আপনি কি জানেন, পবিত্র কুরআনে কোন ছয়টি ফলের কথা আলোচিত হয়েছে?

0
869
কুরআনের ফল

একই পৃথিবী কিন্তু এর ভুখন্ডগুলোর প্রত্যেকের বর্ণ, আকৃতি ও বৈশিষ্ট আলাদা। একই জমি ও একই পানি, কিন্তু তা থেকে বিভিন্ন প্রকার ফল ও ফসল উৎপন্ন হচ্ছে। একই গাছ কিন্তু তার প্রত্যেকটি ফল একই জাতের হওয়া সত্ত্বেও তাদের আকৃতি, আয়তন ও অন্যান্য বৈশিষ্ট সম্পূর্ণ আলাদা। একই মূল থেকে দুটি ভিন্ন গাছ বের হচ্ছে এবং তাদের প্রত্যেকই নিজের একক বৈশিষ্টের অধিকারী। যে ব্যক্তি এসব বিষয় নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করবে সে কখনো মানুষের স্বভাব, প্রকৃতি, ঝোঁক-প্রবণতা ও মেজাজের মধ্যে এতবেশি পার্থক্য দেখে পেরেশান হবে না। যদি আল্লাহ চাইতেন তাহলে সকল মানুষকে একই রকম তৈরি করতে পারতেন কিন্তু যে জ্ঞান ও কৌশলের ভিত্তিতে আল্লাহ এ বিশ্ব-জাহান সৃষ্টি করেছেন তা সমতা, সাম্য ও একাত্মতা নয় বরং বৈচিত্র ও বিভিন্নতার প্রয়াসী। সবাইকে এক ধরনের করে সৃষ্টি করার পর তো এ অস্তিত্বের সমস্ত জীবন প্রবাহই অর্থহীন হয়ে যেত। আল্লাহপাক পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেছেন, আর তিনিই আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করেছেন। তারপর তার সাহায্য সব ধরনের উদ্ভিদ উৎপাদন করেছন। এরপর তা থেকে সবুজ শ্যামল ক্ষেত ও বৃক্ষ সৃষ্টি করেছেন। তারপর তা থেকে ঘন সন্নিবিষ্ট শস্যদানা উৎপাদন করেছেন। আর খেজুর গাছের মাথি থেকে খেজুরের কাঁদির পর কাঁদি সৃষ্টি করেছেন, যা বোঝার ভারে নুয়ে পড়ে। আর সজ্জিত করেছেন আঙুর, যয়তুন ও ডালিমের বাগান। এসবের ফলগুলো পরস্পরের সাথে সাদৃশ্যও রাখে আবার প্রত্যেকে পৃথক বৈশিষ্টেরও অধিকারী। গাছ যখন ফলবান হয় তখন এর ফল ধরা ও ফল পাকার অবস্থাটি একটু গভীর দৃষ্টিতে নিরীক্ষণ করো এসব জিনিসের মধ্যে ঈমানদারদের জন্য নিদর্শন রয়েছে। (সূরা-আল আনআম, আয়াত-৯৯) এখানে এমন কিছু ফলের কথা উল্লেখ করছি যেই ফলগুলোর কথা আল্লাহপাক কুরআনে উল্লেখ করেছেন।

কলা: পবিত্র কুরআনে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, তারা কাঁটাবিহীন কুল গাছের কুল। থরে বিথরে সজ্জিত কলা। দীর্ঘ বিস্তৃত ছায়া। সদা বহমান পানি। অবাধ লভ্য অনিশেষ যোগ্য। প্রচুর ফলমূল। (সূরা-আল ওয়াকিয়াহ, আয়াত-২৮-৩৩)

আরও পড়ুনঃ   আমি কিভাবে বীর্য ও কামরসের মাঝে পার্থক্য করতে পারি? সেটা কি গন্ধের মাধ্যমে?

জয়তুন: পবিত্র কুরআনে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, আর সিনাই পাহাড়ে যে গাছ জন্মায় তাও আমি সৃষ্টি করেছি তা তেল উৎপাদন করে এবং আহারকারীদের জন্য তরকারীও। (সূরা-আল মুমিনুন, আয়াত-২০) এই আয়াতে জয়তুনের কথা বলা হয়েছে। ভুমধ্যসাগরের আশপাশের এলাকার উৎপন্ন দ্রব্যাদির মধ্যে এর গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। এ গাছগুলো দেড় হাজার দুহাজার বছর বাঁচে। এমনকি ফিলিস্তিনের কোনো কোনো গাছের দৈঘ্য, স্থুলতা ও বিস্তার দেখে অনুমান করা হয় যে, সেগুলো হজরত ঈসা (আ.) এর যুগ থেকে এখনো চলে আসছে। সিনাই পাহাড়ের সাথে একে সম্পর্কিত করার কারন সম্ভবত এই যে, সিনাই পাহাড় এলাকার সবচেয়ে পরিচিত ও উল্লেখযোগ্য স্থানই এর আসল স্বদেশ ভূমি।

খেজুর: পবিত্র কুরআনে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন,  আর দেখ, পৃথিবীতে রয়েছে পরস্পর সংলগ্ন আলাদা আলাদা ভূখ-, রয়েছে আঙুর বাগান, শস্যক্ষেত, খেজুর গাছ- কিছু একাধিক কা-বিশিষ্ট আবার কিছু এক কাণ্ড বিশিষ্ট, সবাই সিঞ্চিত একই পানিতে কিন্তু স্বাদের ক্ষেত্রে আমি করে দেই তাদের কোনটাকে বেশি ভালো এবং কোনটাকে কম ভালো। এসব জিনিসের মধ্যে যারা বুদ্ধিকে কাজে লাগায় তাদের জন্য রয়েছে বহুতর নিদর্শন। (সূরা-আর রাদ, আয়াত-০৪)

নবী মুহাম্মদ (সা.) তার একটি হাদিসে হজরত আব্দুল্লাহ বিন উমরের (রা.) বর্ণিত হাদিসে বলেছেন, গাছের মধ্যে একটি গাছ আছে যা একটি মুসলিম অনুরূপ। তার পাতা পড়ে না ওই গাছটা কি? নবী (সা.) নিজেই বলেছিলেন, এটাই খেজুর গাছ।

আঙুর: পবিত্র কুরআনে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, তারপর এ পানির মাধ্যমে আমি তোমাদের জন্য খেজুর ও আঙুরের বাগান সৃষ্টি করেছি। তোমাদের জন্যই এ বাগানগুলোয় রয়েছে প্রচুর সুস্বাদু ফল এবং সেগুলো থেকে তোমরা জীবিকা লাভ করে থাক। (সূরা-আল মুমিনুন, আয়াত-১৯)

এসব বাগানের উৎপন্ন দ্রব্যাদি, ফল, শস্য, কাঠ এবং অন্যান্য যেসব দ্রব্য তোমরা বিভিন্নভাবে সংগ্রহ করো, এসব থেকে তোমরা নিজেদের জন্য জীবিকা আহরণ করো।

আরও পড়ুনঃ   ইসলামে স্বাস্থ্য সচেতনতার তাগিদ

ডুমুর: ডুমুর ও যায়তুন। সিনাই পর্বত। এবং এই নিরাপদ নগরীর (মক্কা) কসম। আমি মানুষকে পয়দা করেছি সর্বোত্তম কাঠামোয়। (সূরা- আয়াত-১-৪)

মিরাজ রহমান

সূত্র: মুসলিমস্টোরিজ.টপ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

eighteen + nineteen =