কেন আপনার পুষ্টি উপাদানে অনন্য আমড়া খাওয়া উচিত ?

0
772
আমড়া,সর্দি কাশি

দেশীয় ফলের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় পুষ্টিগুণে ভরা আমড়া।সহজলভ্য মজার স্বাদের এই ফলটি পছন্দ করেন ছোট-বড় সকলেই।শুধু ফল হিসেবেই নয় চাটনি, ভর্তা, তরকারি হিসেবেও এর অনেক কদর।আমড়া সারা বছরেই বাজারে পাওয়া যায়। তবে বর্ষা ঋতুতে বেশি থাকে। সাধারণ ফল বিক্রেতাদের কাছে তো বটেই, ভ্রাম্যমাণ ফল ও আচার বিক্রেতাদের কাছেও মেলে এই ফল। লবণ-মরিচের গুঁড়ো দিয়ে মেখে খেতে খুবই চমৎকার। বর্তমানে বাজারে এই ফলের বেশ আধিক্য।বাংলাদেশে দু’ধরনের আমড়া চাষ হয়। দেশি আমড়া ও বিলাতি আমড়া। তবে দেশি আমড়ার চাষ ইদানীং একেবারেই কমে গেছে। এর স্থান দখল করে নিয়েছে বিলাতি আমড়া। বিলাতি আমড়া দেশি আমড়ার মতো টক নয়। এটি খেতে টক-মিষ্টি স্বাদের। এতে শাঁস বেশি, আকারেও বড়। বিলাতি আমড়া কাঁচা খাওয়া হয়। বিলাতি ও দেশি দু’ধরনের আমড়া থেকেই সুস্বাদু আচার, চাটনি এবং জেলি তৈরি করা যায়। তরকারি হিসেবে রান্না করেও আমড়া খাওয়া যায়।

মুখে রুচি বৃদ্ধিসহ অসংখ্য গুনাগুন রয়েছে আমড়ার। পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আমড়ায় প্রচুর পরিমান ভিটামিন সি, আয়ারন, ক্যালসিয়াম আর আঁশ আছে, যেগুলো শরীরের জন্য খুব দরকারি। হজমেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই তেল ও চর্বিযুক্ত খাদ্য খাওয়ার পর আমড়া খেয়ে নিতে পারেন; হজমে সহায়ক হবে।

আমড়ায় প্রচুর ভিটামিন সি থাকায় এটি খেলে স্কার্ভি রোগ এড়ানো যায়। বিভিন্ন প্রকার ভাইরাল ইনফেকশনের বিরুদ্ধেও লড়তে পারে আমড়া। অসুস্থ ব্যক্তিদের মুখের স্বাদ ফিরিয়ে দেয়। সর্দি-কাশি-জ্বরের উপশমেও আমড়া অত্যন্ত উপকারী।

শিশুর দৈহিক গঠনে ক্যালসিয়াম খুব দরকারি। ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস এই আমড়া। শিশুদের এই ফল খেতে উৎসাহিত করতে পারেন। এছাড়া এটি রক্তস্বল্পতাও দূর করে। কিছু ভেষজ গুণ আছে আমড়ায়। এটি পিত্তনাশক ও কফনাশক। আমড়া খেলে মুখে রুচি ফেরে, ক্ষুধা বৃদ্ধিতেও সহায়তা করে।

এছাড়া আমড়ায় থাকা ভিটামিন সি রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। খাদ্যে থাকা ভিটামিন এ এবং ই এটির সঙ্গে যুক্ত হয়ে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে দেহকে নানা ঘাত-প্রতিঘাত থেকে রক্ষা করে।
আমড়ার আচার। ছবি: সংগৃহিত

আরও পড়ুনঃ   মধুতে আমলকি ভিজিয়ে খেলে কী হয়?

প্রতি ১০০ গ্রাম ভক্ষণযোগ্য আমড়ায় ১ দশমিক ১ গ্রাম প্রোটিন, ১৫ গ্রাম শ্বেতসার, শূন্য দশমিক ১০ গ্রাম স্নেহ জাতীয় পদার্থ এবং ৮০০ মাইক্রোগ্রাম ক্যারোটিন আছে। এ ছাড়াও আছে শূন্য দশমিক ২৮ মিলিগ্রাম থায়ামিন, শূন্য দশিমক শূন্য চার মিলিগ্রাম রিবোফ্লাভিন, ৯২ মিলিগ্রাম ভিটামিন-সি, ৫৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম এবং তিন দশমিক নয় মিলিগ্রাম লৌহ। আমড়ার খাদ্যশক্তি ৬৬ কিলোক্যালোরি। খনিজ পদার্থ বা মিনারেলসের পরিমাণ শূন্য দশমিক ছয় গ্রাম।

আসুন বিস্তারিত জেনে নিই আমড়ার কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপকারের কথা, যা হয়তো আমরা আগে জানতাম না।

১) ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ (a source of calcium):

ক্যালসিয়ামের অভাবে হাড়ের রোগ, মাংস পেশীর খিঁচুনি ছাড়াও যে সকল সমস্যা দেখা যায় আমড়া তা প্রতিরোধ করে। তাই প্রতিদিনের ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণে আমরা আমড়ার সাহায্য নিতে পারি।

২) ত্বক ভাল রাখে (for skincare):

ত্বকের ব্রণ কমাতে, ত্বক উজ্জ্বল রাখতে আমড়া দারুণ উপকার করে থাকে। আমড়ায় প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে। আর ভিটামিন ‘সি’ ত্বক উজ্জ্বল রাখতে অত্যন্ত দরকার। তাই ত্বক সুস্থ ও উজ্জ্বল রাখতে খেতে পারেন আমড়া।

৩) রক্তস্বল্পতা রোধ করে (for the prevention of anemia):

আমড়ায় প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকার কারণে এটি রক্তস্বল্পতা রোধে কার্যকর ভুমিকা পালন করে থাকে। সাথে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা সঠিক পর্যায়ে রাখে।

৪) বদহজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে (cures digestive problems):

আমড়াতে রয়েছে বিভিন্ন দ্রবণীয় ফাইবার এবং ফাইবার পাকস্থলীর ক্রিয়া প্রক্রিয়া স্বাভাবিক পর্যায়ে রাখে। ফলে বদ হজম, পেট ফাঁপা, কোষ্ঠকাঠিন্যের মত অস্বস্তিকর রোগ গুলোকে দূরে রাখার জন্য সাহায্য নিতে পারেন আমড়ার।

৫) সর্দি কাশি,ইনফ্লুঞ্জার বিরুদ্ধে কাজ করে (fights against common cold, influenza):

বিভিন্ন ভাইরাসের আক্রমন থেকে রক্ষা করা ছাড়াও আমড়া সর্দি কাশি, ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগের জীবাণুর বিরুদ্ধে কাজ করে। যার ফলে নানা সংক্রমণ থেকে সহজেই বেঁচে থাকা যায়।

আরও পড়ুনঃ   ইলিশ মাছের গুণাগুণ

আমড়া (ambarella) একটি সহজলভ্য ফল। রাস্তায় পথ চলতে চলতে খেয়ে নিতে পারেন একটি আমড়া। তবে রাস্তা থেকে কিনলে প্রথমে তা পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালভাবে ধুয়ে নিতে হবে।

হৃৎপিণ্ডে রক্ত চলাচলে সাহায্য করে আমড়া!

বিঃ দ্রঃ গুরুত্বপূর্ণ হেলথ নিউজ ,টিপস ,তথ্য এবং মজার মজার রেসিপি নিয়মিত আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে লাইক দিন আমাদের ফ্যান পেজ বিডি হেলথ নিউজ এ ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

8 − one =