ধূমপান জিনিসটা আর আগের মতো ‘ফ্যাশনেবল’ নেই।
গত কয়েক দশকে ধূমপান নিরুৎসাহিত করতে এত কিছু করা হয়েছে যে সিগারেট খাওয়াটা অন্তত উন্নত বিশ্বে একটা প্রান্তিক এবং ‘খারাপ’ অভ্যাস হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এখন পশ্চিমা দেশে সিগারেটের প্যাকেট হয় সাদা, তাতে ধূমপানজনিত নানা রোগের বীভৎস ছবি থাকে – যা দেখে হয়তো অনেকেই সিগারেট খাবার ইচ্ছে চলে যাবে।
অনেকেই মনে করছেন, চিনি, শর্করা বা সুগারকে নিয়েও হয়তো এরকমই একটা কিছু করতে হবে।
সুগার-ভর্তি পানীয় বা কোমল পানীয়ের ওপর এখনই প্রচুর কর আরোপ করা হয়েছে। এখন ব্রিটেনের ইনস্টিটিউট অব পাবলিক পলিসি রিসার্চ নামে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বলছেন, এসব পানীয়, এবং মিষ্টি ও স্ন্যাকস-কেও সাদা মোড়কে বাজারজাত করা উচিত – যাতে একে কম আকর্ষণীয় দেখায়।
অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় জিনিস খাও কমাতেই এটা করা দরকার – এক রিপোর্টে বলছেন তারা।
ব্রিটেনের জাতীয় ডায়েট এ্যান্ড নিউটিশন সার্ভে নামের এক জরিপে দেখা গেছে, একজন টিনএজারের (মোট ক্যালরির অংশ হিসেবে) যতটুকু সুগার খাওয়া উচিৎ – প্রকৃতপক্ষে সে তার তিনগুণ বেশি খাচ্ছে।
আইপিপিআরের পরিচালক টম কিবাসি বলছেন, প্লেইন প্যাকেজিং অর্থাৎ মিষ্টিজাতীয় জিনিসকে অনাকর্ষণীয় সাদা প্যাকেটে বিক্রি করা শুরু করলে অতিরিক্ত সুগার খাওয়া নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে এক বড় পরিবর্তন ঘটতে পারে।
এর সাথে জাংক ফুড বা চটজলদি খাবারের বিজ্ঞাপন প্রচারে নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথাও বলেছেন তিনি।
ব্রিটেনে সরকারের মন্ত্রীরাও বিষয়টি নিয়ে ভাবছেন বলে খবর বেরিয়েছে।
কিন্তু অনেকে প্রশ্ন করছেন যে ব্যাপারটা বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে কিনা।
চিনি-মেশানো খাবার উৎপাদন-বাজারজাতকরণের সাথে যুক্ত বড় প্রতিষ্ঠানগুলো ইতিমধ্যেই এ নিয়ে আপত্তি তুলেছে। তারা বলছে এটা বাণিজ্যিক ও প্রতিযোগিতার স্বাধীনতার বিরোধী।
কিন্তু তামাক শিল্পও এক সময় এই একই যুক্তি তুলে ধরেছিল, কিন্তু তা সরকারের কঠোর ধূমপানবিরোধী অবস্থানকে দমাতে পারেনি।
ব্রিটেনে যখন স্বাস্থ্য আন্দোলনকারী ও শিক্ষাবিদরা জনসমাগম হয় এমন জায়গায় ধূমপান নিষিদ্ধ করার দাবি জানাচ্ছিলেন, তখন প্রথম দিকে সরকার তা উপেক্ষা করেছিল। কিন্তু পরে তা পরিবর্তিত হতে থাকে।
নানা রকম পদক্ষেপ নেবার ফলে ব্রিটেনে গত ১০ বছরে ধূমপায়ীর সংখ্যা এক তৃতীয়াংশ কমে গেছে। এর কারণ হিসেবে অনেকে ভেপিং বা ই-সিগারেটের আবিষ্কারের কথাও বলেন কিন্তু কঠোর সরকারি নীতি নি:সন্দেহে একটা বড় ভুমিকা পালন করেছে।
তাই চিনিজাতীয় খাবারের ক্ষেত্রেও সরকারি নীতি একটা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখতে পারে বলে অনেকে মনে করেন।
সূত্র : বিবিসি
This is a topic which is close to my heart…
Many thanks! Where are your contact details though?