ছে যে, সুইডেনের বিজ্ঞানীরা কোমল পানীয় এবং ক্যান্সারের মাঝে গভীর যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছেন!
গবেষণা মতে, যারা অতিরিক্ত কোমল পানীয় পান করেন, তাদের গলব্লাডারে ক্যান্সার এবং লিভারে বাইল ডাক্ট ক্যান্সার হবার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এখনও পর্যন্ত এমন ধরণের ক্যান্সার হওয়ার কারণ সম্পর্কে খুব কম তথ্যই জানা গেছে। তবে প্রমাণ ও তথ্যাদি জানাচ্ছে ওবেসিটি এবং রক্তে চিনির মাত্রা বৃদ্ধির কারণ হচ্ছে যেকোন ধরণের মিষ্টিজাত কোমল পানীয়।
যেহেতু কোমল পানীয়তে থাকে প্রচুর পরিমাণে স্যাচুরেটেড চিনি, সেহেতু ডায়বেটিসের সমস্যার সাথে এটার সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। এছাড়াও রক্তচাপ বৃদ্ধি, ওবেসিটি এবং অন্যান্য সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যার সাথেও কোমল পানীয় জড়িত। জানিয়েছেন সুইডেনের কারোলিন্সকা ইনস্টিটিউটের প্রধান গবেষক সুসান্না ল্যারসোন।
সম্ভবনাকে হাতে রেখেই গবেষকেরা ৭০,০০০ পূর্ণবয়স্ক মানুষের প্রতিদিনের খাদ্য ও পানীয় গ্রহণের অভ্যাসের তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন। ১৩ বছর ধরে বিজ্ঞানীরা নোট তৈরি করেছেন, উক্ত মানুষদের মাঝে কারোর কোন ধরণের ক্যান্সার ধরা পড়ে কিনা!
গবেষণার ফলাফল জানায়, শুধুমাত্র ১৫০ জন মানুষের বিলিয়ারি ট্র্যাক্ট অথবা গলব্লাডারে পাথর ধরা পড়ে। এরপরে গবেষণার ফলাফল তাদের সাথে মিলিয়ে দেখা হয়, যারা মিষ্টিজাত কোমল পানীয় পান থেকে একেবারেই বিরত ছিলেন। এর ফলাফল ছিল খুবই চমকপ্রদ। যারা মিষ্টিজাত কোমল পানীয় অথবা কৃত্রিম চিনিযুক্ত কোমল পানীয় পান করতেছেন তাদের গলব্লাডারে টিউমার ও বিলিয়ারি ট্র্যাক্টে ক্যান্সার হবার সম্ভবনা ৭৯% বেড়ে যায়। ল্যারসনের মতে এটাই প্রথম গবেষণা যা প্রকাশ করে, মিষ্টিজাত কোমল পানীয় পান করা এবং বিলিয়ারি ট্র্যাক্টে ক্যান্সার দেখা দেবার মাঝে দৃঢ় সংযোগ রয়েছে। তবে এটা ছিল অনেকটাই পর্যবেক্ষনমূলক পরীক্ষা।
সকলেরই এই পর্যবেক্ষন থেকে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। মিষ্টিজাত কোমল পানীয় কখনোই স্বাস্থ্যকর কোন পানীয় নয়। কোমল পানীয় পানের ফলে শরীরে সরাসরি ক্যান্সার তৈরি না হলেও, তার রয়েছে বহুবিধ নেতিবাচক প্রভাব যেগুলোর ফলাফল হিসেবে ক্যান্সার দেখা দিতে পারে। এ কারণে সচেতনভাবেই কোমল পানীয় এড়িয়ে চলা প্রয়োজন।
সূত্র: Peace Quarters
-কে এন দেয়া