লিভার ও হার্ট সুরক্ষায় খেতে পারেন কদবেল

0
574
কদবেল

পেটের হজম সমস্যা দারুণ কাজ করে মৌসুমী ফল কদবেল। হজম সমস্যায় তাই হরহামেশায় ওষুধ না খেয়ে কদবেল খাওয়া যেতে পারে। এতে প্রাকৃতিক উপায়ে চিকিৎসাও হবে, সেই সঙ্গে বাঁচবে খরচ।

কদবেল
কদবেলের বৈজ্ঞানিক নাম : ফেরোনিয়া লিমোনিয়া (Feronia Limonia).

পরিবার : রুটাকেই (Rutacae).

বেলের ইংরেজি নাম : এলিফ্যান্ট ফুড আপেল (Elephant food apple).

কদবেল দেশীয় পরিচিত একটি ফল। এ ফলটি মৌসুমি ফল হিসেবে স্থান করে নেয়। এই বেলের অন্য নাম কয়েৎ বেল। মুখরোচক, বৈশিষ্ট্যপূর্ণ সুগন্ধ ও অম্লমধুর স্বাদের জন্য পাকা কদবেলের কদর রয়েছে গ্রামবাংলায়; সব বয়সের মানুষের প্রিয় ফল। গাছে পাকা বেল ঘরে রাখলে তার সুগন্ধে মন ভরে যায়। ফল গোলাকার, দেখতে অনেকটা বলের মতো। বর্তমানে বাজার-বন্দরে বড় আকারের কদবেল দেখা মিলে। কদবেলের খোসা বেলের মতো মসৃণ নয়, খসখসে, ধূসর সবুজ ও শক্ত। কদবেল ফাটিয়ে ভিতরের শাঁস খেতে হয়। কাঁচা শাঁসের রঙ হালকা বাদামি ঘিয়া, কইষ্টা মিষ্টি টক। আর পাকলে গাঢ় চকলেট বা পীতাভ বাদামি হয়ে যায়। আবার কালচে বাদামিও হয়। পাকলে শাঁস নরম ও চটকালে মাখনের মতো হয়ে যায়। শাঁসের ভিতরে থাকে ছোট ছোট অনেক হালকা বাদামি রঙের বীজ। বীজ থেকে সহজে চারা হয়। কদবেলের ফুল ফোটে মার্চ-এপ্রিলে। আর ফল পাকে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে। এ জন্য কোনো কোনো এলাকায় ‘চিরপাকি’ নামেও ডাকে। কদবেল গাছের চাষাবাদ অনেকাংশে বেলের মতোই। তবে পুষ্টিগুণে ভরা। আর কদবেলের পুষ্টি উপাদান দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্যতা ও দীর্ঘস্থায়ী আমাশয় দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কদবেল রক্ত পরিষ্কার করতে সহায়তা করে। এর পুষ্টি উপাদান শরীরের রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে। তাই তো একদিকে গাছের সৌন্দর্য আরেক দিকে ঔষধিগুণ।

যেভাবে খাবেন কদবেল

কদবেল ভেঙে বা কদবেলের বোটার পাশে ছিদ্র করে পরিমিত বিট লবন ও শুকনা মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে দিন। এরপর চামচ বা বাঁশের চিকন কাঠি দিয়ে এসব মিশিয়ে নিন। এতে টক-ঝাল একাকার হয়ে জিভে জল আনা ভিন্নরকম ফ্লেভার আসবে। তারপর আরাম করে খাওয়া শুরু করেন।

আরও পড়ুনঃ   মাত্র ৩টি কাজ করলে বাঁচা যাবে ডায়াবেটিস থেকে!

পুষ্টিগুণ

পুষ্টি বিচার করলে কদবেলের জুড়িমেলা ভার। চিকিৎসা শাস্ত্র মতে, ১০০ গ্রাম কদবেলে রয়েছে ২.২ গ্রাম মিনারেল, ফ্যাট ০.১ গ্রাম, শর্করা ৮.৬ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৫.৯ মিলিগ্রাম, আয়রন ০.৬ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি ০.৮০ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি ১৩ মিলিগ্রাম। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কাঁঠাল, পেয়ারা, লিচু, আমলকি, আনারসের চেয়েও বেশি উপকারী কদবেল।

যেসব রোগ নিরাময়ে কাজ করে কদবেল

বিশেষজ্ঞদের ভাষ্য মতে, কদবেল কিডনি সুরক্ষিত রাখে। লিভার ও হার্টের সুরক্ষায় যথেষ্ট উপকারী। কদবেলের ট্যানিন দীর্ঘদিনের ডায়েরিয়া ও পেট ব্যথা ভালো করে।কলেরা ও পাইলসের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে এটি। দীর্ঘদিনের কোষ্ঠকাঠিন্য ও আমাশায়  উপকার পাওয়া যায়। পেপটিক আলসারে এই ফল ভালো কাজ করে। রয়েছে ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য উপকার। এছাড়া রক্ত পরিষ্কার, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, রক্তস্বল্পতা দূর ও শরীরের শক্তি বাড়ায় কদবেল। কদবেল খেলে সর্দি-কাশিতে স্বস্তি পাওয়া যায়। শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, স্নায়ুর শক্তি বাড়ায়।

চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা বলেন, স্তন ও জরায়ু ক্যানসার প্রতিরোধ এবং নারীদের হরমোনের অভাব সংক্রান্ত সমস্যা কমায় কদবেল। কাঁচা কদবেলের রস মুখে মাখলে ব্রণ ও মেছেতার সমস্যা কমে যায়।

নানা গুণে কদবেল

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

one × 2 =